ঢাকামঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

ঈদের ছুটিতে ফাঁকা রাজধানী

আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫ , ০৩:৪৫ পিএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

যান্ত্রিক কোলাহলে ভরা রাজধানীতে এখন কোনো কর্মচঞ্চলতা নেই। নেই ব্যস্ত সড়কে গাড়ির শব্দ, যানজট কিংবা পথচারীদের হুড়োহুড়ি। ঈদের ছুটির মতো এমন চিত্র সারা বছর দেখা মেলে না বলেই হয়তো মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারে না। বলতে পারে না, এমন থাকলেই তো সব পেরেশানি ঘুচে যেত!  

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) রাজধানীর শ্যামলী, আসাদগেট, কলেজ গেট, আড়ং, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, মগবাজার, শাহবাগ, মৎস্য ভবন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কগুলো একেবারেই ফাঁকা। যানবাহন কিছুটা দেখা গেলেও নেই যাত্রীর চাপ। শুধু আত্মীয়-স্বজনের বাসা কিংবা বিনোদনকেন্দ্রে বেড়াতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কিছু মানুষ বের হয়েছেন। তবে তাদের অধিকাংশই বাহন হিসেবে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার কিংবা মোটরসাইকেলকেই বেছে নিচ্ছেন। সে কারণে বিভিন্ন পয়েন্টে বাসের স্টাফদের যাত্রী খোঁজার চিত্র ছিল চোখে পড়ার মতো। 

এদিকে ঈদ উপলক্ষে যাত্রীরা বকশিশের নামে কিছুটা বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন। যদিও এর কারণ হিসেবে যাত্রী সংকটকেই দুষছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

বিজ্ঞাপন

তাদের ভাষ্য, ‘রাস্তায় যাত্রী নেই। আমরা পেট বাঁচাতে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। একটা গাড়ি বের করলে পার ডে (প্রতিদিন) কতগুলো টাকা খরচ আছে। সেই খরচ তুলে তারপর তো আমাদের হাজিরা তুলতে হবে। তা না হলে আমরা খাবো কী?’

তারা আরও বলেন, ‘ফাঁকা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় ঘুরতে হচ্ছে। যাত্রী পাচ্ছি না। আর কারও কাছ থেকে জোর করেও অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছি না। ঈদ বকশিশ হিসেবে যে যা দিচ্ছে তাই নিচ্ছি।’

সাভার থেকে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে মোহাম্মদপুরে ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে যাচ্ছেন আল-আমিন। নামবেন আসাদগেট স্টপেজে। 

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, রাস্তায় কোথাও কোনো যানজট পাইনি। একটানে চলে এসেছি। বাসের সিটও ফাঁকা ছিল, যাত্রীও খুব একটা ছিল না।

বেশি ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তায় যাত্রী নেই। সে কারণে বাসের স্টাফরা ঈদ বকশিশ চাচ্ছে এটা সত্য। আমার কাছেও ১০ টাকা বেশি চেয়েছিল। ভাবলাম সারা বছর তো তারা নেয় না, শুধু ঈদের সময়েই এমন দাবি করে। তাই আর না করিনি।

পল্লবী থেকে কারওয়ানবাজার যাচ্ছেন রায়হান রহমান। তিনি বলেন, রাস্তায় কোথাও যানজট ছিল না। তবে যাত্রী না থাকায়, প্রায় সব স্ট্যান্ডেই বাস দাঁড়াচ্ছিল। এরপরও বিরক্ত লাগেনি। কারণ, ফাঁকা ঢাকার আমেজটাই অন্যরকম। যদি সবসময় এমন থাকত তবে খুবই ভালো হতো।

ভাড়া বেশি নেওয়ার বিষয়ে রায়হান বলেন, ওরা (বাস স্টাফ) শুধু দুই ঈদেই চায়, তাই না করার অপশন দেখি না। দিয়েছি ৫ টাকা বেশি।

সাইফুল ইসলাম নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবী বাংলামোটরে দাঁড়িয়ে আছেন মিরপুর যাবেন। তিনি বলেন, সারা বছর ঢাকায় এত যানজট, এত ভিড় থাকে যে বাইরে বের হতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু এখনকার এই নিরিবিলি পরিবেশ দেখলে মনটাই ভালো হয়ে যায়। তাই বের হয়েছি খালার বাসায় যাবো বলে। তবে রাস্তায় বের হয়ে দেখছি গাড়ি তেমন নেই। শেষমেষ মনে হয় রিকশা করেই যেতে হবে। এরপরও যাবো, কারণ যানজটের কোনো পেরেশানি নাই।

রাজধানীবাসী ‘ফাঁকা ঢাকা’ নিয়ে খুশি হলেও অভিযোগ রয়েছে রিকশাচালকদের। তারা বলছেন, মানুষের সংখ্যা কমে যাওয়ায় আয়ে টান পড়েছে। এতে চলতে কষ্ট হচ্ছে। তারপরও সংসারের চিন্তা করে বের হতে হচ্ছে। যাত্রীদের কাছে বকশিশ চাইলে কেউ খুশি হয়ে দিচ্ছে, কেউ দিচ্ছে না। 

সড়কে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা জানান, সড়ক ফাঁকা থাকায় এখন চাপ কম পোহাতে হচ্ছে। 
 
প্রসঙ্গত, এবার সবমিলিয়ে টানা ৯ দিনের লম্বা ছুটি ভোগ করছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সে অনুযায়ী, ছুটি শেষে আগামী ৬ এপ্রিল খুলবে অফিস-আদালত। তার আগ পর্যন্ত রাজধানী কিছুটা ফাঁকা থাকবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।

আরটিভি/আইএম

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |