প্রকৌশলীদের জাতীয় সংগঠন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের নেতৃত্বদানকারী কৃতী প্রকৌশলীদের আজীবন ও মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করেছে প্রতিষ্ঠানটি। শনিবার (২১ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর আইইবি মিলনায়তনে এ সম্মাননা তুলে দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি।
অনুষ্ঠানে আইইবির প্রতিষ্ঠালগ্ন সময়ে ভূমিকা রাখা, মুক্তিযুদ্ধকালীন এবং পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনে বিশেষ অবদান রাখায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর- এলজিইডির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান প্রকৌশলী বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুল ইসলাম সিদ্দিককে মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয়। কামরুল ইসলাম সিদ্দিক এর পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন তার জামাতা হুমায়ুন কবীর বাবলু।
কামরুল ইসলাম সিদ্দিক একাধারে প্রকৌশলী, নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনাবিদ এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের রূপকার ছিলেন। তারই সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ফসল আজকের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর- এলজিইডি। প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিক ২০০২ এবং ২০০৩ সালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
কামরুল ইসলাম সিদ্দিক যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের উন্নয়নে গ্রামের অর্থনীতি গতিশীল করতে হাতে তুলে নিয়েছিলেন গুরু দায়িত্ব। শুরু করেছিলেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ।
অনুষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রকৌশলী এম এ জব্বার (মরণোত্তর), প্রকৌশলী রফিক উদ্দিন আহমদ (মরণোত্তর), অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী (মরণোত্তর) সহ ১৭ জন প্রকৌশলীকে দেশ গঠন ও প্রকৌশলীদের উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়া হয়।
এছাড়া প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর, প্রকৌশলী সিরাজুল মজিদ মামুন, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদারসহ মোট ৬৮ জন প্রকৌশলীকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনে প্রকৌশলীদের অবদান অনেক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং বলিষ্ঠ সাহসিকতায় নিজস্ব অর্থায়নে যে পদ্মা সেতু হচ্ছে তার পেছনে বাংলাদেশর প্রকৌশলীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। শুধু পদ্মা সেতু নয় বর্তমানে বাংলাদেশে যে মেগা প্রকল্প গুলো হচ্ছে তার পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রম, মেধা ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন এদেশের খ্যাতিমান প্রকৌশলীরা।
তিনি এ সময় প্রয়াত প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিক, এম এ জব্বার, রফিক উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের উন্নয়নে গ্রামের অর্থনীতি গতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের কথা স্মরণ করে বলেন, আইইবি’কে এ পর্যায়ে নিয়ে আসতে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তাদের অবদান চীর স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং প্রাক্তন আইইবি প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইইবির প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার নুরুল হুদা।
সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।