সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি
দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর (বি. চৌধুরী) শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে।
বুধবার (২ অক্টোবর) ভোরে তাকে উত্তরার মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন অ্যান্ড হসপিটালে ভর্তি করা হয়।
বি. চৌধুরীর ছেলে সাবেক সংসদ সদস্য মাহি বি চৌধুরী জানান, তার বাবা মঙ্গলবার সারারাত শয্যাগত ছিলেন। ব্লিডিং হয়েছে। অবস্থা কতটা গুরুতর এখনো বোঝা যাচ্ছে না। তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
তার মেয়ে ডা. শায়লা চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, বাবাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আরও পরে বিস্তারিত বলা যাবে।
জানা যায়, ৯৫ বছর বয়সী সাবেক এই রাষ্ট্রপতি নানা রোগে ভুগছেন। গত কয়েক দিন ধরে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
আরটিভ/একে-টি
মন্তব্য করুন
যে কারণে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না বিএনপি
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের মাধ্যমে দেশে কোনো সাংবিধানিক সংকট ও শূন্যতা তৈরি হলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিএনপি। আর এ কারণে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না দলটি।
রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে, শূন্যতা তৈরি হবে। তাই তারা চায় সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দিক থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবি ওঠার পর বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
দেখা করার পর তাদের পক্ষে নজরুল ইসলাম খান বৈঠক সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, দেশে যাতে নতুন করে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি না হয় সেজন্য খেয়াল রাখতে বলেছি। আমরা কোনো সাংবিধানিক সংকট চাই না। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা যদি কোনো সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট তৈরির চেষ্টা করে, তাহলে আমরা গণতন্ত্রকামীরা তা প্রতিহত করবো।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বিএনপির চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আরেক ব্রিফিংয়ে বলেন, রাষ্ট্রপতির পদে শূন্যতা এই মূহুর্তে রাষ্ট্রীয় সংকট সৃষ্টি করবে। সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি করবে। যেটা জাতির কাম্য নয়৷ এই সংকটের কারণে যদি জাতির গণতন্ত্রে উত্তরণ বিলম্বিত হয় বা বাধাগ্রস্ত হয়, সেটা জাতির কাম্য নয়।
বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ প্রসঙ্গে একটি পত্রিকায় রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে যে বিতর্ক হয়েছে তা একটি সেটেলড ম্যাটার। বঙ্গভবন থেকে বিবৃতি দিয়েও তা বলা হয়েছে। তারপর এটা নিয়ে আর বিতর্ক থাকে না। সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্সে তার পদত্যাগের কথা বলা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে বলেছেন।
আমরা মনে করি, রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে সাংবিধানিক শূন্যতা ও রাষ্ট্রীয় সংকট তৈরি হলে তৃতীয় পক্ষ বা অন্য কোনো পক্ষের দুরভিসন্ধি কাজ করবে কিনা। সেইরকম রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক সংকটের মুখোমুখি আমরা হতে চাই না। আমরা চাই গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে অন্য কোনো কিছু যেন বাধা না হয়। আমরা চাই গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং নির্বাচন, এর মাঝে আর কোনো কিছু যেন বাধা না হয়। এটা জাতির জন্য কল্যাণকর হবে না।
আর ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আর সব অপকর্ম বাদ দিলেও ছাত্রলীগ জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর সশস্ত্র আক্রমণ করেছে, ভারি অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করেছে। আর আওয়ামী লীগ শাসনামলে ছাত্রলীগ ছিল একটা আতঙ্কের নাম। ছাত্র-জনতার দাবি ছিল তাদের নিষিদ্ধ করার। সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার সঙ্গে আমরা একমত।
আওয়ামী লীগ প্রশ্নে তিনি বলেন, অন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের গণহত্যার বিচার শুরু হয়েছে। আইনেও কিছু সংশোধন আসবে৷ সেখানে দলেরও বিচার হবে। দল নিষিদ্ধেরও বিষয় থাকবে কিনা সেটা বিচার শেষ হলে দেখা যাবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি হারুনুর রশীদ বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে স্বপদে বাহাল রাখায় কোনো সংকট দেখছি না। বরং আমার দল মনে করে, তিনি পদত্যাগ করলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে। কারণ, স্পিকার পদত্যাগ করেছেন। ডেপুটি স্পিকার কারাগারে। সংসদ নেই। তাহলে তিনি কোথায় পদত্যাগ করবেন? তিনি পদত্যাগ করলে সংকট হবে।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি জাতীয় ঐক্য হয়েছে। এখন রাষ্ট্রপতির ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা সব রাজনৈতিক দলসহ সব পক্ষের সঙ্গে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই করতে হবে। এর বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না। আর এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি স্বেচ্ছায় সরে যেতে চাননি, বলেন তিনি।
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা বা না করা প্রসঙ্গে আমি কিছু বলবো না। তবে ১৫ বছর ধরে তারা হত্যাসহ যেসব অপরাধমূলক কাজ করেছে, আগে তার বিচার হওয়া দরকার। দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমাদের তিন সিনিয়র নেতা রাষ্ট্রপতির ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টাকে যে মতামত দিয়েছেন, সেটা আমাদের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের মতামত। আমার আলাদা কোনো মতামত নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বিএনপি নেতা বলেন, সাংবিধানিক সংকট তৈরি হলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে পারে। আর সেটা হলে নির্বাচন ও সংস্কার শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যেতে পারে। সাংবিধানিক সংকট হয়- এমন কোনো কাজের বিরোধী বিএনপি। তাই বিএনপি বর্তমান রাষ্ট্রপতিকেই তার পদে রাখতে চায়। সেটাই আমাদের জন্য নিরাপদ।
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার প্রায় তিন মাস পর বাংলাদেশের একটি পত্রিকায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেখ হাসিনার লিখিত পদত্যাগপত্র না পাওয়ার কথা বললে সোমবার আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে শপথ ভঙ্গের অভিযোগ তোলেন।
তারপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা রাষ্ট্রপতিকে ফ্যাসিবাদের দোসর বলে তার পদত্যাগ দাবি করেন। তার পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার বিকালে শহীদ মিনারে সমাবেশ ও বঙ্গভবন ঘেরাও করা হয়। রাষ্ট্রপতিকে পদ ছাড়তে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছিল তখন।
তবে বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, রাষ্ট্রপতির পদে মো. সাহাবুদ্দিনের থাকা না থাকার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৈঠকের পর বন, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
আরটিভি/এএইচ
অমুসলিমরাও জামায়াতের সদস্য হতে পারেন, যদি শপথ নেন ৪ বিষয়ে
রংপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পীরগাছা সদর ইউনিয়ন শাখায় হিন্দুদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাতে উপজেলা জামায়াতের অফিসে কমিটির নাম ঘোষণা করেন ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আব্দুর জব্বার। বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলে পীরগাছা উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোস্তাক আহমেদ জানান, রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অমুসলিমদের নিয়ে দল থেকে এখনও কোনো কমিটি করা হয়নি। সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘অমুসলিম নাগরিক সেবা কমিটি’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে দলটির কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবেন যে কেউ। এমনকি অমুসলিমদের ক্ষেত্রেও দলভুক্ত হতে বাধা নেই, যদি তারা দলের গঠনতন্ত্রের চারটি বিষয়ে একমত হয়ে শপথ নেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যারা একনিষ্ঠভাবে কাজ করবে, জামায়াতের নিয়ম শৃঙ্খলা এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নে যারা গুরুত্ব প্রদান করবে তারা অমুসলিম হলেও জামায়াতের সদস্য হতে পারবেন।
তিনি বলেন, নাগরিক অধিকারের ক্ষেত্রে জামায়াত সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করে। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের একটি আদর্শিক অবস্থান রয়েছে। আদর্শিক অবস্থান ও নাগরিক অধিকার এক নয়। জামায়াত ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার হরণে বিশ্বাস করে না।
এছাড়াও বিষয়টি সংগঠনের গঠনতন্ত্রের পরিশিষ্ট-১১-এ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে বলেও জানান জামায়াতের কেন্দ্রীয় এ নেতা।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, চার বিষয়ে একমত হয়ে থাকলে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ যেকোনো ধর্মাবলম্বী মানুষই অমুসলিম শাখার অধীনে জামায়াতে দলভুক্ত হতে পারবেন। এজন্য চারটি বিষয়ে শপথ নিতে হবে তাদেরকে। সেগুলো হলো:
১. বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সদস্য বা সদস্যা হিসেবে জামায়াতের নিয়ম শৃঙ্খলা ও সিদ্ধান্তসমূহ নিষ্ঠার সঙ্গে মেনে চলতে হবে।
২. জামায়াতের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নকে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।
৩. বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য একনিষ্ঠভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে।
৪. উপার্জনে অবৈধ পন্থা অবলম্বন করা যাবে না।
আরটিভি/এসএইচএম/এআর
জাতীয় পার্টির একাংশের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধীদের বৈঠক
বিএনপির পর এবার জাতীয় পার্টির একাংশ (কাজী জাফর)-এর সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।
রোববার (২৭ অক্টোবর) জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি ও রাষ্ট্রপতির পদত্যাগসহ রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য বৈঠকে বসেছে সংগঠন দুটির নেতাকর্মীরা।
এর আগে, শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেল রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণ ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে বসে সংগঠন দুটি।
বৈঠক শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রথমত, প্রক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক কীভাবে করা যায়, সেটি নিয়ে কথা বলেছি। দ্বিতীয়ত, চুপ্পুর অপসারণ দ্রুততম সময়ে কীভাবে করা যায়, রাজনৈতিক চেতনা কীভাবে তৈরি করা যায়, যেকোনো ধরনের সংকট কীভাবে পরিহার করা যায়, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তৃতীয়ত, জাতীয় ঐক্য কীভাবে ধরে রেখে সরকারের সার্বিক ফাংশনিংয়ের ধারবাহিকতা অব্যাহত রাখা যায়, সেই বিষয়ে কথা বলেছি।’
আরটিভি/এসএপি-টি
পটুয়াখালী-৩ আসনে নুরকে সহযোগিতার নির্দেশ বিএনপির
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে তার নিজ সংসদীয় এলাকা পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে জনসংযোগ ও দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে বিএনপি তাদের স্থানীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিএনপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়; যা আজ সোমবার (২৮ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
চিঠিতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুর রশিদ চুন্নু ও সদস্য সচিব স্নেহাংশ সরকার কুট্টিকে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, গত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তাই তার সংসদীয় এলাকা পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা ও দশমিনা) আসনে জনসংযোগ ও তার দলের সাংগঠনিক সার্বিক কার্যক্রমে সহযোগিতা করার জন্য আপনাদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় এলাকার থানা, উপজেলা বা পৌরসভায় বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করতে আপনাদের অনুরোধ করা হচ্ছে। এই আদেশ অতীব জরুরি।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি চিঠি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনা পেয়েছি। ইতোমধ্যে ওই আসনের সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীদের অবহিত করা হয়েছে।
এদিকে, পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে শক্ত অবস্থানে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. হাসান মামুন। তবে নুরুল হক নুরের বাড়িও এ আসনে হওয়ায় আগামী সংসদ নির্বাচনে হাসান মামুন ও নুরের মধ্যে হবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ধারণা করা হচ্ছে, বিএনপির সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের জোট হলে এ আসনে জোটের মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে পারেন নুর। সে কারণে স্থানীয় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে যাতে বিরোধ সৃষ্টি না হয়, সেজন্য কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চিঠি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হাসান মামুন বলেন, এই চিঠির সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন কর্মসূচিতে গেলে কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোক তাকে বাধাগ্রস্ত করে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে উলানিয়ায় তার ওপর হামলা হয়েছিল। পুনরায় যাতে কেউ এ রকম ঘটনা না ঘটাতে পারে, সেই লক্ষ্যেই মূলত বিএনপির সহযোগিতা করার নির্দেশ। এটা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এ বিষয় জানতে চাইলে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর গণমাধ্যমকে বলেন, গণঅধিকার পরিষদ শুরু থেকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছিল। পাশাপাশি বিগত দিনগুলোতে আমরা বিএনপিসহ ৪১টি দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করেছি। তবে সম্প্রতি স্থানীয় পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে কিছুটা সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সে কারণে বিএনপির পক্ষ থেকে এ ধরনের একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আরটিভি/আইএম-টি
অমুসলিম শাখার কমিটি নিয়ে অপপ্রচার, সতর্ক করল জামায়াত
জামায়াতে ইসলামীর ভুয়া প্যাড তৈরি, রাজনৈতিক দলটির আমির ও সেক্রেটারি জেনারেলের নামে ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য প্রচারে সতর্কতার পাশাপাশি এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, কেন্দ্রীয় অমুসলিম শাখার কমিটি শিরোনামে বিভিন্ন পদ উল্লেখ করে নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো প্রচারিত তথ্যটিতে যে প্যাড ব্যবহার করা হয়েছে, তা জামায়াতে ইসলামীর প্যাড নয় এবং তথ্যটিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সেক্রেটারি জেনারেলের নামে যে স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে, তা ভুয়া ও মিথ্যা।
এতে আরও বলা হয়েছে, ভুয়া প্যাড এবং আমিরে জামায়াত ও সেক্রেটারি জেনারেলের স্বাক্ষরের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। বিভিন্ন পদ উল্লেখ করে যে কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে তাও সঠিক নয়। জামায়াতে ইসলামীর ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন করার এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির হীন উদ্দেশ্যেই একটি কুচক্রী মহল জামায়াতে ইসলামীর নামে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্যটি প্রচার করেছে।
বিবৃতিতে মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সব কর্মকাণ্ড প্রকাশ্য। জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে দেশের জনগণের ধারণা সুস্পষ্ট। তাই ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। আমি এ ধরনের ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করা থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
আরটিভি/এসএপি
যে আসন থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিলেন নুরুল হক
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর নিজ এলাকা পটুয়াখালী-৩ আসন (গলাচিপা ও দশমিনা) থেকে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ ঘোষণা দেন তিনি।
ভিপি নুরু বলেন, অনেকে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন ভিপি নুর ঢাকা থেকে নির্বাচন করবেন। সে (ভিপি নুর নিজে) সারা বাংলাদেশ থেকেই নির্বাচন করতে পারে। কিন্তু মা-মাটিকে তো ভুলে যাওয়া যায় না। এই চরের কাদামাটি, নদীর পানি গায়ে মেখে বড় হয়েছি। এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাই কী করে? আপনারা যদি সমর্থন করেন, তাহলে পটুয়াখালী-৩ থেকেই নির্বাচন করবো।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতন হলেও কেউ কেউ খেয়াঘাট-ফেরিঘাট-লঞ্চঘাট ও বাস স্ট্যান্ড দখলবাজি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি শুরু করেছে। এই দখলবাজ-চাঁদাবাজ-টেন্ডারবাজ মাফিয়াদের প্রতিষ্ঠিত হতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে আওয়ামী লীগকে যেভাবে হটিয়েছি তেমনিভাবে এদেরকেও হটাতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘জুলুম-অবিচার করবেন না। জুলুমকারী, অত্যাচারকারীদেরকে আল্লাহ্ ছাড় দেয়, ছেড়ে দেয় না। সব থেকে বড় উদাহরণ শেখ হাসিনা। অত্যাচার, নির্যাতন, দাম্ভিকতার কারণে হাসিনার নিষ্ঠুর পতন হয়েছে। পালাবার সময় জুতা, কাপড় চোপড়াসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রটুকুও নিতে পারেননি, এক কাপড়ে হেলিকপ্টারে পালিয়ে গেছেন।
সকল রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ্য করে ভিপি নূর বলেন, শেখ হাসিনার মতো কাজ করিয়েন না। যাতে শেখ হাসিনার মতো পালিয়ে যেতে না হয়। গলাচিপা-দশমিনায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত, চরমোনাই বলে কিছু নেই। আমরা সকলে মিলেমিশে থাকবো। বিপদে পড়লে একে অপরের পাশে দাঁড়াবো।
প্রশাসনের উদ্দেশ্যে ভিপি নুর বলেন, আওয়ামী লীগ যেভাবে দলীয়করণ করেছিল, বিশেষ কোনো দলের প্রতি তেমনি পিরিত দেখাতে যাবেন না। কোনো দলের সঙ্গে বৈষম্য আচরণ করবেন না। এ প্রথাগত রাজনীতি ভাঙতে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন। সকলকে ইতিবাচক কার্যক্রমের মানসিকতার হতে হবে।
গলাচিপা উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মো. হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির উচ্চতর পরিষদ সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম ফাহিম, সহসভাপতি আবু হানিফ হৃদয়, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো. রবিউল ইসলাম, আনিসুর রহমান মুন্না, প্রচার সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ইউছুফ কাজী, ঢাকা মহানগর (উত্তর) সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, চট্টগ্রাম মহানগর যুব অধিকার পরিষদের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর যুব অধিকার পরিষদের নেতা মো. শামীম গাজী।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের জেলা আহ্বায়ক সৈয়দ নজরুল ইসলাম লিটু, সদস্য সচিব মো. শাহ আলম সিকদারসহ দলের স্থানীয় নেতারা। এ ছাড়াও বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন, গলাচিপার চর বিশ্বাস এলাকার মো. ইদ্রিস হাওলাদার ও মো. হাতেম মাস্টার, গলাচিপা পৌর শহরের মো. রেজাউল হাওলাদার, গোলখালীর ডা. অনুতোষ দাস। জনসভা শেষে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব তথা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিহত গলাচিপা উপজেলার পাঁচ শহীদ পরিবারকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
আরটিভি/এএএ/এসএ
টানা ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি টানা ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ৭ নভেম্বরের ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে এই কর্মসূচি ঘোষণা দেয় দলটি।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এর আগে, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে তিনি জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ৭ নভেম্বরের সঠিক ইতিহাস জনগণের সামনে নিয়ে আসতে হবে। যারা গত ১৫ বছরে বিকৃত ইতিহাস পেয়েছে তাদের সামনে সেই সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্যই এবার আমরা এই দিনটি গুরুত্বসহকারে পালন করব।
এ সময় তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে দেশ আংশিক ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে, পুরোপুরি ফ্যাসিবাদ মুক্ত হতে সুষ্ঠু নির্বাচন জরুরি।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর সংঘটিত সিপাহী-জনতা বিপ্লবের স্মরণে দিনটিকে মূলত জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কর্নেল (অব.) আবু তাহেরের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থান জেনারেল খালেদ মোশাররফের ৩ দিনব্যাপী সামরিক অভ্যুত্থানের পতন ঘটায়। এই বিপ্লবের ফলশ্রুতিতে জেনারেল জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান, এবং পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসেন।
আরটিভি/একে-টি