কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আজই লিভ টু আপিল

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪ , ১১:১২ এএম


কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আজই লিভ টু আপিল
ফাইল ছবি।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়েরের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৫ জুলাই) আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল দায়ের করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।

এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, লিভ টু আপিল দায়েরের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আজ লিভ টু আপিল দায়ের করা হবে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৪ জুলাই) প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করা হয়েছে।

বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করেন।

রায়ে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে করা এক রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় ও আদেশ, ২০১৩ সালের লিভ টু আপিলের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের তা বহাল ও সংশোধিত আদেশ এবং ২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারির অফিস আদেশের (মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনির কোটা) আলোকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা পুনর্বহাল করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হলো। একই সঙ্গে জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, উপজাতি-ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটাসহ, যদি অন্যান্য থাকে, কোটা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হলো। এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব, আদেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে পরিপত্র জারি করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।

বিজ্ঞাপন

রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, প্রয়োজনে উল্লিখিত শ্রেণির ক্ষেত্রে কোটা পরিবর্তন ও হার কমানো বা বাড়ানোর বিষয়ে এ রায় বিবাদীদের জন্য কোনো বাধা তৈরি করবে না। যেকোনো পাবলিক পরীক্ষায় কোটা পূরণ না হলে সাধারণ মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদ পূরণ করায় সরকারের স্বাধীনতা রয়েছে।

২৭ পৃষ্ঠার রায়ে রিট আবেদনকারী পক্ষের যুক্তি, ইতিহাস পর্যালোচনা তুলে ধরে বলা হয়েছে, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর বিপুল সংখ্যক মেধাবী ও যোগ্য মুক্তিযোদ্ধাদের দৃশ্যপটের আড়ালে ঠেলে দেওয়া হয়। এমনকি মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অবদান রাখা মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সন্তানদের একটি অংশ যোগ্য-মেধাবী হওয়ার পরও প্রজাতন্ত্রের পরিষেবাগুলোতে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়নি।

রিটকারী পক্ষের এ যুক্তিতে বিবাদীদের কোনো বিরোধিতা ছিল না উল্লেখ করে রায়ে আরও বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের জাতির গর্ব। সুতরাং আমরা মনে করি যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ২১ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিরা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন; যা দেশের নাগরিকদের মধ্যে তাদের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অংশে পরিণত করেছে।

সেখানে আরও বলা হয়, এ কথা ঠিক যে, দেশের কিছু জেলা-উপজেলা বেশি উন্নত এবং এসব জেলা-উপজেলার নাগরিকরা বেশি সুবিধা ভোগ করেন। নারী, প্রতিবন্ধী, উপজাতি, ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মানুষরা এখানও অনগ্রসর অংশ। মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিরাও এই অনগ্রসর অংশে বিবেচনায় আসতে পারে। যদিও তাদের অনগ্রসর হিসেবে বিবেচনায় (২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্রে) নেওয়া হয়নি। তাই সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনগ্রসর অংশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেন বিবাদীরা।

হাইকোর্ট ২০১৩ সালের আপিল বিভাগের রায় তুলে ধরে রায়ে বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা সুরক্ষিত ছিল। যেহেতু আপিল বিভাগ ইতোমধ্যে (২০১৩ সালে দেওয়া রায়ে) বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছেন। সংবিধানের ১১১ ও ১১২ অনুচ্ছেদ অনুসারে আপিল বিভাগের সেই সিদ্ধান্ত হাইকোর্টসহ রাষ্ট্রযন্ত্রের সব কর্তৃপক্ষের জন্য বাধ্যতামূলক এবং তা না মানা সংবিধানের লঙ্ঘন।

রায় প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান বলেন, আপিল বিভাগ কোটার বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন। আগামী ৭ আগস্ট শুনানির দিন রেখেছেন। ফলে আপাতত হাইকোর্টের রায় কার্যকর হবে না।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission