ঢাকাশুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা

মিথুন চৌধুরী

শুক্রবার, ০৮ জুন ২০১৮ , ০৯:৩২ পিএম


loading/img

আজ ২২ রমজান শুক্রবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিন। দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর। শেষ মুহূর্তে ঈদের কেনাকাটায় নগরীর অভিজাত শপিংমল থেকে শুরু করে ফুটপাতেও এখন ক্রেতার উপচেপড়া ভিড়। দুহাতে ভরা শপিং ব্যাগ। পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের চাহিদা মেটাতে পছন্দের পোশাকের খোঁজে তারা ছুটে বেড়াচ্ছেন এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে। রাজধানীসহ পুরো দেশ পরিণত হয়েছে কেনাকাটার মহোৎসবে। সকাল থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে এ কেনাবেচা।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার দুপুরে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের সামনেও দেখা গেল গাড়ির দীর্ঘ সারি। বেশিরভাগই ক্রেতা। কেউ কিনে বের হচ্ছেন আর কেউ কিনতে ঢুকছেন। ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মানুষদের কারণে এসব এলাকাতে যানজট চোখে পড়েছে। পোশাক, প্রসাধনী, জুতা, টুপি, ভোগ্যপণ্য সব কিছুই কেনাকাটা চলছে ঈদ মার্কেটে।

বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের শপিং মলের লেভেল ৭-এর অবস্থিত দেশী দশ। এখানে একই ছাদের নিচে দেশি দশটি ফ্যাশন হাউসের দোকান। এছাড়া প্রতিটি দোকানে পাঞ্জাবি, শাড়ি, শার্ট, ছোটদের পোশাকসহ নানান পোশাক বিক্রি হচ্ছে। মানুষের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। তুলনামূলক সবচেয়ে বেশি ভিড় শাড়ি ও থ্রি পিসের দোকানে।

বিজ্ঞাপন

ভারতীয় চলচ্চিত্র ও সিরিয়ালের নামে এবারও মেয়েদের পোশাক নিয়ে মাতামাতি চলছে ঈদ বাজারে। ক্রেতারাও খুঁজে ফিরছেন এসব ড্রেস। এছাড়া দেশী কাপড় ও ডিজাইনারদের তৈরি পোশাকের বুটিক হাউসগুলোতে ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে। পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, শার্ট ও জিন্স প্যান্টের দোকানেও বেশ ভিড়। পা ফেলার জায়গা নেই শিশুদের পোশাক ও খেলনা সামগ্রী, কসমেটিক্স ও গহনার দোকানেও। ভিড় বাড়ছে জুতোর দোকানে। বাদ নেই ইলেকট্রনিক্স দোকানও। টেইলারিং শপগুলোর রাত-দিন এখন আলাদা করে দেখার উপায় নেই।

বিক্রেতারা বলছেন, শুরুতে দর্শনার্থী ছিল বেশি কিন্তু এখন যারা আসছেন তারা কিছু না কিছু নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। আজ সাপ্তাহিক ছুটি তার উপর শেষ সপ্তাহের ছুটির দিন। তাই যারা বাড়িতে ঈদ করতে যাবেন তারাই বেশি ভিড় জমাচ্ছেন।

বসুন্ধরা সিটিতে কথা হয় ধানমন্ডির বাসিন্দা একটি প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরি কারখানায় কর্মরত মো. কামাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আজ সাপ্তাহিক ছুটি। ঈদের বেশি দিন বাকি নেই। শেষ সময়ে ভিড় আরও বেশি থাকে। তাই পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছি। পরিবারের সবার জন্যই কিছু না কিছু কিনছি।

বিজ্ঞাপন

বসুন্ধরা সিটির কেয়া ফ্যাশনের বিক্রয়কর্মী রুহুল আমিন বলেন, এখন মূলত ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও ঢাকার আশপাশের জেলার বাসিন্দারা কেনাকাটা করছেন।

বসুন্ধরার নিচতলায় জিমি ফ্যাশন থেকে একটি ড্রেস কিনেছেন ফার্মগেট এলাকার বাসিন্দা সনিয়া খন্দকার। তিনি বলেন,  গতবারের তুলনায় এবার মেয়েদের ড্রেসের দাম অনেক বেশি।

রাজধানী বাসাবো এলাকা থেকে এসেছেন তিন ভাই আশিক, আতিক ও আরমান। বড় ভাই আশিক জানালেন, তিনি একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় চাকরি করেন। শুক্রবার ছাড়া কেনাকাটা করতে বের হওয়া মুশকিল। গতকাল বৃহস্পতিবার বেতন ও বোনাস হয়েছে। এ কারণে আজ ছুটির দিনে ছোট দুই ভাইকে নিয়ে এসেছেন কাপড় কিনতে।

বসুন্ধরার দিয়া ফ্যাশনের মালিক সমীর আহম্মদ বললেন, দুপুরে জুমার পর থেকে দোকানে ক্রেতার চাপ হঠাৎ করে বেড়ে যায়। এসি থাকা সত্ত্বেও দোকানে প্রচণ্ড গরম। এখন বেশি দাম না চেয়ে কম লাভে এক দামে বিক্রি করছি আমরা।

এদিকে বসুন্ধরার সামনের রাস্তায় গতকাল প্রায় সারা দিনই যানবাহন আর মানুষের ভিড় ছিল। ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের রীতিমতো হিমশিম খেতে দেখা গেছে।

ঈদ সামনে রেখে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে চলছে মূল্যছাড়। ছাড় দেয়া হচ্ছে নানা ধরনের পোশাক ও ফ্যাশন অনুষঙ্গে। আবার কেনাকাটায় ক্রার্চকার্ডে দেয়া হচ্ছে হাজার টাকার পণ্যে নানান উপহার। সময়-সুযোগ, সামর্থ্য আর পছন্দের নানা সমীকরণ মেলাতে বেচাকেনার এ মহাযজ্ঞ চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত।

এমসি/পি

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |