অ্যাম্বুলেন্সে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার দাবিতে হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বাস অবরোধ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী সুজন রানা অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস অবরোধ করেন।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের সামনে বাস আটকে রাখেন কিছু শিক্ষার্থী। এতে ভোগান্তিতে পড়েন বাসে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরা। বন্ধ হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সেবা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জুলাই মাসে হওয়া আন্দোলনে প্রথমদিকে অংশ নিয়েছিলেন সুজন রানা। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) তিনি তার গ্রামের বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্সে করে যাবেন বলে আবেদন করেন।
সুজন রানা বলেন, আমি যতবারই অ্যাম্বুলেন্স নিয়েছি আবেদন করেই নিয়েছিলাম। দীর্ঘদিন থেকেই আমার পায়ে রিং ছিলো। কিন্তু গত পরশু রংপুরে আমার পায়ের অপারেশন করে রিং বের করে ফেলা হয়। এই অপারেশনের জন্য আমার হল সুপার এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক স্যারের অনুমতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে আমাকে রংপুরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আমার পায়ে রিং না থাকায় বর্তমানে আমাকে নড়াচড়া করতে ডাক্তার নিষেধ করেছেন। যার ফলে আমি বাসায় যাওয়ার জন্য আবারও আমার হল সুপার এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক স্যারদের স্বাক্ষরসহ পরিবহন শাখায় আবেদন জমা দেই। তখন পরিবহন শাখার পরিচালক ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালককে কল দিলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান। তখন আমি বাধ্য হয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ডেকে নেই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল বন্ধ করে দেই।
তিনি বলেন, আমাকে যদি আগেই বিষয়টি অবগত করা হতো তাহলে আমি নিজস্ব ব্যবস্থায় চলে যেতে পারতাম। কিন্তু তারা আমাকে অবগত না করে আজকে যখন আমি বাড়িতে যাওয়ার জন্য বের হই তখন বিষয়টি আমাকে জানানো হয়। আমি চাই ভবিষ্যতে যেনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে এমন ভোগান্তিতে পড়তে না হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. এমদাদুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইনে কোনো শিক্ষার্থী অথবা শিক্ষক অসুস্থ হলে তাকে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে বাড়িতে পোঁছে দিতে হবে এমনটা নেই । মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা তাকে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে আরও কয়েকজন শিক্ষকের সাথে সুপারিশের বিষয়ে কথা বললে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন না থাকায় সুপারিশ করতে অসম্মতি জানান। তখন আমি আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করলেও সেটা থেকে সরে আসি ৷
পরিবহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা মানবিকতার খাতিরে আমাদের পরিবহন ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে থাকি। আইনে না থাকলেও সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজনকে ওই গাড়ির দায়িত্বে থাকতে হয়। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল যে কোনো শিক্ষকের নাম বা সুপারিশ থাকলে যিনি সুপারিশ করেন আমরা গাড়ি তার দায়িত্বে ছেড়ে দিয়ে থাকি। এমদাদুল স্যারকে সুপারিশের বিষয়ে কল দিলে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। তখন আমরা গাড়ি দিতে অস্বীকৃতি জানাই। সে সময় আবেদনকারী কয়েকজন ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।
অ্যাম্বুলেন্স কতৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স শিক্ষার্থীদেরকে হাসপাতাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এরিয়ায় জরুরি সেবার কাজে ব্যবহার করা হলেও কাউকে বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা নজির নেই।
আরটিভি/একে
মন্তব্য করুন