ঘুমন্ত স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে হাসপাতালে ভর্তি করালেন স্ত্রী
পুরান ঢাকার ওয়ারীতে ঘুমন্ত স্বামীর পুরুষাঙ্গ কাটার অভিযোগে স্ত্রী নার্গিসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আহত স্বামীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার (৩০ জুলাই) দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
-
আরও পড়ুন... যেসব জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস
রক্তাক্ত অবস্থায় স্ত্রী নার্গিসই স্বামীকে রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন বলে জানান ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া। তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে আহতের স্ত্রীকে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
নার্গিস পুলিশকে জানিয়েছেন, তার স্বামী নাইট গার্ডের কাজ করেন। ওয়ারীর ধোলাইখাল এলাকায় থাকেন। তাদের এক মেয়ে রয়েছে। তার স্বামী গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করছেন, তাই তিনি রেগে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। স্বামীর গ্রামের বাড়ি নড়াইল জেলার লোহাগড়ায়, আর স্ত্রীর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়।
-
আরও পড়ুন... রোববার কোথায় কখন লোডশেডিং (তালিকা)
মন্তব্য করুন
সাবেক পাটমন্ত্রীর স্ত্রী হাসিনা গাজীকে খুঁজছে পুলিশ
সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। এবার তার স্ত্রী হাসিনা গাজীকে খুঁজতে তার বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে ডিবি পুলিশ।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) গভীর রাতে গোলাম দস্তগীরের রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় এ তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে না পেয়ে হাসিনা গাজীর খোঁজে পরদিন রোববার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ।
অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক। তিনি রোববার রাতে বলেন, এখনো পর্যন্ত হাসিনা গাজীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
হাসিনা গাজীর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে এবং তার কাছে একাধিক অবৈধ অস্ত্র রয়েছে বলে জানান তিনি।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনি অর্থের জোগান দিয়েছেন। গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে তার হেফাজতে থাকা অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েক দিনের মধ্যে গোলাম দস্তগীর গাজী গ্রেপ্তার হন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। তার স্ত্রী হাসিনা গাজী আত্মগোপনে আছেন। দুই ছেলে আছেন বিদেশে।
অর্থপাচার এবং দুর্নীতির নানা অভিযোগে গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।
এদিকে, রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীরের বাসায় অভিযান নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটিতে লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে। রোববার (২৭ অক্টোবর) রাতে এ বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠতা ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, একটি সংবাদ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ডিবির নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে একটি টিম আইন ও বিধি অনুসরণ পূর্বক গোলাম দস্তগীরের বাসায় তল্লাশি চালানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে উক্ত বাসার দারোয়ান পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তায় উক্ত বাসা তল্লাশি অভিযান সমাপ্ত করে ডিবির টিম ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে ডিবি দাবি করে, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এজাহারনামীয় আসামি গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের অংশ হিসেবে উক্ত তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ডিবির উক্ত তল্লাশি অভিযান সম্পর্কে কোনো বিভ্রান্তির অবকাশ নেই বলে জানানো হয়। এতে বলা হয়, ভবিষ্যতে ডিবির যেকোনো অভিযানের সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অধিকতর বস্তুনিষ্ঠতা ও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করি।
আরটিভি/এআর
উপদেষ্টার সঙ্গে রাষ্ট্রপতির মিথ্যা ফোনালাপ তৈরি, যুবক গ্রেপ্তার
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে পাট ও বস্ত্র এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেনের একটি মিথ্যা ও বানোয়াট ফোনালাপ তৈরি ও প্রচারের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। তার নাম নাফিস ফুয়াদ ঈশান (২২)। এই ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রোববার (২৭ অক্টোবর) ভোরে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নাফিস ফুয়াদ কোয়ালিটি টিভি নামক অনলাইনভিত্তিক একটি ইউটিউব চ্যানেলের অ্যাডমিন। একই সঙ্গে কেস টিভি নামক ফেসবুক পেজেরও অ্যাডমিন তিনি।
গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, গ্রেপ্তার নাফিস ১৬ আগস্ট নাগরিক টিভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত অন্তর্বর্তী সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেনের সাক্ষাৎকারের অংশ বিশেষ কপি করে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে একটি মিথ্যা ও বানোয়াট ফোনালাপ তৈরি করেন। জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করার উদ্দেশ্যে নাফিস ভিডিওটি ২৪ অক্টোবর তার পরিচালিত কোয়ালিটি টিভি নামক ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করেন।
গ্রেপ্তার নাফিস ফুয়াদ ঈশানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি তার পরিচালিত কোয়ালিটি টিভির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা এবং বানোয়াট কনটেন্ট তৈরি করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে আসছিলেন।
উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার নাফিসের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরটিভি/এআর/এসএ
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের নাম ভাঙিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক আটক
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের নাম ভাঙিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া এক প্রতারককে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) একটি প্রেসে ফাউন্ডেশনের মানি রিসিট বই ছাপাতে গেলে সেখান থেকে তাকে আটক করা হয়। বিষয়টি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিশ্চিত করেছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
ওই প্রতারকের নাম মিজানুর রহমান তারেক। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার পূর্বনটেশ্বরে ইউনিয়নে।
ফেসবুকে পোস্টে বলা হয়, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের নাম ভাঙিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া এক প্রতারককে মামলা দিয়ে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একটি প্রেসে ফাউন্ডেশনের মানি রিসিট বুক ছাপাতে গেলে সেখান থেকে তাকে আটক করা হয়। মানি রিসিট ছাড়াও বেশ কয়েকটি ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্টের মাধ্যমে ২০১৯ সাল থেকে নিজেকে ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে সে প্রতারণা করে আসছিল। ধরা পড়ার পর তার মোবাইল চেক করলে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।
ফাউন্ডেশনের অনুদান-সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়ে পোস্টে আরও বলা হয়, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন অফিসের বাইরে মানি রিসিট দিয়ে কোনো অনুদান নেয় না।
সাবেক ভূমিমন্ত্রীর অর্থপাচার অনুসন্ধানে সিআইডি
সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-১৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচারের অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, লন্ডন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
জানা গেছে, ২০০৫ সালে সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে নাহার ম্যানেজমেন্ট ইনকর্পোরেটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন। ওই বছর থেকে বিভিন্ন সময়ে এই প্রতিষ্ঠানের নামে যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি ফ্ল্যাট কেনেন। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবসা করার জন্য দুবাইয়ে র্যাপিড র্যাপ্টর এফজিই এবং জেবা ট্রেডিং এফজিই নামে ২টি প্রতিষ্ঠান খোলেন। এ ছাড়া তার স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরীর নামে আল-বারশা সাউথ-থার্ড এলাকায় কিউ গার্ডেন্স ও বুটিক রেসিডেন্সে ২টি ফ্ল্যাট কেনেন, যার দাম ২২ লাখ ৫০ হাজার ৩০০ দিরহাম। ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং আরব আমিরাতে ৬২০টি বাড়ি কেনেন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৮ কোটি ডলার। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে তিনি ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নিজের ও স্ত্রী রুখমিলা জামানের নামে যুক্তরাজ্য ও দুবাইয়ে ৮টি প্রতিষ্ঠান খোলেন, যার স্থায়ী ও চলতি সম্পদের মূল্য ২১ কোটি ৭২ লাখ ৬০ হাজার ডলার।
অভিযোগ রয়েছে যে, বাংলাদেশ হতে পাচারকৃত অর্থ দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে এসব কোম্পানি খুলে বিনিয়োগ করেছেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত যে ২১টি প্রতিষ্ঠানকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে সেই তালিকায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী বা তার পরিবারের কারও নাম নেই। ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী যে সম্পদ বিবরণী জমা দেন, সেখানে তার বিদেশে থাকা সম্পদের কোনো তথ্য নেই। অর্থপাচার, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুসারে একটি সম্পৃক্ত অপরাধ বিধায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরটিভি/এআর/এসএ
অপরাধের সাম্রাজ্যে এখনও দাপুটে গোল্ডেন মনির
অপরাধের অন্ধকার জগতে অনেকটাই ভুলতে বসা এক নাম গোল্ডেন মনির। প্রকৃত নাম মনির হোসেন। গাউছিয়া মার্কেটের একজন সামান্য বিক্রয়কর্মী থেকে যিনি হয়ে উঠেছিলেন বাড্ডার মূর্তিমান আতঙ্ক। ২০২০ সালে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর প্রায় ৩ বছর জেল খেটে জামিনে বের হন রহস্যময় এ অপরাধী। কয়েকটি মামলায় খালাসও পেয়ে যান এর মধ্যে। তবে ৩ বছর জেল খেটেও অপরাধ জগতে তারা দাপট কমেনি সেই অর্থে। বরং নেমছেন সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়ার নতুন মিশনে।
সরকার পতনের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটেও থেমে নেই তার সেই মিশন। সমানতালে জারি আছে তার দুর্বৃত্তায়ন ও অপকর্ম। বিভিন্ন অপরাধকাণ্ডে কলকাঠি নেড়ে জানান দিচ্ছেন, তিনি আছেন এখনও।
অপরাধ জগতের রহস্যময় এক চরিত্র এই গোল্ডেন মনির। মূলত বিএনপি আমলে উত্থান হলেও দাপট দেখিয়ে গেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের এক যুগেও। দুই আমলেই মন্ত্রী-এমপিদের হাত করে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে বাগিয়েছেন রাজউকের ২০টি প্লট, গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ, বনেছেন স্বর্ণ চোরাচালানের জগতের মুকুটবিহীন সম্রাট। ক্যাসিনো আর হুন্ডি ব্যবসায়ও ছিল তার অবাধ বিচরণ। মনিরের সম্পদের পাহাড় গড়ায় সেই অর্থে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি আইন কিংবা প্রশাসন। এমনকি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনও তার সামনে দাঁড়িয়েছে খুবই সাধারণ বিষয় হয়ে। যে-ই ক্ষমতায় বসেছে, কিনে নিয়েছেন টাকা দিয়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, নব্বইয়ের দশকে নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কের সূত্র ধরেই মূলত উত্থান মনিরুল ইসলাম ওরফে গোল্ডেন মনিরের। পরবর্তীতে ২০০১ সালে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি ধূর্ত মনিরকে। আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন মন্ত্রীদের। পরবর্তীতে ওয়ান ইলেভেন এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারের আগমনেও এতটুকু দাপট কমেনি তার; বরং বেড়েছে। রাজার মতোই বিচরণ করে বেরিয়েছেন গণপূর্ত আর রাজউকে।
২০২০ সালের এক অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় মনিরের ২০২টি প্লট রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পূর্বাচলে ৭ কাঠা, বাড্ডায় ১৯২টি প্লট, নিকুঞ্জ-২ নম্বরের ৫ নম্বর সড়কে ৭০ কাঠার বিশাল প্লট, বাড্ডায় স্কুল, উত্তরায় জমজম টাওয়ারে অংশীদার, উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে নির্মাণাধীন সাফা টাওয়ার অন্যতম। এ ছাড়া বারিধারার প্রগতি সরণির জে ব্লকের ৭৪ নম্বরে রয়েছে গোল্ডেন মনিরের আলিশান অফিস। সোনা চোরাচালান, জমি দখল, হুন্ডি বাণিজ্য, সরকারি দপ্তরের সিল জাল করে অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন মনির।
২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর রাজউক থেকে ৭১টি প্লটের ফাইল বাসায় নিয়ে যান মনির। এ ঘটনায় রাজউকের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়। তবে মামলা হলেও রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রহমান ও সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিমন্ত্রীর প্রশ্রয়ে মনিরের বিরুদ্ধে করা মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি। তারা দুজন মনিরকে বাঁচাতে ছায়া দেন বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিনিময়ে মনিরের কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের অর্থসহ বিভিন্ন ধরনের উপঢৌকন বাগিয়ে নেন। গণপূর্ত ও রাজউকে মনিরের রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। বদলি, পদোন্নতিসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করত এ সিন্ডিকেট।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রহমানের বক্তব্য ছিল, আমি ২০১৯ সালের মে মাসে অবসরে গিয়েছি। প্লটের ফাইল চুরির ঘটনা তার পরে ঘটেছে। চেয়ারম্যান হিসেবে তার (গোল্ডেন মনির) সঙ্গে আমার সম্পর্ক থাকতেই পারে। তার মানে এই নয় যে, আমি তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সহায়তা দিয়েছি।
বিক্রয়কর্মী থেকে গোল্ডেন মনির: নব্বইয়ের দশকে গাউছিয়া মার্কেটে একটি কাপড়ের দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতেন মনির হোসেন। পরে তিনি রাজধানীর মৌচাকের একটি ক্রোকারিজের দোকানে কাজ শুরু করেন। তখন ‘লাগেজ পার্টি’র একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর মনিরও লাগেজ ব্যবসায় যুক্ত হন।
এই লাগেজ ব্যবসা করতে গিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী মুরগি মিলনের সঙ্গে পরিচয় হয়। চতুর মনির একটা সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী মুরগি মিলনের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেন, যে কারণে তাকে ক্যাশিয়ার হিসাবে নিয়োগ দেয়। শীর্ষ সন্ত্রাসী মুরগি মিলনের মৃত্যুর পর তার চোরাকারবারি সাম্রাজ্য মনিরের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এই নিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী মুরগি মিলনের অনুসারীদের সঙ্গে গোলাগুলি পর্যন্ত হয় তার। এভাবেই লাগেজ পার্টি আর সোনা চোরাকারবারিদের গডফাদার হয়ে ওঠেন মনির; অপরাধ জগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন গোল্ডেন মনির নামে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোল্ডেন মনিরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জানায়, মনির বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানির আড়ালে গাড়ির তেলের টাংকির ভেতরে বিশেষ প্রক্রিয়ায় স্বর্ণ নিয়ে আসেন, পরে সেগুলো তার ডিআইটি প্রজেক্টের গ্যারেজে আনলোড করেন। এছাড়া শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন সংসদ সদস্যের নামে দামি গাড়ি নিয়ে এসে যোগসাজশে বিক্রি করেছেন। দুবাই-সিঙ্গাপুরেও রয়েছে তার আলাদা সাম্রাজ্য, সেখানে দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করেছেন তিনি।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, মূলত ঢাকা-সিঙ্গাপুর-ভারত রুটে ছিল তার মূল ব্যবসা। মুরগি মিলনের কাজ করার সময় স্বর্ণ চোরাকারবারে জড়িয়ে পড়েন গোল্ডেন মনির। অবৈধভাবে দেশে নিয়ে আসেন বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ। বায়তুল মোকাররম মার্কেটে তিনি একটি স্বর্ণের গহনার দোকানও দেন। চোরাচালানের স্বর্ণ ওই দোকান থেকে বিক্রি হতো বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সঙ্গে জড়িত এই গোল্ডেন মনির। তার মধ্যে রয়েছে-মনির বিল্ডার্স, গালফ অটোকারস লিমিটেড, উত্তরার গ্র্যান্ড জমজম টাওয়ার। এসব প্রতিষ্ঠানের অন্যতম পরিচালক এই গোল্ডেন মনির। শুধুমাত্র জমজম টাওয়ারে মনিরের মালিকানার মূল্যমান প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।
আরটিভি/এসএইচএম-টি
শিল্পপতি প্রেমিককে ১১ টুকরো, বেরিয়ে এলো আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য
প্রেমের সম্পর্কের জেরে জসিমউদ্দিন মাসুম নামের এক শিল্পপতিকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে জবাই করে হত্যা করেন পরকীয়া প্রেমিকা রুমা। লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভরে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয়। হত্যা ও মরদেহ সরাতে রুমাকে সহায়তা করে তার বান্ধবী রুকু।
গেল বুধবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পলিথিনে মোড়ানো মাসুমের সাত টুকরা মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয় তারা।
জানা গেছে, এরই মধ্যে কাফরুল থেকে রুমা, রুকুসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। পরে রূপগঞ্জ থানায় হওয়া হত্যা মামলায় থেকে রুমা ও রুকু গ্রেপ্তার দেখিয়ে বাকি দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তদন্তের সঙ্গে যুক্ত একজন পুলিশ কর্মকর্তা গণমাধ্যমে বলেন, হত্যার পর কাফরুলের বাসায় ছিলেন রুমা। নিরুদ্বেগ চলাফেরা ও ঘুমাতে থাকেন তিনি। বুধবার রাতে পুলিশ তাকে ঘুম থেকে তুলে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে সবকিছু স্বীকার করেন তিনি।
রুমা দাবি করেন, কাফরুলের তিন কক্ষের ওই ফ্ল্যাটে তার ছোট বোন, বান্ধবী, ভাবি ও তার বাচ্চা থাকে। দুধের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে অজ্ঞান করা হয় মাসুমকে। দুদিন এভাবে থাকার পর মঙ্গলবার একটি কক্ষের বাথরুমে হত্যার পর লাশ ১১ টুকরা করা হয়। এরপর তার এক বন্ধুকে দুটি ব্যাগ নিয়ে আসার কথা বলেন। দুটি ব্যাগে ভরে সাত টুকরা রূপগঞ্জের একটি লেকের পাড়ে এবং অন্য চারটি অংশ ৩০০ ফিট এলাকায় একটি কাশবনে ফেলে আসেন। বৃহস্পতিবার রুমার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাশবন থেকে চারটি টুকরা উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানে হাত, পা ও কোমর থেকে বুকের খণ্ডিত অংশ ছিল।
রুমা দাবি করেন, ফ্ল্যাটের অন্যরা খুনের বিষয়টি জানতেন না। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি, ব্লেড বনানীর ২০ নম্বর সড়কের একটি বাসায় রেখে আসেন রুমা। পরে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে চাপাতি, ব্লেড ও মাসুমের কিছু কাপড়চোপড় জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে একেক সময় একেক কথা বলছেন রুমা। রুমার ভাষ্য, শিল্পপতি মাসুমের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। এর পাশাপাশি মাসুম অন্য আরেক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিষয়টি জানতে পেরে রাগ-ক্ষোভ ও আবেগের বশে তাকে খুন করেন। ঘটনার দিন এক তরুণীকে নিয়ে মাসুম কাফরুলের বাসায় গিয়েছিলেন। তবে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে কোনো তরুণীকে নিয়ে বাসায় ঢুকতে দেখা যায়নি।
নিহতের পরিবারের সদস্য ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেলে মাসুম তার বাসা থেকে বের হয়ে গুলশান যান। এর পর ব্যক্তিগত চালককে বাসায় ফিরে যাওয়ার কথা বলেন। মালেক নামে আরেক গাড়ির চালককে ডেকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার কথা ছিল তার। রোববার রাত ১১টা পর্যন্ত মাসুমের মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ ছিল। কোনো খোঁজ না পেয়ে সোমবার গুলশান থানায় জিডি করেন তার বড় ছেলে ওবায়দুল ইসলাম শিবু। এর পর তদন্তে নামে পুলিশের একাধিক সংস্থা। বুধবার সকালে রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন-কুড়িল বিশ্বরোড সড়কের উত্তর পাশে ৫ নম্বর সেক্টরের ব্রাহ্মণখালী এলাকায় লেকের পাড় থেকে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশের সাত টুকরা উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিশ্চিত হওয়া যায় ওই লাশের টুকরা মাসুমের।
ওই শিল্পপতির গাড়িচালক আবদুল মালেক জানান, ‘নদী জলে শাপলা ভাসে’সহ দুটি সিনেমার প্রযোজক মাসুম। সিনেমা জগতে মিশতে গিয়ে অনেক নায়ক-নায়িকার সঙ্গে তার পরিচয়। এর সূত্র ধরে রুমা আক্তার নামে এক নারীর সঙ্গে পরিচয় হয়। তার বাসা কাফরুল। এর আগেও কয়েকবার ওই বাসায় গেছেন শিল্পপতি। তার সন্ধান পেতে ঘটনার পর রুমার বাসায় গেলে তিনি জানান, রোববার বিকেলে সেখানে যান মাসুম। আধা ঘণ্টা পর বাসা থেকে চলে যান।
আরটিভি/একে/এসএ
মব ভায়োলেন্সে মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ, পুলিশের বাড়তি সতর্কতা
দেশে প্রায়ই গণপিটুনি বা ‘মব ভায়োলেন্সের ঘটনা ঘটছে। এতে দেখা যায় একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা ‘বিচার করার নামে’ কোনো একটি অভিযোগ তুলে একজনকে পিটিয়ে মারছে আর বাকিরা ভিড় করছে। কেউ ভিডিও করছে, আবার অনেকে উল্লাস করছে। এসব ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে আঁতকে উঠছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে গণপিটুনিতে হত্যার খবর পাওয়া গেছে তুলনামূলক অনেক বেশি। এ ছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে লুটপাট, জমি দখল এবং বাসাবাড়িতে হামলা এবং অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা তো ঘটছেই।
২০২০ সালে রাজধানীর বাড্ডায় একটি স্কুলে মব ভায়োলেন্সের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন তাসলিমা বেগম ওরফে রেনু। তিনি স্কুলে গিয়েছিলেন মেয়ের ভর্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে। ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে আশপাশ থেকে কয়েকশ’ মানুষ স্কুল প্রাঙ্গণে ঢুকে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। এটি ছিল তখনকার খুব আলোচিত ঘটনা।
চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। একই দিনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে কয়েক দফা মারধর করে হত্যা করা হয়। এ দুটি ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর দীর্ঘদিন বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার হওয়ার দাবি করে সংঘবদ্ধ জনতার হামলা দেখা গেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, আদালতে, এমনকি দেশ ছেড়ে পালাতে গিয়ে সীমান্তে ধরা পড়া অনেক নেতাকর্মীর ওপরও।
ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশে এই গণপিটুনি ও মবের কারণে মৃত্যুর ঘটনা আগেও ঘটেছে কিন্তু এবারের ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিত ভিন্ন। আগে কথিত চোর-ডাকাত, অপ্রীতিকর হয়রানির অভিযোগ এনে গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনা বেশি দেখা গেলেও এবারে মিশ্র কারণ উপস্থিত।
আইন বিশ্লেষকরা বলছেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার এ প্রবণতা রোধ করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। গত কয়েক মাসের তুলনায় মবে মৃত্যু কমে এসেছে উল্লেখ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ রকম ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য মাঠ পুলিশকে সতর্ক থাকতে নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) গত তিন মাসের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট থেকে অক্টোবর এই তিন মাসে মবের কারণে মৃত্যু ঘটেছে ৬৮ জনের। এর মধ্যে সেপ্টেম্বরে সবচেয়ে বেশি, ২৮ জন। এর আগে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মবে মৃত্যু ঘটেছে ৩২ জনের। এ বছর জুলাইয়ে কোনও মব নথিবদ্ধ হয়নি। আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের তথ্য বলছে, সে বছর মবে ৫১ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু ঢাকায়, ২৫ জন, তারপরে চট্টগ্রামে ১৭ জন। রংপুরে কোনও মবের ঘটনা নথিবদ্ধ হয়নি।
অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিশ্লেষণে গত তিন মাসের হিসাব বলছে, এই তিন মাসে একটি মাত্র গুমের ঘটনা ঘটেছে। রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ৩৫টি, যাতে আহত হয়েছেন ১ হাজার ৪২৪ জন। সাংবাদিক হয়রানির ঘটনা ঘটেছে ২৫৫টি। এদিকে শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ১২০, শিশু হত্যা ৮৬। এবং সেটাও সবচেয়ে বেশি ঘটেছে সেপ্টেম্বরেই।
১৪ নভেম্বর ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, অন্তর্ভুক্তি এবং ন্যায়বিচার: জনপরিসরে গণতন্ত্র’ সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা বলেছেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে যাওয়ার পরবর্তী তিন মাস ‘মবের মুল্লুক’ মনে হয়েছে।
মব কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় উল্লেখ করে এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর গণমাধ্যমকে বলেন, অপরাধী যেই হোক সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে যেসব ঘটনা ঘটেছে, পুলিশ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব ঘটনা ঘটেছে, আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে ত্বরিত ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য মাঠ পর্যায়ে প্যাট্রোল বাড়ানোসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনগণকে বার্তা দিতে চাই, যেখানে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হবে, আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে আমাদের জানান, এ বিষয়ে আমরা নজরদারি বাড়িয়েছি।
আরটিভি/এআর