কাঁচা রাস্তাটি দিয়ে প্রায় ১৫ গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুল শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে গিয়ে পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। রাস্তাটির দেড় কিলোমিটার অংশজুড়ে এমন করুণ অবস্থা হলেও পাকাকরণের কোনো উদ্যোগ নেই জনপ্রতিনিধিদের। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য প্রতিবাদস্বরূপ এক ভিন্নধর্মী পন্থা অবলম্বন করেছেন গ্রামবাসীরা। চলাচলের ওই রাস্তাটিতে ধানের চারা রোপণ করেছেন তারা।
শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের মোহর আলী হাজী কান্দি গ্রামের বাসিন্দারা এমন প্রতিবাদ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কদম আলী মোড়ল কান্দি থেকে মোহর আলী হাজী কান্দি গ্রাম পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা দিয়ে আশপাশের ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের বাসিন্দারা চলাচল করে। প্রত্যেক বছর বর্ষা মৌসুম এলেই বৃষ্টিতে কাদা জমে এসব গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। গ্রামবাসী বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও রাস্তাটি পাকাকরণের উদ্যোগ নেয়নি জনপ্রতিনিধিরা। এতে প্রায় ১৫টি গ্রামের ৩০ হাজার বাসিন্দা ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। এমন ভোগান্তির প্রতিবাদস্বরূপ রাস্তাটিতে ধানের চারা রোপণ করেছেন গ্রামবাসী ও পথচারীরা।
শাহজাহান মাদবর নামে একজন বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে বারবার জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা বিষয়টির গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তাটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যায়। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গ্রামের শিক্ষার্থী ও রোগীরা পড়েন চরম বিপাকে। অন্যদিকে এমন রাস্তা দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে মাহিন্দ্রা-ট্রাকযোগে ভারী মালামাল নেওয়া-আনা করা হয়েছে। এখন আর রাস্তাটি ব্যবহারের উপযোগী নয়, তাই আমরা গ্রামবাসী মিলে রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করেছি।
মোহর আলী হাজী কান্দি গ্রামের বাসিন্দা ফুল মালা বলেন, এক মাসের বাচ্চা নিয়ে টিকা দেওয়ার জন্য বের হয়েছিলাম। বাচ্চাকে নিয়ে বাড়ির সামনের রাস্তায় আসার পরেই কাদায় পড়ে গিয়ে দুইজনই ব্যথা পেয়েছি। রাস্তা পাকাকরণের আগে এই রাস্তা দিয়ে যেন ট্রাক না চলে, সেই দাবি জানাই। অন্যথায় আমরা গাড়ির সামনে দাঁড়াব।
পূর্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া, শিউলি ও বিপাশার সঙ্গে কথা হয় তারা বলে, জুতা খুলে হাতে নিয়ে এ রাস্তায় চলাচল করতে হয়। এতে কাদা লেগে জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। বই-খাতা কাদায় পড়ে গেলে আর স্কুলে যেতে পারি না। রাস্তাটি পাকা হলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হতো।
পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাফ খান বলেন, রাস্তাটি এমন বেহাল হয়েছে সে বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু বলেনি। তবে রাস্তাটির সামনেই একটি কালভার্টের কাজ চলছে। সেখানে ট্রাক্টর দিয়ে মালামাল নেওয়ায় হয়ত রাস্তাটির অবস্থা একটু বেশি বেহাল হয়েছে। কিন্তু রাস্তায় ধান লাগানোর বিষয়ে আমি জানি না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় কেউ বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আমাকে জানায়নি। বিষয়টির খোঁজ নিয়ে দেখব।