ঢাকাশুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেও রক্ষা পেল না কলেজছাত্রী

কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

রোববার, ২০ মার্চ ২০২২ , ০৮:৩২ এএম


loading/img
ফাইল ছবি

কুমিল্লায় বখাটের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেও তাদের হয়রানি এবং মারধর থেকে বাঁচতে পারেনি আকলিমা আক্তার নামে এক কলেজছাত্রী। মেসেঞ্জার, ইমু এবং হোয়াটসআ্যাপে নানান অশ্লীল ছবি পাঠিয়ে উত্ত্যক্ত করার জেরে মেহেদি হাসান রিয়াদ নামে এক বখাটের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন ওই কলেজছাত্রী। মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। 

বিজ্ঞাপন

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মেহেদী হাসান রিয়াদের নেতৃত্বে একদল বখাটে ওই কলেজছাত্রীর বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। হামলায় তার বোন এবং ফুফুসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ছাড়া ঘরের আসবাবপত্রও ভাঙচুর করা হয়। গতকাল শনিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে কুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই কলেজছাত্রী সংবাদমাধ্যমের কাছে এ অভিযোগ করেন। 
 
আকলিমা আক্তার (২২) কুমিল্লা সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী এবং জেলার বুড়িচং উপজেলার ফরিজপুর গ্রামের হাজি শহিদুল্লার মেয়ে। মেহেদী হাসান রিয়াদ (২৫) পার্শ্ববর্তী শমেষপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।
 
ভুক্তভোগী ওই কলেজছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, আমরা ছয় বোন। আমার কোনো ভাই নেই। পরিবারের সবার ছোট আমি। মেহেদী হাসান রিয়াদ সম্পর্কে আমার চাচাতো বোনের জামাই। চাচার পরিবারের সঙ্গে আমাদের সম্পত্তি-সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে রিয়াদ আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদেরকে নানানভাবে হয়রানি এবং হুমকি প্রদান করে আসছিল। এ ছাড়া আমাকে মেসেঞ্জার ইমু এবং হোয়াটসআ্যাপে নানা অশ্লীল ছবি পাঠিয়ে উত্ত্যক্ত করত। এসব তথ্য প্রমাণসহ গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর আমি রিয়াদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালতের নির্দেশে বুড়িচং থানায় মামলাটি এফআইআরভুক্ত করা হয়। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিতে স্থানান্তর করে পুলিশ। এরই মাঝে মামলা তুলে নিতে আমাকে দফায় দফায় প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। 

সম্প্রতি এ মামলায় রিয়াদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ১৫ মার্চ রিয়াদ একদল বখাটে নিয়ে আমাদের ঘরে এসে হামলা চালায়। আমাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। এ ছাড়া আমার বোন ফুফুসহ কয়েকজনকে জখম করা হয়। বাসায় আমাদের বেশ কিছু আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। 

বিজ্ঞাপন

খবর পেয়ে পুলিশ এসে হামলাকারীদের একটি প্রাইভেটকার জব্দ করে দেবপুর পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গেলেও ঘটনায় জড়িতদেরকে আটক করতে পারেনি। আমি এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে গেলেও প্রভাবশালী রিয়াদের বিরুদ্ধে মামলা নিচ্ছে না পুলিশ। কুপিয়ে জখমের পর উল্টো থানায় গিয়ে আমার নামসহ বাবা চাচাকে আসামি করে একটি মিথ্যা এবং বানোয়াট মামলা দায়ের করেন। আমাদেরকে অসহায় পেয়ে তারা চরমভাবে হয়রানি এবং নির্যাতন করছে। আমি প্রশাসনিক কোনো সহায়তা পাচ্ছি না। 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মেহেদি হাসান রিয়াদ বলেন, আকলিমা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে আমাকে হয়রানি করছে। ওইদিন দুই পক্ষের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। 

এ বিষয়ে বুড়িচং থানার ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, কলেজছাত্রী আকলিমার দায়ের করা একটি মামলা সিআইডি তদন্ত করছে। তার ওপরে হামলার বিষয়ে আমি অবগত নই। কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে অভিযোগ দিলে আমি অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |