জাল স্বাক্ষরে বোনের নামে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের অভিযোগ টিউলিপের বিরুদ্ধে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫ , ০২:৪৩ এএম


জাল স্বাক্ষরে বোনের নামে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের অভিযোগ টিউলিপের বিরুদ্ধে
ফাইল ছবি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক নিজের বোনের নামে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা হস্তান্তরের জন্য ভুয়া নোটারি নথি ব্যবহার করেছিলেন বলে অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির অভিযোগ, এক আইনজীবীর জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছিল এ কাজে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া, খালা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিজের নামে ঢাকার পূর্বাচলে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ারও অভিযোগ আনা হয়েছে টিউলিপের বিরুদ্ধে। 

শুক্রবার (১৪ মার্চ) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে। 

বিজ্ঞাপন

টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সিটি মিনিস্টার’–এর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর বিতর্কের মুখে গত জানুয়ারিতে সিটি মিনিস্টারের পদে ইস্তফা দেন তিনি।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুদকের দাবি, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জন্য পূর্বাচলের নিউ টাউন প্রকল্পের সরকারি প্লট বরাদ্দ নিয়েছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুদকের প্রকাশিত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বোনের নামে আলাদা একটি ফ্ল্যাট হস্তান্তরের জন্য একটি জাল নোটারি ব্যবহার করেছিলেন তিনি।

দুদক জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ-সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বৃহত্তর তদন্তের অংশ হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকসহ শেখ হাসিনার পরিবারের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনছে তারা। সংস্থাটির দাবি, আইন লঙ্ঘন করে শেখ হাসিনা ও তাঁর স্বজনেরা সরকারি জমি বরাদ্দ নিয়েছিলেন। 

বিজ্ঞাপন

দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, দুদকে তদন্তাধীন আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে, যেগুলো ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরাট দুর্নীতি তুলে ধরবে।

দুদকের তদন্তকারীদের অভিযোগ, পূর্বাচলের নিউ টাউন প্রকল্পের ৬০ কাঠা (প্রায় এক একর) সরকারি জমি অবৈধভাবে শেখ হাসিনা, তাঁর সন্তান ও পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। ঢাকায় টিউলিপের মালিকানায় আরেকটি সম্পত্তি থাকায় পূর্বাচলে জমি বরাদ্দের শর্ত অনুযায়ী, তিনি প্লট পাওয়ার যোগ্য নন। তবে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা নিয়ম লঙ্ঘন করে প্লট বরাদ্দ পান।

টিউলিপের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে ঢাকার গুলশান এলাকায় একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা হস্তান্তরের জন্য ভুয়া নোটারি নথি ব্যবহার করেছিলেন তিনি। ওই নথিতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী সিরাজুল ইসলামের সিল রয়েছে। 

তবে, আইনজীবী গাজী সিরাজুল ইসলামের দাবি, ওই নোটারি তিনি করেননি। সিলটি তার হলেও স্বাক্ষর তার নয়। 

দুদকের তদন্তকারীদের এ আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি শুধু নিজের আইনি চেম্বারে বসে নথিপত্রে নোটারি করে থাকেন। টিউলিপ সিদ্দিক বা আজমিনা সিদ্দিকের সঙ্গে তার কোনো পূর্বপরিচয় নেই।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া দুদকের তথ্য অনুযায়ী, ওই নথি একটি হেবা দলিল। কাউকে সম্পত্তি উপহার দেওয়ার ইসলামি আইনসম্মত দলিল এটি। ওই হেবা দলিল করা হয়েছিল ২০১৫ সালে। তখন লেবার পার্টির এমপি ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক, তবে মন্ত্রিত্ব পাননি। দুদকের অভিযোগ, গুলশানের ওই ফ্ল্যাটের প্রকৃত মালিকানা গোপন রাখার চেষ্টার অংশ হিসেবে ওই ভুয়া নোটারি করা হয়েছিল।

এদিকে দুদকের অভিযোগের বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই অভিযোগগুলোর পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এমনকি, এই বিষয়গুলো নিয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগও করেনি দুদক। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানার পর দুদকের দাবিগুলো পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক।

আরটিভি/এসএইচএম

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission