বান্দরবানে গরু ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর খুনের দায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ফজলে এলাহী ভূঁইয়া এ রায় দেন। এ সময় মামলায় আরেক আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। তবে রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি চিং নু মং হদা আদালতে উপস্থিত ছিলেন ও বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
নিহত ব্যক্তি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দিয়াকুল এলাকার মৃত আনু মিয়ার ছেলে গরু ব্যবসায়ী ছোট্ট মিয়া।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উবা চিং মারমা (৩০), উচিংনু মারমা (২২), মং থু মং ক্যাসিং, চিং নু মং হদা (২৩) ও মং নু মং (৫০)। খালাস পাওয়া ব্যক্তির নাম- রে অং মারমা।
আদালত ও মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ছোট্ট মিয়া গরুর ব্যবসায়ী হওয়ার সুবাদে আসামি উচিংনু মারমার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা বায়না দিয়ে একটি গরু ক্রয় করেন। পরে ছোট্ট মিয়ার ক্রয়কৃত গরু আনার জন্য বাকি টাকা নিয়ে রোয়াংছড়ি উপজেলার হানসামাপাড়া বাজারে যাওয়ার পর নিখোঁজ হন। পুলিশ আসামি উচিং নু মারমাকে ২০০৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় বান্দরবান পৌরসভার মধ্যমপাড়া থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
এদিকে আসামি উচিং নু মারমা জানান, তিনি অপর আসামিদের সহযোগিতায়ছোট্ট মিয়াকে গলা কেটে খুন করে। পরে মরদেহ ৩৪৮ নম্বর হ্লাপাইক্ষ্যং মৌজস্থা ঝিরিমুখে মংজহ্লী মার্মার বাঁশবাগানে মাটিচাপা দেন। একই সঙ্গে গরু বিক্রি বাবদ পাওনা ১২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে। পরে ২০০৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আসামি উচিংনু মারমার বর্ণনা মতে ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি খুঁড়ে ছোট্ট মিয়ার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে। পরে এ ঘটনার দিন নিহতের ভাই মো. আমজু মিয়া বাদী হয়ে বান্দরবান সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে মামলা দায়ের করলে পুলিশ ২০০৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর এ ঘটনায় উসিংনু মারমা, উবা চিং মারমা, রে অং মারমা, চিং নু মং হদা, মং নু মং ও মং থু মং ক্যাসিংকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে আজ মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান জানান, গরু ব্যবসায়ী ছোট্ট মিয়াকে খুনের দায়ে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালত পাঁচজন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।