মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় নায়িকা পরীমণি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদ তাকে জামিন দেন। পরীমণির জামিনদার হয়েছেন তরুণ গায়ক শেখ সাদী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, আদালতে পরীমণি আসতে না পারায় আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে পরীমণিকে খবরটি জানান। পরীমণি সিদ্ধান্ত নেন, সোমবার তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইবেন। তিনি আদালত থেকে জামিনও পেয়ে যান। নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, আদালতের জামিন আদেশের পর পরীমণির জামিননামা লেখা হয়। আমি জামিনদার হয়েছি। আরেকজন জামিনদার হয়েছেন শেখ সাদী। জামিননামাটি আদালতে জমাও দিয়েছি।
শেখ সাদী আদালতে শুরু থেকে পরীমণির সঙ্গে ছিলেন। পরীমণির জামিনদার হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেখ সাদী বলেন, পরীমণি আমার সহকর্মী। যখন তিনি গণমাধ্যমে পরীমণির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির খবর শুনলেন, তখন বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। তখন পরীমণির সঙ্গে কথা হয়। তিনি আমাকে জানিয়েছিলেন, আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন। এ জন্য আমিও আদালতে যায়। জামিন হওয়ার পর তার আইনজীবী একজন জামিনদার হন। আমিও জামিনদার হই।
শেখ সাদী জানান, একই অঙ্গনে দীর্ঘদিন কাজ করার কারণে পরীমণির সঙ্গে বেশ আগেই পরিচয় হয়েছিল। তখন থেকেই পেশাগত বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে নিয়মিত কথাবার্তা হয়।
প্রসঙ্গত, মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই ঢাকার আদালতে নালিশি মামলা করেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের ৮ জুন পরীমণি ও তার সহযোগীরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। রাত ১টা ১৫ মিনিটের দিকে ক্লাব ত্যাগ করার সময় পরীমণি তাকে ডাক দেন। পরে একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় পরীমণি তাকে গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে পরীমণি হত্যাচেষ্টার জন্য একটি গ্লাস ছুড়ে মারেন, যা তার মাথায় ও বুকে লাগে।
এদিকে ২০২১ সালের ৮ জুন সাভারের বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে পরীমণি ব্যবসায়ী নাসিরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। মামলায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ তিন আসামির বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১৮ মে অভিযোগ গঠন করেন। পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
অন্যদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিচার চলছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ। মামলাটিও সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
আরটিভি/এএ/এস