শরীয়তপুরের জাজিরায় স্কুলছাত্র শাকিল মাদবরকে (১৫) অপহরণ ও হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়াও তাদের সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানাসহ অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক আ. ছালাম খান এই রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সাকিব মাদবর বাবু (২২) ও ইমরান মোড়ল (২০)।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিশেষ কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ জানান, আসামিদের মধ্যে দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এতে আমরা সন্তুষ্ট। বাকি আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছে। এতে আমরা সন্তুষ্ট নয়। বাদীপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করবে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, শাকিল মাদবর জাজিরা উপজেলার হাজী কালাই মোড়লের কান্দি গ্রামের সালাম মাদবরের ছেলে। সে স্থানীয় অ্যাম্বিশন কিন্ডার গার্টেন অ্যান্ড হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ২০২০ সালের ২৫ জুন বিকেলে শাকিল মাদবরকে খেলার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় অভিযুক্ত সাকিব মাদবর বাবু। পরে সাকিব মাদবর বাবু (২০), আক্তার মাদবর (২৬), সজিব মাঝি (২২), ইমরান মোড়ল (২০), মহসিন হাওলাদার (২৫) ও স্বপন সরদার (৪৫) অপহরণ করে উপজেলার মোসলেম ঢালীর কান্দি গ্রামের বারেক মৃধার বাড়ির পাশে আটকে রাখে।
একপর্যায়ে শাকিলের চাচা শাহাজুল ইসলাম মাদবরের কাছে মুঠোফোনে ও এসএমএসে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তারা। অন্যদিকে শাকিলকে তার পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। মুক্তিপণ না দেওয়ায় শাকিলকে হত্যা করে পদ্মা সেতু সংলগ্ন ওই গ্রামের বারেক মৃধার বাড়ির পাশের বালুর মাঠে, মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয়। পুলিশ ২৭ জুন ভোরে শাকিলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় ওই দিন জাজিরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ওই ছাত্রের বাবা সালাম মাদবর। ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।