‘ইসলামে জঙ্গিবাদের কোনও সুযোগ নেই’
‘জাগো তারুণ্য রুখো জঙ্গিবাদ’ শিরোনামে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের নিয়মিত জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এবারের সেমিনারটি রাজধানীর বনানীর ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়াতে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের সাংসদ মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান এমপি, দৈনিক কালের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা কামাল ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি।
অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান বলেন, হিন্দু মৌলবাদ এবং মুসলিম মৌলবাদের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। ধর্মকে পুঁজি করে রাজনৈতিক উদ্দেশে তারা জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটায়। বাংলাদেশের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো জঙ্গিবাদের উসকানিদাতা। ইসলামে জঙ্গিবাদের কোনও সুযোগ নেই। ইসলামের যে শান্তি, মানবিকতা ও ঔদার্য তাতে আকৃষ্ট হয়ে আমাদের পূর্ব-পুরুষেরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কোনও ধরনের জঙ্গিবাদের সুযোগ সেখানে ছিল না। আমাদের নবীজী (সা.) এর মদিনা সনদের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সেখানে অন্য ধর্মের মানুষ কতো নিরাপদ ছিল। আজকে কারা ধর্মীয় উগ্রবাদ তৈরি করতে চাচ্ছে তা তরুণদের বুঝতে হবে। পাশাপাশি জঙ্গিবাদকে রুখতে হবে তরুণদেরই। আমাদের দেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার আগেই জননেত্রী শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপের কারণে আজ বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের ভয়ঙ্কর থাবা থেকে রক্ষা পেয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।
সময়টা খুবই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল, শেখ হাসিনার জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টরারেন্স নীতি এই জাতিকে রক্ষা করেছে। কিন্তু আমাদের সচেতন থাকতে হবে সব সময়।
দৈনিক কালের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামাল শিক্ষার্থীদের বলেন, বাংলাদেশের মাটি জঙ্গিবাদের জন্য উর্বর নয়। এদেশে সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি আমরা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি। বাংলাদেশ একটি মানবিক রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রে জঙ্গিবাদের স্থান কোনোদিন হবে না। কিন্তু আন্তর্জাতিক শক্তি বসে নেই। তারা চায় ইসলামিক দেশগুলোকে জঙ্গিবাদের আখড়ায় পরিণত করতে। তাতে তাদের অর্থ ও সাম্রাজ্য বিস্তারের সুযোগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তরুণরাই শক্তি। আগামীতে তরুণরাই এদেশকে পুরোপুরি জঙ্গিবাদমুক্ত করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
অনুষ্ঠানের প্রায় শেষে এসে যোগ দেন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আমি বিশ্বাস করি সকল ধর্মে মানবতাবাদের কথা বলা হয়েছে। লোভ ও হিংসা থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে সব ধর্মেই। তাহলে সহজেই বোঝা যায়, ধর্মকে ব্যবহার করে যারা ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করে, মানুষ হত্যা করতে উসকে দেয়; তারা আর যাই হোক কোনোভাবেই ধার্মিক নয়।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এম. দিলদার হোসেন। তিনি শিক্ষার্থীদের ধর্ম সম্পর্কে জানার পরামর্শ এবং অ্যাকাডেমিক পড়াশুনার পাশাপাশি ধর্ম ও সাহিত্য চর্চায় আগ্রহী হতে বলেন। প্রত্যেকের জায়গা থেকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকার পরামর্শ দেন তিনি। এই আয়োজনের জন্য তিনি সুচিন্তা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানান।
সুচিন্তা’র গবেষণা সেলের পক্ষ থেকে আশরাফুল আলম শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে জঙ্গিবাদ সমর্থন-অসমর্থন বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আজ সারাবেলা’র সম্পাদক জব্বার হোসেন।
জেবি
মন্তব্য করুন