ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকার আশপাশের সীমান্তবর্তী কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন হাওড়া নদী পাড়ের বাসিন্দারা।
রোববার (১ জুন) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হাওড়া নদীর বিভিন্ন অংশে পানির প্রবল চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে বালুভর্তি প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে পানি ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।
কলন্দি খাল, কালিকাপুর, আব্দুল্লাপুর, জাজিগাং, বাউতলা হয়ে মোগড়া ইউনিয়ন দিয়ে প্রবাহিত হাওড়া নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এতে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিকাপুর, বীরচন্দ্রপুর, আব্দুল্লাহপুর ও বঙ্গেরচর গ্রামের বিভিন্ন সড়ক ও জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, শনিবার রাত থেকেই নদী ও খাল দিয়ে পানি ঢুকছে, ফলে এসব এলাকার মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকার মাছ রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া বলেন, গতরাত থেকে পানি ঢুকছে। বন্দরের আশপাশে অনেক জায়গা তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত রপ্তানিতে প্রভাব না পড়লেও পানি যেভাবে বাড়ছে, এতে করে আখাউড়া-আগরতলা সড়ক ডুবে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছি।
মোগড়া ইউনিয়ন প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার প্রকৌশলী মো. শামিম আলম বলেন, গত রাত থেকেই পানি বাড়ছে। বেশ কয়েকটি এলাকায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও প্রশাসনের সমন্বয়ে কাজ চলছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি এম রাশেদুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলো চিহ্নিত করে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আশ্রয়কেন্দ্রও খোলা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান বলেন, হাওড়া নদীর পানি বর্তমানে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখনও বিপদসীমা অতিক্রম করেনি, বিপদসীমার চেয়ে ২ মিটার নিচে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে একইভাবে পাহাড়ি ঢলে হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে আখাউড়ার প্রায় ৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। তখন প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। ক্ষতি হয়েছিল ১৯৫ হেক্টর ফসলি জমি ও আনুমানিক ১২ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ।
আরটিভি/এমকে-টি