জাতীয় পাট দিবস আজ ৬ মার্চ। দিনটি উপলক্ষে গত কয়েক বছর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পাটের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যানার, ফেস্টুন ছেয়ে দিতো। এবার দিবসটি নিয়ে তেমন কোনো আয়োজন নেই। সোনালি আঁশের উজ্জ্বল সম্ভাবনায় ভাটা পড়ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬ পাটকল এখন বন্ধ। গত আট মাস আগে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক বেকার হলেও কর্মকর্তারা বহাল তবিয়তেই আছেন। পাটকল বন্ধ হওয়ায় বসে বসে বেতন নিচ্ছেন বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) প্রায় তিন হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী।
পাটকল বন্ধ হওয়ার কারণে শ্রমিকেরা বেকার হলেও বিজেএমসির কর্মকর্তারা আগের মতোই আছেন। বর্তমান রাজধানীর দিলকুশার প্রধান কার্যালয় ও পাটকলগুলোতে ১ হাজার ৩৩ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। কর্মচারীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৫২ জন। পাটকলগুলো উৎপাদনে না থাকায় অধিকাংশ কর্মকর্তারই হাতে বর্তমানে কোনো কাজ নেই। কিন্তু মাস শেষে বেতন ঠিকই পাচ্ছেন তারা। তবে বিজেএমসির চেয়ারম্যান মো. আবদুর রউফ এর দাবি, শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করাটা বিরাট কর্মযজ্ঞ। সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর হাতেই কাজ আছে। তবে পাটকলের উৎপাদন বন্ধ থাকায় আগের মতো পূর্ণোদ্যমে কাজ করতে হচ্ছে না। সব শ্রমিকের টাকা দেওয়া হলে কাজ কমে আসবে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে পাটশিল্পকে লাভজনক ও বেসরকারীকরণ বন্ধের উদ্যোগ নেয়। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে বন্ধ থাকা ২টি পাটকল চালু করে। কিন্তু ধারাবাহিক লোকসানের মুখে পড়ায় এবার ২৬টি পাটকল বন্ধ করে দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। এসব বন্ধ করা পাটকল বেসরকারি খাতে ইজারা দেওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, ২৫ পাটকলের ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী শ্রমিককে স্বেচ্ছা অবসরে (গোল্ডেন হ্যান্ডশেক) পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে ১ জুলাই পাটকল বন্ধ করে দেয় সরকার। তখন পাটকলগুলোতে বদলি শ্রমিক ছিলেন ২৩ হাজার ৮৪২ জন। স্থায়ী শ্রমিক ১৪ লাখ থেকে ৫৪ লাখ টাকা পাবেন। শ্রমিকদের পাওনার ৫০ শতাংশ অর্থ নগদে ও বাকিটা তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র আকারে সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।
বন্ধ পাটকলগুলো বেসরকারি খাতে ইজারা দিতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হতে পারে বলে জানান বিজেএমসির চেয়ারম্যান মো. আবদুর রউফ।
এফএ