ঢাকাSunday, 13 July 2025, 29 Ashaŗh 1432

১৫ বছর ধরে ডিঙ্গি নৌকায় বৃদ্ধ দম্পতির বসবাস

পাইকগাছা প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ 

মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫ , ০৮:০১ পিএম


কপোতাক্ষ নদের ভাঙ্গনে সবই হারিয়ে নদের বুকে ডিঙ্গি নৌকায় ভাসমান অবস্থায় ১৫ বছর ধরে বসবাস বৃদ্ধ সুখেন-নমিতা দম্পতির। রোদ, বৃষ্টি, ঝড় ঝঞ্ঝাসহ সব কিছু মোকাবিলা করেই জীবন যুদ্ধে এগিয়ে চলেছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার হিতামপুর মালোপাড়ার সুখেন বিশ্বাস ও স্ত্রী নমিতার একমাত্র সম্বল এখন একটি ডিঙ্গি নৌকা। রাক্ষসী কপোতাক্ষ নদের মাঝে ভিটামাটি সহায়-সম্বল হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব।

একমাত্র জীবন সঙ্গীকে সাথে নিয়ে প্রায় ১৫ বছর রাক্ষসী কপোতাক্ষ নদের উপর ডিঙ্গি নৌকায় ভাসমান জীবনযাপন করছেন সুখেন বিশ্বাস (৮০) ও স্ত্রী নমিতা বিশ্বাস (৭০)। নদেই জীবন নদই সম্বল। বর্তমানে তাদের ডিঙ্গি নৌকাই একমাত্র অবলম্বন। জীবন যুদ্ধে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হচ্ছে এ দম্পতির। 

বিজ্ঞাপন

উপজেলার বোয়ালিয়াস্থ কপোতাক্ষ নদের তীরে জন্ম বৃদ্ধের আর সেখানেই কেটেছে শৈশব, কিশোরসহ সারাজীবন। তিন মেয়ে এক ছেলে নিয়ে বসবাস করলেও তাদের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর তার জীবন হয়েছে যাযাবরের মত। বলতে গেলে যেখানে রাত সেখানেই কাত। কালের বিবর্তনে অব্যাহত কপোতাক্ষের ভাঙ্গনে সহায় সম্বল হারিয়ে আজ তার এ অবস্থা।

আরও পড়ুন

আয়ের উৎস্য বলতে কপোতাক্ষ, শিবসা ও শালিখা নদীর চর বা কুলে মাছ ধরা। সারাদিনের ধরা মাছ বিক্রি করে কোনোভাবে জীবনযাপন। সব দিন সমান যায় না। কোনো কোনো দিন তাদের আধাপেট, কোনো দিন মোটেও কিছু জোটে না। বেশি ভাগ সময় শুকনা খাবার, চিড়া, মুড়ি, বিস্কুটই তাদের ভরসা। এই বৃষ্টি বাদল, বৈরী আবহাওয়া, ঝড়ঝঞ্ঝাট, তপ্তরোদ তাকে দমাতে পারে না। তাকে সর্বক্ষণ সাহস অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন সহধর্মিণী নমিতা। এমনটি জানালেন বৃদ্ধ সুকেন বিশ্বাস। তিনি আরও বলেন, আমার ঘরবাড়ি, বাগ বাগিচা, গরু, জায়গা জমি সবই ছিল। এখন সব অতীত। 

বিজ্ঞাপন

বৃদ্ধা নমিতা বিশ্বাস আবেগ জড়িত কন্ঠে জানান, রাক্ষসী নদী সব কেড়ে নিয়েছে। এটা আমাদের নিয়তি। আজ জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে গেছি। সৃষ্টিকর্তার কাছে একমাত্র প্রার্থনা সাখা সিঁদুর নিয়ে যেন মরতে পারি।

জানা গেছে, বিগত সরকারের সময়ে একটি ঘর পাওয়ার জন্য দরখাস্ত দিয়েও তা জোটেনি এ দম্পতির। যত বয়স বাড়ছে ততই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথায় আতংকিত হয়ে পড়েন তারা। শেষ বয়সে একটু চাওয়া একটি আশ্রায়স্থল।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মীর আনোয়ার এলাহী বলেন, তাদের সহায় সম্বল বলতে কিছুই নেই। তাকে একটা বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, তারা আমার কাছে আসলে সরকারিভাবে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় তা করার চেষ্টা করব।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |