ঢাকামঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

জজ হওয়া হলোনা আনিকা শাহির, পরিবারে চলছে শোকের মাতম

নওগাঁ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ০৪:৫৮ এএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

জুলাইয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনে সরব ছিল। ইচ্ছে ছিল এলাকায় জজ হয়ে আসবে, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার প্রতি উৎসাহ দিবে কিন্তু আসছে লাশ হয়ে। তাই জজ হওয়া আর হলো না, রাস্তায় মাইক হাতে আর কখনও প্রতিবাদী হয়ে দাঁড়াবে না। বলছি নওগাঁর বদলগাছীর মেধাবী শিক্ষার্থী আনিকা মেহেরুন্নেসা শাহির কথা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার নিউমার্কেট এলাকা থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে তার গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম পড়ে যায়।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের রহিমপুরে গিয়ে দেখা যায় শতবর্ষী দাদা আলহাজ্ব সোলাইমান আলী মন্ডল হতভম্ব হয়ে এদিক সেদিক দেখছে। আর ফুফু আক্তার বানুর থামছে না কান্না। 

বিজ্ঞাপন

এদিকে, মেধাবী ছাত্রীর এমনভাবে মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না পরিবারের লোকজনসহ প্রতিবেশীরা। তাই ঘটনার রহস্য উদঘাটন চাইলেন ফুফাত ভাই বকুল মিয়াসহ প্রতিবেশীরা।

জানা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেনের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে আনিকা মেহেরুন্নেসা শাহি ছিল মেজো। বাবার আদরের ২৪ বছরের এই মেয়ে ছোট থেকেই ছিল মেধাবী। তাই দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২১ সেশনে করতেন পড়াশোনা। ছিলেন কোটাবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখ সারির প্রতিবাদী শিক্ষার্থী। সেই জন্য পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলায় গিয়ে শুরু করেছিলেন আন্দোলন। মাইক হাতে অন্যান্য সহপাঠীর সাথে দাঁড়ান রাস্তায়।

রোববার দিবাগত রাত ১১টার দিকে নিউমার্কেট থানা পুলিশ রাজধানীর নিউমার্কেট থানাধীন এলিফ্যান্ট রোডের মকসুদ টাওয়ারের ৮ তলার একটি কক্ষ থেকে আনিকার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বুটেক্সের এক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, নিহত ঢাবির ওই ছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। যদিও এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটা শিওর হওয়া যায়নি। তবে তার পরিবারসহ এলকাবাসীর দাবি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তার মৃত্যুর রহস্য উৎঘাটন হোক।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, নিহত আনিকার চেয়ারম্যান বাবা ফিরোজ হোসেন ছিলেন আওয়ামী লীগের সাথে গভীরভাবে জড়িত। আর এই ৫ আগস্ট তার বাড়িতে যেন কেউ হামলা না করে এমন স্কিনশর্ট এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। আনিকা আন্দোলনে প্রথম সারির হলেও তার বাবার কারণে তাকে বিভিন্ন কটু কথা শুনতে হতো। এমনকি মারাত্মক সাইবার বুলিংয়ের শিকার হতে হয়েছে তাকে। যদিও আনিকা জয়পুরহাটে আন্দোলনের সময় অনেক অ্যাক্টিভ ছিলেন। তারপরও তাদের একটি ফার্মও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, বাবাসহ ফ্যামিলির অনেককে হয়রানি করা হচ্ছে। তার বাবার শাস্তি পাওয়া লাগছে এটা তার জন্য ছিল কষ্টদায়ক। তবে যেকারণে হোক, আনিকার মৃত্যুর রহস্যের জট খুলবে এমনটাই দাবি সকলের।

বকুল নামের একজন মুঠোফোনে বলেন, আমি গিয়ে দেখি আনিকা মেহেরুন শাহির মরদেহ ফ্যানের সাথে ঝুলছিল, কিন্তু অর্ধেক মেঝেতে লেগে ছিল। আমার জানামতে একটা ছেলের সাথে তার সম্পর্ক ছিল। আমরা ঢাকায় আছি, তার বাবা পাগল হয়ে গেছে। তবে আমরা যখন যাই, তখন দেখি লক ভাঙ্গা ছিল। মনে হয় তাকে কেউ নামানোর চেষ্টা করেছিল।

আরটিভি/কেএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |