কুমিল্লায় পূজামণ্ডপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এমন অবস্থায় দেশজুড়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) থেকে দেশের ২২টি জেলার বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ ও র্যাব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কুমিল্লার ঘটনার তদন্ত চলছে, আমরা অনেক তথ্য পাচ্ছি। কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যারা ‘সহিংসতা’ সৃষ্টি করছে তারা যেই হোক না কেন, যে ধর্মেরই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে। আমরা তা করেছি এবং করব।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, পূজামণ্ডপের ঘটনাটি উদ্দেশ্যমূলক। কোনো স্বার্থান্বেষী মহল, ষড়যন্ত্রকারী বা চক্রান্তকারী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ইতোমধ্যে জড়িত কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। শিগগিরই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
তিনি আরও বলেছেন, কেউ উস্কানি দিলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে যারা বৈরিতা সৃষ্টি করতে চায় শেখ হাসিনার সরকার এই অপশক্তিকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেবে না। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে প্রশাসনকে সব ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। কেউ যাতে কোনো ধরনের উস্কানি দিয়ে পরিবেশ ঘোলাটে করতে না পারে, সে জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাইবার টহল চলছে। দেশজুড়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে কুমিল্লায় মন্দিরের ঘটনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুরের ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন মো. ফয়েজ নামে এক ব্যক্তিসহ সন্দেহভাজন অন্তত ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে ধর্মীয় অবমাননা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক ৪টি মামলা করেছে। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
আরএ/এসকে