ঢাকাশুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

প্রাকৃতিক সম্পদই রোহিঙ্গা উচ্ছেদের কারণ!

সেলিম মালিক

শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ , ১১:৪৪ এএম


loading/img

বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কথা চিন্তা করে তাই অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলটিতে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে চীন, ভারতসহ বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো। আর এমন বিনিয়োগ নিশ্চিত করতেই, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের তাড়িয়ে দেয়ার বিশেষ মিশন নিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। যাতে নীরব সায় আছে বড় দেশগুলোরও!

বিজ্ঞাপন

মিয়ানমারের পত্রিকা ‘ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার’ বলছে, এ মাসেই মংডুর কানইন চ্যাঙ গ্রামে শুরু হচ্ছে ‘মংডু স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ তৈরির কাজ। বিশেষ ওই অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়তে কয়েকটি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা আছে।

রাখাইনের আরেক শহর কিয়াপফুতে চার হাজার একর জমির ওপর বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। এছাড়া, ‘চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কোম্পানি’ ২০১৩ সালে রাখাইন প্রদেশের রাজধানী সিত্তুই থেকে চীনের ইউনান প্রদেশের কুনমিং পর্যন্ত একটি বহুজাতিক পাইপলাইন তৈরির কাজ শুরু করেছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, রাখাইন রাজ্যে গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরি করছে ভারত। মিজোরাম থেকে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড পর্যন্ত সড়ক বানানোর একটি পরিকল্পনাও আছে দেশটির।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন এর মতে, রাখাইন প্রদেশকে ঘিরে মিয়ানমার সরকার ও তার মিত্র দেশগুলোর গভীর ষড়যন্ত্র ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। আর তাই স্বভাবতই রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞ বন্ধে এই দুটি দেশকে পাশে পাচ্ছে না বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

সাবেক কূটনীতিক মুন্সি ফয়েজ আহমেদ মিয়ানমারের এ রোহিঙ্গা  সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের ওপর চাপ বজায় রাখার পরামর্শ দিলেন।

বিজ্ঞাপন

মিয়ানমারে ২৫ আগস্ট সবশেষ সহিংসতা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত আনুমানিক চার লাখ রোহিঙ্গা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এ শরণার্থীদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই শিশু বলে জানিয়েছে ইউনাইটেড ন্যাশনস চিলড্রেন ফান্ড (ইউনিসেফ)।

গেলো মাসে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) বেশ কয়েকটি পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালায়। এতে ১২ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়।

পরে দেশটির রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযানে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের কয়েকশ মানুষ নিহত হন। ধর্ষিত হন অনেক নারী। গ্রামের পর গ্রাম আগুন লাগিয়ে দেয় দেশটির সরকারি বাহিনী।

এরপর লাখো রোহিঙ্গা শিশু-নারী-পুরুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশের দিকে আসতে থাকে। এদের অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট নৌকায় করে নদী ও সমুদ্র পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে পড়ে বেশ কয়েকটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এতে শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হন।

 

আরকে/জেএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |