বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ায় ভোলায় ভোর থেকে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এর প্রভাবে জোয়ারের পানি বেড়ে জেলার কয়েকটি উপজেলার বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে লোকালয়।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিমউদ্দিন বাজারসংলগ্ন বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। একই সঙ্গে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার কলাতলী এলাকায় বেড়িবাঁধে ব্যাপক ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তজুমদ্দিন উপজেলার শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে বাড়িঘর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ভোলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতে জরুরি ভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার বেড়িবাঁধগুলো তদারকিতে রাখা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নদী উত্তাল থাকায় ভোলার সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সব ধরনের লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
ভোলার ইলিশা নৌবন্দরের বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা রিয়াদ হোসেন বলেন, প্রবল ঝড়ে ইলিশা টার্মিনালের চালা উড়ে গেছে এবং পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ৮৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১৪টি মাটির কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সিপিপি ও রেড ক্রিসেন্টের ১৩ হাজার ৮০০ স্বেচ্ছাসেবী এবং ৯৭টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দুর্যোগপূর্ব, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ-পরবর্তী তিন ধাপে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শুকনা খাবার, শিশু খাদ্য ও চাল মজুত রাখা হয়েছে। সব সরকারি কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে আনার কাজ চলছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২৯১ মেট্রিক টন চাল, দেড় হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও পাঁচ লাখ টাকার শিশু খাদ্য মজুত রাখা হয়েছে। পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
ভোলা আবহাওয়া কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আরটিভি/এএএ