টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার চরনিকলা গ্রামের অভিরাম দাস ও শ্যামলী দাস দম্পতির পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল্লাহ খান।
রোববার (১ জুন) দুপুরে ওই দম্পতির বাড়িতে যান ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু আবদুল্লাহ খান। তিনি অভিরাম-শ্যামলী দম্পতির খোঁজখবর নেন। তাদের জন্য জরুরি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে খাদ্যসামগ্রী ও একটি নতুন ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
জানা যায়, অসুস্থ স্ত্রী শ্যামলী দাসকে নিয়ে বছরের পর বছর পলিথিন মোড়ানো ছাউনি ঘরে বসবাস করে আসছিলেন অভিরাম। একটুখানি বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় কাঁদাজলে। মানবেতর জীবন পার করছেন তারা। সরকারি কোনো সহায়তা পাননি তারা। ছেলে-মেয়ে দুজনই থাকেন কলকাতায়।
এ দিকে উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের আগতেরিল্যা গ্রামের শিহাব উদ্দিনের মানবেতর জীবনযাপনের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই চোখ পড়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের। এ সময় তিনি তাৎক্ষণিকভাবে শিহাব উদ্দিনের বাড়িতে ছুটে যান। সরেজমিনে তার বেহাল চিত্র দেখেন এবং তাকে তাৎক্ষণিক খাবার সহায়তা প্রদান করেন। শিহাব উদ্দিনের সন্তানের পড়ালেখার দায়িত্বও নেন তিনি। তাকে একটি স্থায়ীভাবে আয় রোজগার করার জন্য সহযোগিতা ও একটি ঘর তৈরির উপকরণ সহায়তার আশ্বাস দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
অভিরাম দাস এবং শিহাব উদ্দিন কৃতজ্ঞতায় বলেন, অনেকেই আসেন ছবি তুলে যান, কেউ ফিরে তাকান না। ইউএনও স্যারের মতো মানুষই আমাদের শেষ ভরসা।
এ সময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন, ভূঞাপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রবি, তৌফিকুর রহমান মানিকসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অভিরাম-শ্যামলী দম্পতি এবং শিহাব উদ্দিনের দুর্দশার চিত্র আমরা সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি। ইউএনও স্যারের নির্দেশে আমরা দ্রুত তাদের থাকার জন্য টিন বরাদ্দের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। পাশাপাশি তাদের জন্য অন্যান্য সহায়তার বিষয়েও কাজ চলছে। আমাদের লক্ষ্য, এই দুটি পরিবার যেন দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু আবদুল্লাহ খান বলেন, প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের সন্তান। আর একজন সন্তান যদি জরাজীর্ণ ঘরে কষ্টে দিন কাটায়, তবে সেটি আমাদের সবার জন্য লজ্জার। অভিরাম-শ্যামলী দম্পতি এবং শিহাব উদ্দিনের পরিস্থিতি দেখে আমি নিজের দায়িত্ববোধ থেকে তাদের কাছে এসেছি। শুধু একবার খোঁজ নিয়ে চলে যাওয়া নয়, আমি চাচ্ছি তারা যেন টেকসই সহায়তা পায়। এই মানুষগুলো রাষ্ট্রেরই নাগরিক। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। আমরা চেষ্টা করছি অল্প সময়ের মধ্যে তাদের সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে। এই ধরনের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের প্রশাসনের কর্তব্য। কিন্তু আমি চাই, সমাজের সামর্থ্যবান মানুষরাও যেন এই দায়িত্ব ভাগ করে নেয়।
আরটিভি/এমকে/এআর