ফেনীতে টানা ৪ দিনের ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ফুঁসে উঠেছে মুহুরী-কহুয়া-সিলোনিয়া নদী। তবে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে।
সোমবার (২ জুন) সকালে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৩ থেকে ৪ ফুট নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে ফেনী আবহাওয়া অফিস।
জানা যায়, মুহুরী নদীর বিপৎসীমা ১৩ মিটার। যেখানে নদীর পানি ১০ দশমিক ১০ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। টানা বর্ষণে বেড়িবাঁধের মাটি সরে গিয়ে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর কিছু অংশে বেড়িবাঁধে ফাটল ধরেছে। ধসে পড়ছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) গ্রামীণ সড়ক। বন্যার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীপাড়ের কয়েক হাজার বাসিন্দা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, টানা ভারী বর্ষণে ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বরইয়ায় মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ও আনন্দপুর ইউনিয়নের খিলপাড়ায় সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের একাংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে বাঁধসংলগ্ন দরবারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বরইয়া, জগৎপুর এবং আনন্দপুর ইউনিয়নের খিলপাড়া, বন্দুয়া দৌলতপুর, হাসানপুরসহ দক্ষিণ আনন্দপুর এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা।
এ দিকে মুহুরী, সিলোনিয়া ও কহুয়া নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় রোববার রাতে ফুলগাজী বাজারে পানি উঠতে শুরু করেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। বৃষ্টি এভাবে চলতে থাকলে পানি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা।
বেড়িবাঁধে ফাটলের তথ্য পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পাউবো ফুলগাজী শাখার উপসহকারী প্রকৌশলী মো. ফাহাদ্দিস হোসাইন বলেন, আনন্দপুর ইউনিয়নের খিলপাড়া এলাকায় সিলোনিয়া বেড়িবাঁধের অংশে যে ফাটল দেখা দিয়েছে। তা মেরামত করতে হবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি)। কারণ নদীর পাড়ের রক্ষাদেয়াল এবং সড়কটি এলজিইডির করা। এ ছাড়া দরবারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বরইয়াসংলগ্ন মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের যে স্থানে ফাটল ধরেছে, সেটি নদীর পানি না কমলে মেরামত করা সম্ভব না।
পাউবো ফেনী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আকতার হোসেন মজুমদার বলেন, নদীর বাঁধের যে যে স্থানে ফাটল ধরেছে, সেগুলোর বিষয় খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধে ফাটল ধরা অংশে প্রয়োজনীয় মেরামত করা হবে।
এলজিইডি ফুলগাজীর উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ আসিফ মুহাম্মদ বলেন, বৃষ্টি বন্ধ হলে আমরা সড়কটির সংস্কারকাজ করে দেবো। তবে বাঁধটি যেহেতু পাউবোর সেহেতু পাউবোকেই বাঁধটি মেরামত করতে হবে। তারা বাঁধ মেরামত করে দিলে আমরা সড়কটি সংস্কার করে দেবো।
এ বিষয়ে ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (উচ্চমান পর্যবেক্ষক) মজিবুর রহমান বলেন, মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৩ থেকে ৪ ফুট নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৪১ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
আরটিভি/এমকে