সেনাবাহিনীর অভিযানে গত তিন সপ্তাহে বা ২১ দিনে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৯৯৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের (স্টাফ কর্নেল) কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
শফিকুল ইসলাম বলেন, ৯৯৬ জন গ্রেপ্তারের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, ডাকাতসহ অন্যান্য অপরাধী উল্লেখযোগ্য। সেনাবাহিনী গত ২৭ মে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কুষ্টিয়া জেলা থেকে শীর্ষ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে হাতিরঝিল এলাকা থেকে সুব্রত বাইনের অপর দুই সহযোগী শুটার আরাফাত এবং শরীফকে ৫টি অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড অ্যামোনিশন ও একটি স্যাটেলাইট ফোনসহ সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে।
তিনি বলেন, একইদিনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় আরও একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বুড়িগঙ্গা ফিলিং স্টেশন এলাকা থেকে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ফরিদ আহমেদ বাবু ওরফে এক্সেল বাবুসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং ভূমি দখলের মতো গুরুতর অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। অভিযানের ফলে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা বিরাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, গত ৪ জুন মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প এলাকা থেকে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী বুনিয়া সোহেলকে ১০ জন সহযোগীসহ সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার বুনিয়া সোহেলের বিরুদ্ধে ৩০টির বেশি মামলা রয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, বিভিন্ন ধরনের ধারালো দেশীয় অস্ত্র এবং মাদক উদ্ধার করা হয়।
শফিকুল ইসলাম বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে গত তিন সপ্তাহে ৪৫২ জন মাদক কারবারি এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫ হাজার ৪৭৬ জনকে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অবৈধ মাদকদ্রব্য, যেমন ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা, অবৈধ মদ ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়েছে, যার মাধ্যমে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা বিরাজ করছে। গত ৬ জুন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সাভারের লুটেরচর এলাকায় একটি মদ তৈরির কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ কারখানায় গ্যাস লাইটার তৈরির নামে অবৈধভাবে মদ তৈরি করা হচ্ছিল। পরে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। অভিযানে ৮ হাজার ৬২০ লিটার মদ এবং মদ উৎপাদনের বিভিন্ন কাঁচামাল জব্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৫ জুন কক্সবাজারের মাঝিরকাটা এলাকায় কুখ্যাত শাহীনুর রহমান ওরফে শাহীন ডাকাতকে তার দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, অপহরণ, মাদক, চাঁদাবাজিসহ ২০টির বেশি মামলা রয়েছে। এ সময় ১টি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রসহ মোট ৪টি অস্ত্র, গোলাবারুদ, দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়।
এ ছাড়া গত ৬ জুন কুষ্টিয়া জেলার দূর্বাচর এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে শীর্ষ সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর কবির লিপটনসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে ৬টি বিদেশি পিস্তল, ১টি লং ব্যারেল গান, ১০টি পিস্তল ম্যাগাজিন এবং সর্বমোট ১১৯ রাউন্ড অ্যামুনিশন উদ্ধার করা হয়।
আরটিভি/এফএ -টি