হিরোইজম দেখাতে গিয়ে স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে হত্যা করে জিতু, জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
-
আরও পড়ুন... বাংলাদেশ একেবারে নিখুঁত নয় : মার্কিন রাষ্ট্রদূত
তিনি বলেন, বুধবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় র্যাব-১ এবং র্যাব-৪ এর যৌথ অভিযানে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জিতুকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিতু দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সে শিক্ষা জীবনে বিরতি দিয়ে প্রথমে স্কুল, পরে মাদরাসা ও সর্বশেষ পুনরায় স্কুলে ভর্তি হয়। স্কুলে সবার কাছে একজন উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র হিসেবেই পরিচিত ছিল সে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, সহপাঠীদের সঙ্গে প্রায়ই সে মারামারি করত এবং ছাত্রীদের ইভটিজিং করত। স্কুল প্রাঙ্গণে সবার সামনে ধুমপান, স্কুল ইউনিফর্ম ব্যতিত স্কুলে আসা-যাওয়া, মোটরসাইকেল নিয়ে বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করত। স্কুলের পরিবেশ নষ্টের জন্য তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
মঈন আরও বলেন, তার নেতৃত্বে এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠে । বিভিন্ন সময় গ্যাং সদস্যদের নিয়ে মাইক্রোবাসে করে যত্রতত্র আধিপত্য বিস্তার করত। পরিবারের কাছে তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে জিতু তার গ্যাং সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হতো ও বিভিন্ন সময় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে হামলা ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে শোডাউন দিত।
-
আরও পড়ুন... শুরু হচ্ছে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি
জিতু এলাকার কিশোরদের কাছে ‘দাদা’ হিসেবে পরিচিত ছিল।
র্যাব জানায়, স্কুলের এক ছাত্রীর সঙ্গে জিতু অযাচিতভাবে ঘোরাফেরা করলে বিষয়টি শিক্ষক উৎপলের নজরে আসে। তিনি জিতুকে বারণ করলে সে শিক্ষকের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়। ওই ছাত্রীর কাছে নিজের হিরোইজম প্রদর্শন করার জন্য পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৫ জুন একটি ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প স্কুলে নিয়ে আসে এবং তা শ্রেণিকক্ষের পেছনে লুকিয়ে রাখে। পরবর্তীতে কলেজ মাঠে ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালীন মাঠের এক কোণে শিক্ষক উৎপল কুমারকে একা পেয়ে স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক আঘাত করতে থাকে। জিতু শিক্ষককে প্রথমে পেছন থেকে মাথায় আঘাত করে এবং পরবর্তীতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতরভাবে জখম করে।
এরপর ২৭ জুন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার।
এ ঘটনায় ২৬ জুন উৎপলের ভাই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় জিতুকে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়াও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা পরিচয়ে আসামি করা হয়।
মামলার পর মঙ্গলবার (২৯ জুন) রাতে কুষ্টিয়া থেকে অভিযুক্ত জিতুর বাবা উজ্জ্বল হোসেনকে আটক করে পুলিশ। ওই রাতেই তাকে আশুলিয়া থানায় আনা হয়। এরপর তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।