গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সাঁওতালরা। সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
বুধবার (২৫ মে) সকালে উপজেলার মাদারপুর ও জয়পুর গ্রাম থেকে ব্যানার-ফেস্টুন, তীর-ধনুক ইত্যাদি নিয়ে মিছিল বের করে সাঁওতালরা। বাগদা বাজার পর্যন্ত কয়েক দফা
মিছিল করার পর কাটামোড় ও সাহেবগঞ্জ আমবাগানে পৃথক সমাবেশ করে তারা। এ সময় ‘জীবন দেব, তবু রক্তে ভেজা জমি ছাড়বো না’ শ্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) কোনও আলোচনা করেনি। ‘বেপজা’ নিজেরাই ইপিজেড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বক্তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে তাদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার এবং তিন সাঁওতাল হত্যার বিচারসহ সাহেবগঞ্জ এলাকায় প্রস্তাবিত ‘রংপুর ইপিজেড’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের সাঁকোয়া বিল এলাকায় নির্মাণের দাবি জানান।
জানা গেছে, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১৮৪২ একর জমি আছে। এই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। এক সময় সাঁওতালরা এসব জমি দখল করে।২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমি উদ্ধার করতে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে তিন সাঁওতাল- শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মার্ডি নিহত এবং আরও ২০ জন আহত হন। এরপর জমি উদ্ধারে গঠিত হয় সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি।
এ পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম এলাকায় তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু স্থানীয় সাঁওতালরা এখানে ইপিজেড নির্মাণ না করার জন্য আন্দোলন শুরু করে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে ও সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন শেখ, সাঁওতাল নেতা প্রিসিলা মুরমু, মিথাইল মুরমু, হার্ডিয়াস মুরমু, মিসথেরিনা মুরমু, গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক জাহাঙ্গীর কবির প্রমুখ।