চারদিন ধরে সীমান্তের শূন্যরেখায় ভারতীয় ৩১ রোহিঙ্গা শরণার্থী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কাজিয়াতলী সীমান্তের শূন্য রেখায় চারদিন ধরে অবস্থান করছে ভারতীয় ৩১ রোহিঙ্গা শরণার্থী। সবশেষ ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাদেরকে সেখানে তাঁবু টাঙিয়ে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে একাধিক বৈঠক হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।
৩১ সদস্যের এই রোহিঙ্গা দলটিতে ১৭ জন শিশু, ছয় জন নারী ও আটজন পুরুষ রয়েছেন। প্রচণ্ড শীত ও ঘন কুয়াশার মধ্যে দুই দেশের শূন্য রেখায় ধানের জমিতে মানবেতর দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ১৮ জানুয়ারি (শুক্রবার) রাত সাড়ে আটটার দিকে বিএসএফ গেট খুলে নারী-পুরুষ-শিশুসহ ৩১ জনের একটি দলকে বাংলাদেশে পুশইন এর চেষ্টা করে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বিজিবির বাধার কারণে তারা প্রবেশ করতে পারেনি। এরপর থেকে তারা শূন্য রেখার ভারতীয় অংশে অবস্থান করছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তাদের সেখানে তাঁবু টাঙিয়ে দেওয়া হয়। সোমবার বিএসএফের পক্ষ থেকে শূন্যরেখার ভারতীয় অংশে আশ্রিতদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
এদিকে বিজিবি-বিএসএফ একাধিকবার এ বিষয়ে বৈঠক করলেও এই রোহিঙ্গারা কোন দেশের শরণার্থী সেই প্রশ্নে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। যদিও রোহিঙ্গা দলটির কাছে ভারতীয় শরণার্থীর পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে।
আশ্রয় নেয়া লোকদের কাছ থেকে ইউএনএইচআরসি কর্তৃক প্রদত্ত রিফিউজি কার্ড, রিফিউজি সার্টিফিকেট, জম্মু-কাশ্মীর ইন্টিগ্রেডেট চাইল্ড ডেভেলভমেন্ট ন্যাশনাল হেলথ মিশন জম্মু এন্ড কাশ্মিরের হেলথ কার্ড সংগ্রহ করা হয়েছে। যেসব কার্ডের মেয়াদ আরও পাঁচ-ছয় মাস রয়েছে। এসব কার্ডে লেখা রয়েছে জোরপূর্বক তাদের দেশ থেকে বের করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন অনুযায়ী, কোনও দেশের শূন্যরেখায় অনুপ্রবেশকারী পাওয়া গেলে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তাকে সোপর্দ করা হয় এবং আইন অনুযায়ী বিচার করা হয়। তবে এই রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে ভারতীয় সেনারা ভারতের সীমান্ত বাহিনী সে আইনের প্রয়োগ না করে বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করছে।
কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম মান্নান জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএসএফ ৩১ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে কাঁটাতারের বেড়া পার করে এনে কাজিয়াতলী সীমান্ত এলাকার ২০২৯/৩/এস পিলারের সামনে তাদের জড়ো করে রাখে। ওই জায়গাটি দুই দেশের সীমান্তের শূন্যরেখা। রোহিঙ্গারা যেন ঢুকতে না পারে সেজন্য বিজিবির সাথে আমরাও সতর্ক রয়েছি।
২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. শফিক জানান, আমাদের হিসাব মতে এরা ভারতীয় নাগরিক। রোহিঙ্গা বা অন্য কিছু কিনা সেটা আমরা এখনও নিশ্চিত নই।
আরো পড়ুন:
পি
মন্তব্য করুন