• ঢাকা সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo
মসজিদে নামাজ শেষে বের হওয়ার সময় মুসল্লির মৃত্যু
শরীয়তপুরে বিএনপির ২ গ্রুপে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ-ভাঙচুর
শরীয়তপুরে বিএনপি ও যুবদলের ২ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পৌরসভা যুবদলের অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠেছে। সোমবার রাতে পৌরসভার জেলখানা গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শরীয়তপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন। স্থানীয়রা জানান, শরীয়তপুর পৌরসভা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক টিটু চোকদারের সঙ্গে পৌর বিএনপি নেতা সুমন খানের কোন্দল রয়েছে। সোমবার রাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হলে উভয়পক্ষের লোক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় সুমন খানের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে টিটু চোকদারের যুবদলের কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে।  শরীয়তপুর পৌরসভা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক টিটু চোকদার অভিযোগ করে বলেন, রোববার যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বড় ধরনের মিছিল বের করি আমি। যা অনেকের সহ্য হয়নি। তাই সোমবার আমার অফিসে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা চালানো হয় ও ভাঙচুর করা হয়। এ দিকে পাল্টা অভিযোগ করে পৌরসভা বিএনপি নেতা সুমন খান বলেন, ‘বিগত দিনে সে (টিটু চোকদার) স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছে। আমার সামনে বসে সে আমাদের সাবেক এমপিকে নিয়ে কটূক্তি করেছে এবং আমাকে মারধর করেছে। সে নিজে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ক্লাব ভাঙচুর করে আমার ওপর দোষ চাপাচ্ছে।’ এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘দলীয় কোন্দল নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। যুবদলের একটি অফিসে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ আরটিভি/এমকে-টি
সাঁকো পারাপার নিয়ে দ্বন্দ্ব, কৃষককে হত্যায় গ্রেপ্তার ২
সাঁকো তৈরি নিয়ে ঝগড়া, কৃষককে কুপিয়ে হত্যা
শরীয়তপুরে কৃষকদল নেতার গাড়িবহরে হামলা, আহত ৬
শরীয়তপুরে যুবকের আত্মহত্যা
মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের লাঠির আঘাতে বাবার মৃত্যু
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় বিশ হাজার টাকা দিতে অস্বীকার করায় মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের লাঠির আঘাতে হানিফ মোল্লা (৭২) নামে এক বাবার মৃত্যু হয়েছে।  শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার কাজির হাটের ডুবিসায়বর বন্দরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গোলাপি বেগম (৬০) ও পারুল আক্তার (২৫) নামের দুজন আহত হন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাজিরা উপজেলার কাজির হাটেরডুবিসায়বর এলাকার বাসিন্দা মানসিক ভারসাম্যহীন ফারুক বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার বাবা হানিফা মোল্লা ও মা গোলাপি বেগমের কাছে থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন টাকা দিতে অস্বীকার করায় বাবা হানিফা, মা গোলাপি ও বোন পারুলকে গাছের মোটা ডাল দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। পরে আহত অবস্থায় হানিফা, গোলাপি ও পারুল আক্তারকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয়রা। কর্তব্যরত চিকিৎসক হানিফ ও গোলাপির অবস্থা বেগতিক দেখে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হানিফ মোল্লার মৃত্যু হয়। প্রতিবেশী আসমা আক্তার বলেন, ফারুক তার বাবা-মায়ের কাছে টাকা চাইলে না দেওয়ায় গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। বোন পারুল তাদের উদ্ধার করতে গেলে তাকেও পিটিয়ে আহত করেন। আজ তার বাবা হানিফ মোল্লার মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-আমিন বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ২০ হাজার টাকার জন্য ফারুক তার বাবা-মা ও বোনকে পিটিয়ে আহত করেছেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হানিফের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শরীয়তপুরের সখিপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গৃহবধূর মৃত্যু
শরীয়তপুরের সখিপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আসমা আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে ভেদরগঞ্জ উপজেলার উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের নূর মোহাম্মদ মাস্টার কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।   নিহত গৃহবধূ ওই গ্রামের মো. আব্বাস বেপারীর স্ত্রী। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো নিজ রান্নাঘরে দুপুরে রান্না করছিলেন আসমা আক্তার। এ সময় পাশের ঘরে যাওয়ার সময় উঠানে একটি জুলে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।  সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদুর রহমান বিদ্যুতের তার জড়িয়ে এক গৃহবধূর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শরীয়তপুরে ডোবার পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
শরীয়তপুরে ডোবার পানিতে ডুবে ২ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম তাহমিদ।  সোমবার (১২ আগস্ট) সকালে সদর উপজেলার ভর্তাইসার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শরীয়তপুর পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। নিহত তাহমিদ ওই এলাকার বিল্লাল মাদবরের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকালে শিশুটির মা প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় শিশুটি মায়ের অগোচরে বাড়ির পাশের একটি ডোবায় পড়ে যায়। পরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ডোবা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মিতু আক্তার সুস্মিতা শারমিন বলেন, ‘শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শিশুটির মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হই।’
শরীয়তপুরে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
শরীয়তপুর সদর উপজেলায় প্রশিক্ষণ নিতে আসা এক নারীকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় আব্দুল মান্নান খাঁ (৪২) নামে এক যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেলে সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের চর সোনামুখী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পালং থানা পুলিশ।  গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল মান্নান খাঁ রুদ্রকর ইউনিয়নের মৃত হানিফ খাঁর ছেলে। তিনি রুদ্রকর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারীর বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। তার স্বামী একজন ওমান প্রবাসী। স্বামীর কাছে বিদেশ যাওয়ার জন্য ওই নারী কিছুদিন পূর্বে শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের আমিন বাজার এলাকায় সরকারি ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হন। সেখানে বসে পরিচয় হয় ইদ্রিস নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। এরপর গত ২৫ জুন রাতে ৯টার দিকে তিনি মাদারীপুর থেকে শরীয়তপুর ট্রেনিং সেন্টারের উদ্দেশ্যে আসছিলেন। পথিমধ্যে ওই নারীকে বহনকারী অটোরিকশাটি থামিয়ে তার মুখ বেঁধে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান রুদ্রকর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খাঁ, ইদ্রিস আলী, কালাচান খাঁসহ অজ্ঞাতনামা আর ৩ থেকে ৪ জন ব্যক্তি। এ সময় ওই নারী তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা চালালে তারা তার অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ওই নারীর ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে পালিয়ে যান তারা। পরে ওই নারী স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেন। এ ঘটনায় গত ৩০ জুন যুবলীগ নেতা আব্দুল মান্নান খাঁ, ইদ্রিস আলী, কালাচান খাঁসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩ থেকে ৪ জন ব্যক্তিকে আসামি করে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী নারী। ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, ‘ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার সুবাদে ইদ্রিস নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। আমি যখন ট্রেনিং সেন্টারে যাচ্ছিলাম ইদ্রিস আলীসহ বেশ কয়েকজন আমার মুখ চেপে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় এবং স্পর্শকাতর ভিডিও ধারণ করে রাখে। আমাকে তারা মারধরও করেছে। আমি লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারিনি। পরে তারা আমার স্পর্শকাতর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে মোবাইল ফোনে টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ঘটনার ৫ দিন পর আদালতে মামলা করি। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’ এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুহুন মাদবর বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। এ ব্যাপারে তদন্ত করা হবে। ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খাঁ যদি সংশ্লিষ্ট কাজের সঙ্গে জড়িত থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ বিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ওই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করি। তাকে বুধবার আদালতে পাঠানো হবে।’ 
পুকুরে পড়ে আছে বিদ্যুতের খুঁটি, এক মাসেও নজরে আসেনি কর্তৃপক্ষের
শরীয়তপুরের সদর উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এক মাসের অধিক সময় ধরে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি পুকুরের মধ্যে হেলে পড়ে আছে। হেলেপড়া বৈদ্যুতিক তারগুলো নিচু হয়ে পড়ে থাকায়, বাধ্য হয়ে নিচ দিয়েই চলাচল করছেন স্থানীয়রা। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা। বুধবার (৩ জুলাই) সকাল ৮টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রুদ্রকর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি পুকুরে হেলে পড়ে আছে। জানা যায়, অন্তত ৮ বছর আগে ৪টি নতুন খুঁটির মাধ্যমে সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলী এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। যার মধ্যে ০.২ কেভি ও ২২০ ভোল্টের সঞ্চালন লাইন চালু রয়েছে। লাইনটিতে ৭টি মিটারের মাধ্যমে সুবিধা নিচ্ছে বেশ কয়েকটি পরিবার। খুঁটি এবং লাইনগুলো দেখভাল করছেন এম আর ট্রেড মার্ক নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ২৭ মে (সোমবার) ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সেই সঞ্চালন লাইনের একটি খুঁটির গোড়ার মাটি সরে গিয়ে মালেক ঢালীর পুকুরের মধ্যে পড়ে যায়। এ ছাড়াও তারগুলো একটি চলাচলের রাস্তার ওপর পড়ে থাকায় অন্তত ২০টি পরিবারের লোকজন ঝুঁকি নিয়ে তারের নিচ দিয়ে চলাচল করছেন।  ঝুঁকিপূর্ণ খুঁটিটি ঠিক করতে ২৮ মে (মঙ্গলবার) ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে আবেদন করেন স্থানীয় বাসিন্দা মালেক ঢালী। এরপর দীর্ঘ ১ মাস ৪ দিন পার হলেও ক্ষতিগ্রস্ত খুঁটিটি মেরামত করা হয়নি। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, খুঁটির দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারকে খুঁটিটি মেরামত করতে একাধিকবার বলা হয়েছে। এ বিষয়ে গৃহবধূ নিপা বলেন, আমাদের এই তারগুলো অনেকদিন আগে তুফানে পড়ে গেছে। আমরা এই রাস্তা দিয়েই বাড়িতে চলাচল করি। আমরা যখন বাড়ির কাজে ব্যস্ত থাকি, আমাদের শিশুরা বাচ্চারা না বুঝে এই তার এসে ধরে। প্লাস্টিকের কাভার বলে রিস্ক কম, কিন্তু দুর্ঘটনা হতে তো আর সময় লাগে না। আমরা চাই দ্রুত এই তার সরানো হোক। কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী আফছানা বলেন, ‘আমাদের ২০টি পরিবারের যাওয়ার রাস্তা এই একটাই। দীর্ঘদিন ধরে খুঁটিটি পড়ে থাকলেও বিদ্যুৎ বিভাগ কোন মাথা ঘামাচ্ছে না। তাদের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তাও আমলে নিচ্ছে না। বড় ধরনের দুর্ঘটনা হলে এর দায় কে নেবে? আমরা চাই দ্রুত খুঁটির আগের জায়গায় স্থাপন করা হোক।’ ভুক্তভোগী খালেক ঢালী বলেন, ‘১ মাসের ওপরে হয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি উল্টে পড়েছে। আমরা বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে যাতায়াত করতে পারছি না। রিস্ক হয়ে গেছে। বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগকে সঙ্গে সঙ্গে জানালেও তারা এখনও কাজ শুরু করেনি। আমাদের একটাই দাবি দুর্ঘটনা ঘটার আগে জরুরি ভিত্তিতে খুঁটিসহ লাইনটি সংস্কার করা হোক।’ বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম আর ট্রেড মার্কের ঠিকাদার মজিবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত আছি। তবে আমাদের লোকজন ঈদের ছুটিতে থাকায় মেরামত করা সম্ভব হয়নি। আজকে আমাদের লোকজন এসেছে। আশাকরি আজই খুঁটিটি ঠিক করা হবে।’ বিষয়টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি উল্লেখ করে শরীয়তপুর ওজোপাডিকোর উপসহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ নবীদ আলী বলেন, ‘এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। খুঁটিটি ঠিকাদারকে ঠিক করতে বলা হয়েছিল। তবে ঈদের ছুটিতে পড়ে যাওয়ায় লোকজন সংকটের কারণে ঠিক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। আমরা এ নিয়ে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছি। বুধবারের মধ্যে ঠিক করার কথা জানিয়েছেন ঠিকাদার।’
পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ কম, জ্বালানি খরচও উঠছে না জেলেদের
মৌসুম শুরু হলেও শরীয়তপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না। জেলেরা দিনরাত নদীতে চষে বেড়ালেও জ্বালানি খরচ উঠছে না, ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। ইলিশের এই সংকটের ফলে স্থানীয় আড়তগুলোতেও ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার পথে। ঈদুল আজহা পরবর্তী সময়ে জেলার জাজিরা উপজেলা, নড়িয়া উপজেলা, গোসারহাট উপজেলা ও ভেতরেগঞ্জ উপজেলার পদ্মা-মেঘনা উপকূলীয় জেলে পল্লী ও আড়তগুলোতে ঘুরে এবং জেলেদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে শরীয়তপুরের জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, এবং গোসাইরহাট উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার জেলে পরিবার ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। চার উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে প্রবাহমান রয়েছে পদ্মা ও মেঘনা নদী। এই এলাকার অন্তত ৮০ কিলোমিটার নৌ সীমানা থেকে আহরণ করা হয় ইলিশ মাছ। প্রায় ৩১ হাজার ২৪০ দরিদ্র জেলে পরিবার রয়েছে এখানে। এর বাইরেও আরও প্রায় ৯ হাজার জেলে আছেন। তারা ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বছরে দুটি সময় অর্থাৎ জাটকা এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ সময়ে ২৫ হাজার ৮২৬ জন জেলে পরিবারকে মাসে ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এ ছাড়া এসব জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন উপকরণ দেওয়া হচ্ছে। ইলিশ উৎপাদন কমে যাওয়ার পেছনে পানি দূষণ, অবৈধ জাল ব্যবহার, অতিরিক্ত মাছ ধরা এবং জলবায়ু পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য কারণ। নদীর নাব্যতা সংকট এবং ইলিশের খাদ্যের অভাবও মাছের সংখ্যায় প্রভাব ফেলছে। সোমবার (২৪ জুন) সকালে এ বিষয়ে কথা হয় ভেদরগঞ্জ উপজেলার নরশিংহপুর আলুর বাজার ফেরি ঘাটের আড়তদার মকবুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ইলিশের আমদানি না থাকায় অনেক আড়ত বন্ধ হয়ে গেছে। হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে তা সবার কল্পনার বাহিরে ছিল। জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে খুবই কম।’  নড়িয়া সুরেশ্বর ঘাটের মাছের আড়তদার শিহান খান বলেন, ‘ইলিশের আমদানি না থাকায় ৫ আড়তের ৩টি বন্ধ। সঠিকভাবে জাটকা সংরক্ষণ না হওয়ায় ইলিশ নদীতে কমেছে। আবার জেলেরা নদীতে নামলে জালের প্রকারভেদ নিয়ে নৌপুলিশের হয়রানি তো আছেই। ব্যবসার অবস্থা একদমই ভালো না।’ ভেদরগঞ্জ উপজেলার নরশিংহপুর আলুর বাজার ফেরি ঘাট এলাকার জেলে আবির হোসেন জানান, তার নৌকায় পাঁচজন জেলে মিলে দিনভর মাছ ধরেন। ছোট-বড় ৪টি ইলিশ বিক্রি করে পেয়েছেন ১৫০০ টাকা। এতে তাদের জ্বালানি খরচও ওঠে না।  এ সময় মোসলেম হোসেন নামে এক জেলে বলেন, ‘আগে দিনে ৫০-৬০ কেজি ইলিশ ধরতাম। এখন সেখানে ১০ কেজি ইলিশও পাওয়া মুশকিল।’ শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা পলাশ হালদার বলেন, ‘আমরা বছরজুড়ে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করছি। বিশেষ করে জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় আমরা জেলেদের সচেতন করে আসছি। এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সফল হয়েছে। আগামী মৌসুমে এটির সুফল পাবে জেলেরা। তবে নদীতে চর জেগে ওঠা, নদীর পানি দূষণ ও ইলিশের খাদ্য হ্রাস পাওয়ায় মিঠা পানিতে ইলিশের বিচরণ কমেছে। তবে ভরা মৌসুমে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, শরীয়তপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ইলিশ সংকট শুধু জেলেদের জীবনযাত্রাকেই প্রভাবিত করছে না বরং স্থানীয় অর্থনীতিতেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। সমন্বিত ও টেকসই উদ্যোগের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। যাতে ইলিশের ঐতিহ্যবাহী মৎস্য শিল্প পুনরুদ্ধার করা যায় এবং জেলেদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়।