সম্প্রতি আলোচিত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে বিষয়টি নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
তিনি বলেন, আমরা হাইকোর্ট রুলস অনুযায়ী শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আপনাদের চিঠি দিয়েছি। আপনারা এই চিঠিকে আবেদন হিসেবে গ্রহণ করে যেকোনো আদেশ দিতে পারেন।
তখন আদালত বলেন, আপনি তো এসেছেন ব্যক্তিস্বার্থে, জনস্বার্থে নয়। জনস্বার্থে হলে চিঠি বিবেচনায় নেওয়া হয়।
শিশির মনির বলেন, আমরা জনস্বার্থে এসেছি। কারণ, এ ঘটনায় দুদকের ইমেজ রক্ষার বিষয়টি রয়েছে। এটা সংরক্ষণ করা সবার দায়িত্ব। আমি কারও পক্ষে বিপক্ষে নই।
তখন আদালত বলেন, আপনারা যদি সংক্ষুব্ধ হন তাহলে সব ডকুমেন্ট দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রিট ফাইল করেন। আপনাদের চিঠি আমরা রেখে দিচ্ছি।
পরে আইনজীবী শিশির মনির গণমাধ্যমকে বলেন, আগামীকাল বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আমরা রিট দায়ের করব।
এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের কারণ খতিয়ে দেখতে হাইকোর্টকে চিঠি দেন ১০ জন আইনজীবী।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনিরসহ ১০ জন আইনজীবী দুদকের মামলা বিচারের এখতিয়ার সম্পন্ন বেঞ্চ ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেলকে এ চিঠি দেন।
সে সময় শিশির মনির বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের অপসারণের কারণ খতিয়ে দেখতে আমরা ১০ জন আইনজীবী হাইকোর্টকে চিঠি দিয়েছি। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেলকে চিঠি দেওয়া হয়।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ সই করা এক প্রজ্ঞাপনে অপসারণ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪ (২) তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধি অনুযায়ী ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা (যদি থাকে) পাবেন। কমিশনের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।
চট্টগ্রাম কার্যালয়ে কর্মরত থাকাকালে বেশকিছু বড় দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মো. শরীফ উদ্দিন। এরপরই একাধিক মহলের রোষানলে পড়েন বলে অভিযোগ ওঠে।
সর্বশেষ গত ৩০ জানুয়ারি পরিবারসহ হত্যার হুমকি পান শরীফ। পরিবারসহ হত্যার হুমকি পাওয়ায় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আইয়ুব খান চৌধুরী ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে সিসি টিভির ফুটেজসহ চট্টগ্রামের খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেন। তাকে অপসারণের পর থেকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
এরপর দুদক শরীফের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করে। পরে পাল্টা লিখিত জবাব দিয়ে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন শরীফ।
কেএফ