পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতাল-১ এ ভর্তি হয় সামুদা (৩০) নামে এক রোহিঙ্গা নারী। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কোনোভাবে থামানো যাচ্ছে না তার ব্যথা। তিন ঘণ্টা চেষ্টা করে কিছু মেডিকেল পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে জেলা সদরের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অসুস্থ রোহিঙ্গা নারী সামুদা ভাসানচরের ১০ নম্বর ক্লাস্টারের ১০ নম্বর হাউজের সিরাজ উদ্দিনের স্ত্রী। গেলো সাত ডিসেম্বর থেকে তিনি নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তিন নম্বর ওয়ার্ডের ১৮ নম্বর বেডে ভর্তি রয়েছেন।
ভাসানচরে হাসপাতাল-১ এর দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মাহতাব উদ্দিন আরটিভি নিউজকে জানান, সামুদা বেগম গেলো ছয় ডিসেম্বর পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতাল- ১ এ আসেন। আমরা তাকে প্রথমে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। কিন্তু তাতে তার ব্যথা বন্ধ না হওয়ায় কিছু মেডিকেল পরীক্ষাসহ উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছি। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হলে তাকে আবার ভাসানচরে তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
অসুস্থ্য সামুদার স্বামী সিরাজ উদ্দিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরটিভি নিউজকে জানান, আমার স্ত্রী অসুস্থ্য হওয়ার পর সরকারি ব্যবস্থাপনায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এতে স্পিডভোট ও অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া আমাকে দেওয়া লাগেনি। সব ব্যবস্থা ভাসানচরের হাসপাতা-১ এর পক্ষ থেকে করা হয়েছে। শুধু সামুদা বেগম নয় ভাসানচরের অবস্থান করা সকল রোহিঙ্গার ক্ষেত্রে প্রশাসনের এ ধরনের আন্তরিকতা দেখে মুগ্ধ তিনি।
এদিকে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, অধিক মূল্যের এক্সরে মেশিন, ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সুবিধা, বিদেশ থেকে ক্রয় করা ইসিজি মিশিন, পর্যাপ্ত মেডিকেল অফিসার, প্রয়োজনীয় লোকবল ও ৩২ প্রকারের ওষুধ সরবরাহ নিয়ে গেলো চার ডিসেম্বর থকে কার্যক্রম শুরু করে ২০ শয্যাবিশিষ্ট দুটি স্বয়ং সম্পূর্ণ হাসপাতাল। যা স্থাপন করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে গড়ে তোলা আবাসস্থল ভাসানচরে।
রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত হাসপাতাল-১ এর দায়িত্বে থাকা ওয়ার্ডবয় মিরাজ উদ্দিন জানান, চার ডিসেম্বর শুক্রবার দুইটার সময় ভাসানচর অবস্থান করার পর থেকে ৯ ডিসেম্বর বুধবার দুপুর পর্যন্ত ১৮২জন রোহিঙ্গা তাদের স্বাভাবিক জ্বর ও সর্দি নিয়ে হাসপাতাল-১ এর জরুরি বিভাগ থেকে থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ।
হাসপাতাল-১ ও হাসপাতা-২ এর দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মাহতাব উদ্দিন বলেন, আমি দীর্ঘদিন হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত রয়েছি। বর্তমানে ভাসানচরের হাসপাতালের অস্থায়ী দায়িত্ব পালন করছি। রোহিঙ্গাদের জন্য যে দুটি হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে বা যেসব যন্ত্রপাতি বসানো হয়েছে তাতে জটিল অপারেশন সফলতার সঙ্গে করা যাবে। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের নরমাল ডেলিভারি ও সিজারের খুব ভালো ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।
তিনি আরও জানান ২০ শয্যা করে এই দুটি হাসপাতালে সরকারি একজন, এনজিওর দুইজনসহ তিনজন মেডিকেল অফিসার কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া স্বাস্থ্য সহকারী ছয়জনসহ বিভিন্ন পদে ১৪ জন দায়িত্ব পালন করছেন।
জেবি