মাগুরায় ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশু আছিয়া মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে দেশবাসীকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। আছিয়ার মৃত্যুতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মশাল মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে এই মশাল মিছিল বের করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা, আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকের ঠাই নাই, আছিয়ার রক্ত বৃথা যেতে দিব না। ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই। তুমি কে আমি কে আছিয়া আছিয়াসহ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে ধর্ষকের শাস্তি চান।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে আছিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়।
এদিকে আছিয়ার মৃত্যুতে সারাদেশের ন্যায় ভূঞাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, ভূঞাপুর উদীচীর সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মেহেদী হাসান এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা শোক প্রকাশ করেছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আছিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশে মশাল মিছিল বের করে। মিছিলটি ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এলাকা থেকে শুরু করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার সেই স্কুল মাঠে এসে শেষ হয়। এ সময় তারা এক মিনিট নীরবতা পালন করে।
নীরবতা পালন শেষে আছিয়ার ধর্ষণকারী, যারা আছিয়াকে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দিয়েছে, সেই হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ভূঞাপুর শাখা সংসদের নৃত্য শিল্পী রিফাত। এ সময় তিনি বার বার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, আমাদের মাফ করেদিস আছিয়া, আমরা জাতী হিসেবে নির্লজ্জ, এই কলঙ্ক ঘুচবে না। আমরা বড়ই অভাগা জাতী, আমাদের বোনের নিরাপত্তা আমরা দিতে পারিনা। আমরা বাংলাদেশে আর একটাও ধর্ষণের ঘটনা চাই না। আমরা চাই ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অবিলম্বে কার্যকর করা হোক। যেন আর কোনদিন কোন ধর্ষণের ঘটনা না ঘটে।
এ সময় পূজা, লাবিবা, জুলি, গৌতম, তন্ময়, ফাহাদসহ স্কুল কলেজের একাধিক মেয়ে এবং ছেলে শিক্ষার্থী প্রতিবাদ স্বরূপ হাত এবং মুখ বেধে মশাল মিছিলে অংশ নেয়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) মাগুরা শহরে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় ওই শিশুটি। পরের দিন তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিআইসিইউ) থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন রোববার শিশুটিকে সিএমএইচে পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে নেওয়া হয়।
আরটিভি/এএএ