গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে গুজবে কান দিয়ে ‘কথা বলা গাছ’ দেখতে মানুষের ঢল নেমেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গাছে কান পাতলে নারী কণ্ঠে তারা কথা শুনতে পাচ্ছেন। বিষয়টিকে গুজব ও ভুয়া দাবি করে আলোচিত সেই গাছটিকে কেটে ফেলেছে স্থানীয় প্রশাসন।
শনিবার (২২ জুন) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুকসুদপুর থানার ওসি জিল্লুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘গাছে কথা শোনা যায় বিষয়টি গুজব। আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর আমরা ওই এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখি। বিষয়টি আমাদের কাছে ভুয়া মনে হয়েছে। এ ছাড়া আমরা কান পেতে দেখেছি। কোনো কথা শোনা যায় না। পরে আমরা গাছটি কেটে ফেলি।’
এ বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান টুটুল বলেন, ‘প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। এ সময় গাছ কাঁটা দেখতে ভিড় করেন এলাকাবাসী।’
তবে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার দাবি, গত এক সপ্তাহ আগে উপজেলার রাঘদি ইউনিয়নের গজিনা গ্রামে নিরব নামে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু গাছটিতে ধারালো দা দিয়ে কোপ দিলে গাছ বলে ওঠে ‘আমাকে মারিস না’। পরে সে এ ঘটনা পাশের একজন মহিলাকে বললে, বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। দলে দলে এসে গাছে কান পেতে শোনার চেষ্টা করে সবাই। তাদেরও একই দাবি, গাছে কান পাতলে নারী কণ্ঠে কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কেউ সালামের উত্তর শুনছেন, আবার কেউ কান্না বা আর্তনাদের আওয়াজ শুনছেন। আবার অনেকেই বলছেন ভুয়া। কান পাতলে গাছ ও পাতা নড়ার শব্দ শোনা যায়।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক নাহমিনা বেগম বলেন, ‘গাছে কান পাতলে কথা শোনা যায় এটার বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। তবে গাছের একটি শক্ত নেটওয়ার্ক রুট রয়েছে। যা অনেকদূর নিয়ে বিস্তৃত। এর মাধ্যমে এক গাছ আরেক গাছকে উপকার করে থাকে। তবে গাছে কান পাতলে কথা শোনার বিষয়টি পুরোটাই কুসংস্কার।’