দেশবাসীকে যে বার্তা দিলেন তারেক রহমান

চলমান অবস্থার পরিপেক্ষিতে দেশবাসী শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান।

সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে লন্ডন থেকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান।

তারেক রহমান বলেন, গৌরবজনক ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সাহসী ছাত্র-জনতাকে বীরোচিত অভিনন্দন। হাজারও শহীদের প্রাণের বিনিময়ে জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গণহত্যাকারী খুনি হাসিনার পতন হয়েছে। রাহুমুক্ত হয়েছে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, জনতার বিপ্লবের প্রথম ধাপ চূড়ান্তভাবে সফল হয়েছে। এই ঐতিহাসিক বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ সকলে থাকলে এই বাংলাদেশকে কেউ কখনও পরাজিত করতে পারে না, পারবে না।

আরও পড়ুন

শেখ হাসিনার পদত্যাগ, যা জানাল জামায়াত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন বলেন, বিজয়ের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমি আজ সেই সব মায়েদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই, এই গণ বিপ্লবে যারা তাদের প্রিয় সন্তানকে হারিয়েছেন। এভাবে গত ১৫ বছরের অনেকেই তাদের স্বজনদের হারিয়েছেন।

তারেক রহমান বলেন, জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব সফল করতে গিয়ে অসংখ্য ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন। বাসায়, হাসপাতালে কিংবা ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন যন্ত্রণাবিদ্ধ সময়ে সমস্ত ভালোবাসা নিয়ে আপনাদের পাশে আজ সারা বাংলাদেশ। খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষ মিথ্যা মামলা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন। কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের কারামুক্তির দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে আবার স্বাভাবিকভাবে হলে, হোস্টেলে, ক্লাসে ফিরতে পারে এবং পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে, আশা করি সেই পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করবে।

তিনি আরও বলেন, যেদিন একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে দেশের মানুষ নিরাপদে নিশ্চিন্তে ভোট দিয়ে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে, রাষ্ট্র, সরকার, শাসন, প্রশাসনে মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র সাম্য-মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে পারবে, সর্বোপরি একটি গণতান্ত্রিক বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ গড়তে পারবে- তখনই জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের চূড়ান্ত সফলতা আসবে।

তারেক রহমান বলেন, জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে যথাসম্ভব দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অবশ্যই ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য বিএনপিসহ বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সব রকমের সহযোগিতা করবে।

তিনি বলেন, এবার আপনাদের কাছে আমি একটি বিনীত আহ্বান রাখতে চাই। বিজয়ীর কাছে পরাজিতরা নিরাপদ থাকলে বিজয়ের আনন্দ মহিমান্বিত হয়। সুতরাং বিজয়ের এই আনন্দঘন সময় রাহুমুক্তির এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত শান্তভাবে উদযাপন করুন। অনুগ্রহ করে কেউ প্রতিশোধ কিংবা প্রতিহিংসাপরায়ণ হবেন না। কেউ নিজের হাতে দয়া করে আইন তুলে নেবেন না। অর্জিত বিজয় যাতে লক্ষ্যচ্যুত না হয় সে ব্যাপারে জনগণকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ৫২, ৭১ কিংবা ৯০ এর মতো ছাত্র-জনতা আবারো একটি বিজয়ের ইতিহাস রচনা করেছে। দেশবাসী আবারও আপনাদের সকলকে বীরোচিত অভিনন্দন।