মসুলে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে ইরাকি সেনার বিজয়ে তাদের অভিনন্দন জানাতে প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি সেখানে গিয়ে পৌঁছেছেন। ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মসুলকে মুক্ত ঘোষণা করে বাহিনীর বিজয় সূচিত করতেই তিনি সেখানে গেছেন।
মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিমান হামলার সাহায্য নিয়ে ইরাকি সেনা গেলো বছরের ১৭ অক্টোবর থেকেই মসুলের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাবার জন্য লড়াই চালাচ্ছিল। ২০১৪ সালের জুন মাসে ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিরা ওই শহরটি দখল করে নেয় এবং ইরাক ও সিরিয়া জুড়ে এক খিলাফত স্থাপনের ঘোষণা দেয়। কুর্দি পেশমেরগা, সুন্নি আরব উপজাতীয় যোদ্ধা ও শিয়া মিলিশিয়ারাও মসুল পুনরায় দখলের লড়াইতে যুক্ত ছিল।
রোববার মসুলে ইসলামিক স্টেটের চূড়ান্ত পরাজয়ের পরই সেনাবাহিনী ও ইরাকি জনতাকে অভিনন্দন জানাতে প্রধানমন্ত্রী সেখানে এসে পৌঁছেছেন বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। মসুলের ওল্ড সিটির কাছে একটি ছোট্ট এলাকায় ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিরা মাটি আঁকড়ে পড়ে ছিল আর সেই ক্ষুদ্র পকেটগুলো দখল করতেই ইরাকি সেনারা গেলো কয়েকদিন ধরে লড়াই চালাচ্ছিল।
সরকারি মিডিয়া জানায়, ইরাকি সেনার অভিযানের মুখে ৩০ জন ইসলামিক স্টেট জঙ্গি টাইগ্রিস নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালাতে গিয়ে মারা পড়েছে। ইরাক সরকার গেলো জানুয়ারিতেই ঘোষণা করেছিল মসুলের পূর্বপ্রান্ত পুরোপুরি মুক্ত হয়ে গেছে । কিন্তু শহরের পশ্চিমাঞ্চল, যেখানে সরু ও আঁকাবাঁকা বহু রাস্তা আছে, সেটাই সেনাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছিল। ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে ২০১৪ সাল থেকে এযাবৎ মসুল থেকে প্রায় নয় লাখ মানুষ পালিয়েছেন। যুদ্ধের আগে শহরটির যে জনসংখ্যা ছিল, এটি তার প্রায় অর্ধেক।
তবে মসুলের পতন মানেই ইরাকে ইসলামিক স্টেট শেষ হয়ে গেলো তা নয়। কারণ এখনও দেশের অনেক এলাকা তাদের কব্জায় আছে, সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকাতেও তারা বোমা হামলা চালানোর ক্ষমতা রাখে। মসুলে ইরাকি সেনার বিজয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। আন্তর্জাতিক জোটের যে সেনারা মসুল বিজয়ে সাহায্য করেছে, তার মধ্যে ফরাসি সেনারাও ছিল।
এপি