ঢাকাসোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

টুসু গান ও ভাষা আন্দোলন

মিথুন চৌধুরী

রোববার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ , ০৪:৩৫ পিএম


loading/img

শুন বিহারী ভাই/ তোরা রাখতে নারবি ডাঙ্গ দেখাই। /তোরা আপন তরে ভেদ বাড়ালি/ বাংলা ভাষায় দিলি ছাই। /ভাইকে ভুলে করলি বড়/ বাংলা-বিহার বুদ্ধিটাই। /বাঙ্গালী-বিহারী সবই/ এক ভারতের আপন ভাই/ বাঙ্গালীকে মারলি তবু/ বিষ ছড়ালি-হিন্দী চাই। /বাংলা ভাষার পদবীতে ভাই/ কোন ভেদের কথা নাই/ এক ভারতে ভাইয়ে ভাইয়ে/ মাতৃভাষার রাজ্য চাই।

বিজ্ঞাপন

অরুণ ঘোষের লেখা একটি ঐতিহাসিক টুসু গান। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে যেমন বাংলাদেশের চলে পাকিস্তানিদের সঙ্গে বাগযুদ্ধ। তেমন ভারতে থাকা বাংলাভাষীরা বাংলাকে টিকিয়ে রাখতে করেছে আন্দোলন। বাংলায় লেখা, বাংলায় আলাপ, স্কুল কলেজে হিন্দির বদলে বাংলাতেই পড়াশোনার দাবিতে আন্দোলন করেছে অবিভক্ত বিহারের জনগণ। ১৯৫৬ সালে তারা এ আন্দোলন করে। আর এতে ব্যাপক অনুপ্রেরণা যোগায় গানটি।

ওই সময় পাকবিড়া গ্রামের মাঠ থেকে টানা ১৬ দিন হেঁটে আন্দোলনকারীদের মিছিল পৌঁছে কলকাতায়। ১৯৫৬ সালের ২০ এপ্রিল সেই ঐতিহাসিক মিছিল শুরু হয়। বাঁকুড়া, বেলিয়াতোড়, সোনামুখী, পাত্রসায়র, খণ্ডঘোষ, বর্ধমান, পান্ডুয়া, মগরা, চুঁচুড়া, চন্দননগর, হাওড়া হয়ে ৬ মে প্রায় হাজার খানেক মানুষ পৌঁছেন কলকাতায়। অবশেষে ওই বছরের ১ নভেম্বর অবিভক্ত বিহারের কিছু এলাকা (তৎকালীন মানভুম বর্তমান পুরুলিয়া জেলা) পশ্চিমবঙ্গে অন্তর্ভূক্ত হয়। এই আন্দোলন একরকম টুসু গানটির ফসল।

বিজ্ঞাপন

মানভুমের আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে কেউ শহীদ হননি। কিন্তু আন্দোলনকারীদের খোয়াতে হয় অনেক কিছুই। আন্দোলনে যোগ দিয়ে ঘরছাড়া হন অনেকে। অনেককে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়া হয়। চাকরি থেকে বরখাস্ত হন। হন বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার।

২০০৬ সালে আন্দোলনের ৫০ বছর পূর্তিতে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পুঞ্চায় এসে সংবর্ধনা দেন ভাষা সৈনিকদের।

এমসি/ডিএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |