অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য। ইতোমধ্যে সে রহস্য উদ্ঘাটন করতে অভিনেত্রীর প্রেমিক জিয়াউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি র্যাবের নজরদারিতে রয়েছে মেকাপ আর্টিস্ট মিহিরও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে অভিনেত্রীর মৃত্যু নিয়ে মুখ খুলেছেন মিহির।
রোববার (৫ নভেম্বর) সকালে নিজের ফেসবুক থেকে লাইভে এসে ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন মিহির। পাশাপাশি ওই ভিডিওতে তার মানসিক অবস্থার কথাও তুলে ধরেন এই মেকআপ আর্টিস্ট। ইতোমধ্যে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়।
মিহিরের ভাষ্য মতে, ‘আমি না থাকলে তাজিন আপা স্ট্রোক করে বাসায় মারা যেতেন। লাশ পড়ে থাকত বাসায়। আর মিহির ছিল বলেই তো ফ্রেশ হিমুরে বের করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া গেছে। আমি উপকার করছি এজন্য আমাকে সবাই মিলে ফাঁসি দিয়ে দেন। আমার কেউ নেই তো, কোনো বড় লেভেলের মানুষ নেই যে আমাকে সাপোর্ট দেবে এবং ব্যাকআপ দেবে।
১৫ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের সেই লাইভে আত্মপক্ষ সমর্থন ছাড়াও একাধিক প্রশ্ন রাখেন তিনি।
তাজিন আপা মরছে আমি ছিলাম, হিমু মরছে আমি ছিলাম— এ বিষয়টি আপনাদের ভাবিয়ে তুলছে জানিয়ে মিহির বলেন, এই পাঁচ বছরের ব্যবধানে দুজন মানুষ মরছে আমি ছিলাম। তারা আমার নিকটাত্মীয় ছিল, ফ্যামিলি মেম্বারের মতো। আমি না থাকলে হিমুর বয়ফ্রেন্ড তাকে ঘরের ভেতর ঝুলাইয়া রাইখা দরজা বন্ধ কইরা পালাইয়া যাইত। এটা কি হতো না? এটা তো কেউ বলেন না যে, তুই ছিলি বলে হিমুকে আমরা বের করে আনতে পারছি বা ওকে ধরতে পারছে পুলিশ। হিমুর বয়ফ্রেন্ড ইন্ডিয়ান। না হলে তো ওই ছেলে হিমুকে রেখে কবে পালাইয়া যাইত। ঠান্ডা মাথায় পলাইয়া যাইত। আমি ভালো করছি এটা কেউ বলে না। সব খারাপ করছি, আমি রাবন। আমাকে পারলে ফাঁসি দিয়া দেন।
হিমু মরছে আমি ছিলাম। এখন আমি করছি না ওই ছেলে করছে সেটা তো ওই ছেলে নিজেই স্বীকার করছে। তার পরও কেন আপনাদের ভেতর এত দ্বিধাদ্বন্দ্ব যে মিহির ছিল। মিহির ছিল বলেই তো ফ্রেশ হিমুরে বের করে হাসপাতালে নিয়ে আসছে।
আমার ভুলটা কোথায় একজন বের করেন, একজন গাইড করেন আমাকে। তা না খালি আমাকে নিয়ে বড় বড় কথা আর বদনামি করবেন, করেন। আমি যদি কোনো ধরনের খারাপ কাজ করতাম, তা হলে ভয়ে পালাইয়া যাইতাম। আমার ভেতরে ভয় লাগে না। আমার ভেতরে ঘেন্না লাগছে, ভেতরে কষ্ট হচ্ছে। আপনাদের জন্য মায়া হচ্ছে যে, আপনারা এতটা নেগেটিভ যে আপনারা মানুষকে নিয়ে ভাবতে পারেন না। মানুষের সাহায্য করতে পারেন না।
এর আগে, তাজিন-হিমুর সঙ্গে জড়িয়ে নানা ধরনের শিরোনামে একাধিক সংবাদ প্রকাশের পরই মূলত তিনি এ জবাব দিয়েছেন বলে জানা যায়।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রহস্যজনক মৃত্যু হয় জনপ্রিয় অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর। এ সময় অভিনেত্রীর বাসায় উপস্থিত ছিলেন হিমুর বয়ফ্রেন্ড জিয়াউদ্দিন এবং মেকআপ আর্টিস্ট মিহির। জিয়া উদ্দিনকে ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে র্যাবের নজরদারিতে রয়েছেন মিহিরও।