বিসিবিতে দুদকের তদন্ত শেষে যা জানা গেলো 

ক্রীড়া প্রতিবেদক, আরটিভি নিউজ

শনিবার, ১৭ মে ২০২৫ , ০৬:৪৭ পিএম


দুদক
ছবি: সংগৃহীত

আর্থিক দুর্নীতিসহ বেশ কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত মাসে বিসিবিতে অভিযান চালিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই ধারাবাহিকতায় আজ আবারও তদন্তের জন্য বিসিবিতে আসে দুদক। প্রাথমিক তদন্ত শেষে তৃতীয় বিভাগ লিগের বাছাইয়ে অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে দুদক।  

বিজ্ঞাপন

শনিবার(১৭মে) দুপুর ১টার দিকে মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে প্রবেশ করে দুদক। এবার বিসিবিতে চার সদস্যের দুদকের দল আসে। এবারের অভিযোগ ছিল নতুন গঠনতন্ত্র, তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটের বাছাইপর্ব এবং আর্থিক অনিয়ম। প্রাথমিক তদন্ত শেষে তৃতীয় বিভাগ লিগের বাছাইয়ে অনিয়ম খুঁজে পায় দুদক।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যে প্রক্রিয়া মেনে বিসিবি চলার কথা সেখানেও অসঙ্গতি পেয়েছে দুদক। তবে আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাচ্ছে না দুদক। বিসিবির সকল প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা নিয়ে তদন্ত করা হবে জানিয়েছেন দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ। 

বিজ্ঞাপন

তদন্ত শেষে দুদক সহ-পরিচালক রাজু বলেন, 'অভিযানের বিষয় ছিল তৃতীয় বিভাগের বাছাই প্রক্রিয়া, নতুন গঠনতন্ত্র এবং অন্যান্য বিভিন্ন আর্থিক অভিযোগ নিয়ে আমরা এখানে আসছি। সেই অভিযোগের আলোকে আমরা নথিপত্র সংগ্রহ করে সকাল থেকে সেগুলো পর্যালোচনা করলাম। আমরা সবার সঙ্গে কথা বললাম। আমরা সব কাজ এখনও শেষ করতে পারিনি। কিছু কাজ এখনও বাকি আছে।'

তদন্তের প্রাথমিক অবস্থায় কোনো অসঙ্গতি পাওয়া গেছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটের যে বাছাই প্রক্রিয়া সেটা একসময় ছিল বেশ সহজ প্রক্রিয়া। কিন্তু পরবর্তীতে ২০২২ সালের পর কিছু প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়, সেখানে ২-৩টার বেশি দল অংশগ্রহণ করতে পারে না। সেক্ষেত্রে এটা অনেক কম প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়ে যাচ্ছে। তাতে আমাদের জাতীয় দলের জন্য ভালো খেলোয়াড় তৈরির পাইপলাইনটা খুবই সীমিত হয়ে যায়। এই বিষয়টাকেই আমরা ফোকাস করেছি।’ 

তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটের বাছাই নিয়ে দুদক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা দেখেছি এখানে এমন কিছু শর্তাদি দেয়া হয় যেটা আমাদের দেশের ক্লাবগুলোর জন্য, আমাদের দেশের যে অর্থনৈতিক অবস্থা,  বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অনেক খেলোয়াড় উঠে আসে তাদেরকে সহযোগিতা করার যে পথ সেগুলো রুদ্ধ করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

বিসিবির গঠনতন্ত্রে অনিয়ম প্রসঙ্গে দুদক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিসিবি যে গঠিত হয়েছে, এটা একটা গঠনতন্ত্রের আলোকে পরিচালিত হয় সেই গঠনতন্ত্র কতটা বৈধ এবং সিদ্ধ সেটা আমরা পর্যালোচনা করেছি। আমাদের কাছে অভিযোগ আছে গঠনতন্ত্রে৷ কিছু অসঙ্গতি আছে। এখানে গঠনতন্ত্র নিয়ে প্রশ্নগুলো উঠেছে, সেখানে আদালতের একটা রায় ছিল। সেই রায় অনুযায়ী গঠনতন্ত্র সংশোধিত হয়ে বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে। গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা শেষে আমরা একটা বিষয় খেয়াল করেছি, একটা অর্গানাইজড উপায়ে পরিচালিত হওয়ার কথা ছিল বিসিবি। কিন্তু এই জায়গাতে আমরা অসঙ্গতি পেয়েছি।’ 

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে সঠিক চাকরি বিধিমালা নেই। একটা প্রতিষ্ঠান যেভাবে সুগঠিত থাকার কথা সেটা এখানে নেই। এই বিষয়টা আমরা আরো পর্যালোচনা করতে চাই। এটা নিয়ে আদতে কোনো কাজ করা হয়েছে কিনা ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা কী, বিগত সময়ে কেন এটা ঠিক করা হয়নি সেই বিষয়গুলো আমরা খুঁজে বের করব। এগুলোর আলোকে আমরা একটা রিপোর্ট করব। সেই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে কমিশন যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেই সিদ্ধান্তের আলোকে পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হবে।’ 

আরও পড়ুন

এর আগে, গঠনতন্ত্রের অনিয়ম, বর্তমান বোর্ডের বৈধতা, সাবেক বোর্ড সভাপতির সময়কালে তৃতীয় বিভাগ বাছাইপর্বের অনিয়ম-দুর্নীতি, বর্তমান বোর্ড সভাপতি অর্থাৎ ফারুক আহমেদের বিরদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করবে বলে জানা গেছে। দুদকের কর্মকর্তারা বিসিবিতে উপস্থিত হওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যেই সেখানে হাজির হন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।

গত মাসে বিপিএলের টিকিট বিক্রি এবং আর্থিক দুর্নীতিসহ তিনটি অভিযোগের তদন্ত করতে বিসিবিতে এসেছিল দুদক। সেবার তদন্ত শেষে বড়সড় অঙ্কের আর্থিক গড়মিলের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছিল দুদক।


আরটিভি/এসকে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission