ঢাকামঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১

হাওরে নদী শুকিয়ে তীব্র সেচ সংকট

মো. ফরিদ রায়হান, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫ , ০৫:৪৩ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

কিশোরগঞ্জের বৈঠাখালী নদী শুকিয়ে অষ্টগ্রাম উপজেলার তিন হাজার একর বোরো জমিতে সেচ বন্ধ। বিপাকে কয়েক হাজার কৃষক। পানির অভাবে একমাত্র ফসল বোরোধান ক্ষতিগ্রস্তের আশংকা। নদীতে নালা খননের মাধ্যমে দ্রুত সেচ প্রকল্প চালুর দাবি কৃষকদের।

বিজ্ঞাপন

অষ্টগ্রাম উপজেলার বৈঠাখালী নদীর দুতীরে তিনটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার একর জমিতে বোরো ধান আবাদে পানি সেচের প্রধান উৎস এই নদী। গত কয়েক বছর ধরে জানুয়ারি মাসের দিকে নদীর দুই প্রাপ্ত শুকিয়ে বন্ধ হয়ে যায় পানি চলাচল। নদীর তলদেশে আটকে পড়া পানিতে চলে বোরোধানের সেচ।

চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাত না থাকায় বর্ষার আটকানো পানি শেষ হয়েগেছে, ফলে প্রায় ৩ হাজার একর বোরো জমিতে ১০ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ৭-৮টি সেচ-প্রকল্প। সেচের অভাবে সবুজ ধানের জমি ক্রমেই ফেকাসে রূপ ধারণ করায় উদ্বিগ্ন কৃষকরা।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কলমা, পূর্ব অষ্টগ্রাম ও সদর ইউনিয়নের গায়েলা, বর্দলি, ছাতিয়া, কেউডা, জলডুব, কবিরখান্দানের চর, কান্তা বাঁধাঘাট, মাছিল্লাসহ বিভিন্ন হাওরের ৭-৮টি সেচ প্রকল্পগুলো ১০দিন ধরে নদী শুকানোর কারণে বন্ধ হয়েগেছে। এতে, অনেক জমি পানির অভাবে ফেটে চৌচির। সেচপাম্প গুলো অলস পড়ে রয়েছে।

হাওরাঞ্চলে এখন বোরোধানের চারায় 'শীষ' বাহির (গজানো) হওয়ার কথা, এই সময়ে জমিতে পানি না থাকায় বাহির হবে দুর্বল 'শীষ', এতে ধানে বাড়বে চিটার পরিমাণ। অর্জিত হবে না কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা। ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষক পরিবার।

কৃষকরা জানান, চলতি কৃষি মৌসুমে বন্ধ হওয়া সেচ প্রকল্পগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে চালু করতে, বৈঠাখালী নদীতে দুই কিলোমিটার 'নালা খনন' করে সেচ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। নতুবা চরম ক্ষতি হবে বোরো ফসলের।

বিজ্ঞাপন

9779e4d8-bb65-422b-8b2a-19a35ab938a9

অষ্টগ্রাম বড় হাওরে কৃষক হুমায়ুন কবির দানা (৫৪) বলেন, আমরা কৃষক মানুষ, আমাদের জীবন-জীবিকা চলে এই ধান উৎপাদনের উপর। হাওরে তীব্র সেচ সংকট দ্রুত সমাধানসহ নৌ চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বৈঠাখালী নদী খননের দাবি করছি।

পূর্ব অষ্টগ্রামের কৃষক বাছির মিয়া (৫৫) বলেন, পানির অভাবে জমিতে এবার ধান কম হবে, আমরা চাই এই গাঙ্গে আপাতত একটা নালা খনন করে সেচের ব্যবস্থা করে কৃষকের ফসল রক্ষা করুক। নাইলে আমাদের সাথে দেশেও ক্ষতি হবে। 
 
অষ্টগ্রাম সদর ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু বলেন, বৈঠাখালী নদী শুকিয়ে ১০-১২ দিন ধরে জমিতে সেচ বন্ধ রয়েছে। দ্রুত এখানে নালা খনন করে সেচ প্রকল্প চালু এবং স্থায়ী সমাধানে নদী খননের দাবি করছি। 

অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএডিসি (সেচ) উপসহকারী প্রকৌশলী আছাদুল হক বলেন, সেচ সংকটের কথা শুনে তাৎক্ষণিক সরেজমিন পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এই মুহূর্তে জমিতে সেচ না-দিলে কৃষক কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ঊর্ধ্বতন নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

আরটিভি/এএএ

 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |