ঢাকারোববার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

আপনার ভূমিকা কেবল শূন্যই না, নেতিবাচকও : কক্সবাজারের ডিসিকে আদালত

আরটিভি নিউজ

বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২ , ০৮:৪৮ পিএম


loading/img
ছবি : সংগৃহীত

আদালতের নির্দেশ মেনে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে অবৈধ স্থাপনা ও দখল উচ্ছেদ না করায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মামুনুর রশীদকে ভর্ৎসনা করেছেন হাইকোর্ট। 

বিজ্ঞাপন

এর আগে বুধবার (১৯ অক্টোবর) সমুদ্রসৈকত এলাকায় অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদে আদালতের নির্দেশনা পালন না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক। 

এ সময় আদালত এই জেলা প্রশাসককে উদ্দেশ্য করে বলেন, অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য রক্ষায় আপনার ভূমিকা কেবল শূন্যই না, নেতিবাচকও। বারবার বলার পরও আপনি আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করেননি। আপনার ব্যক্তিগত স্বার্থ আছে কি না, তা জানি না। আদালতের আদেশ মানেন, নইলে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। আপনি এই ঝুঁকিতে যাবেন না।

বিজ্ঞাপন

জেলা প্রশাসকের আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকিরকে আদালত বলেন, আমরা পারতপক্ষে কারও বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে তলব করি না। তাকে (ডিসি) অনেকবার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এরপরও তিনি সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ মানেননি। এ কারণে তলব করেছি।

জেলা প্রশাসককে আদালত বলেন, উচ্ছেদ করে আমরা তাদের বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে বলছি না। আপনি সুন্দর ব্যবস্থাপনা করুন। মানুষ আপনাকে মনে রাখবে। আমরা প্রতিদিন পত্রিকা-টিভি খুলে দেখি আপনি কী করছেন? কিন্তু আপনার পারফরম্যান্স কেবল শূন্যই না, নেতিবাচকও।

এ সময় উত্তরে জেলা প্রশাসক বলেন, আমি কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। এখন আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করব।

বিজ্ঞাপন

পরে আদালত বলেন, শুধু করব বললে হবে না। আপনাকে করতেই হবে। আদালতের আদেশ না মানলে আপনার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

এরপর জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ আদালতের আদেশ পালনের প্রতিশ্রুতি দিলে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে আদালত তাকে অব্যাহতি দেন।

এর আগে, গত ২৫ আগস্ট কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে (ডিসি) ১৯ অক্টোবর সশরীরের আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত।

একইসঙ্গে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ (ডিসি) পাঁচজনের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। তারা হলেন— কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ, উপপরিচালক, টাউন প্লানার তানভির হাসান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনর রশিদ, পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান ও কক্সবাজার পৌর মেয়র মজিবর রহমান।

ওই দিন আদালত অবমাননার অভিযোগ সংক্রান্ত রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

নোটিশে বলা হয়, কক্সবাজার সৈকত এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ রাখতে সেখান থেকে সব অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ করার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থে এইচআরপিবি আদালতে রিট মামলা দায়ের করলে আদালত রায় দেন। রায়ে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য নির্দেশনা দেন। জনস্বার্থ বিবেচনা করে হাইকোর্ট ২০১১ সালের ৭ জুন বিবাদীদেরকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দিলেও এখনও তা সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হয়নি।

এতে আরও বলা হয়, কয়েক দিন আগে এইচআরপিবির প্রতিনিধি সমুদ্রসৈকত এলাকায় পর্যবেক্ষণে গেলে সৈকত এলাকায় অনেক অবৈধ দখল ও স্থাপনা দেখতে পান। যদিও এর আগে রায় হওয়ার পরে আদালতের নির্দেশে সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। বর্তমানে ওই দখল ও স্থাপনা ভাড়া দিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা আয় করছেন, কিন্তু প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যা আদালত অবমাননার শামিল।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |