চট্টগ্রামে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বাসভবন ‘গুডস হিল’ ঘেরাও করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড। এ সময় তারা সেখানে প্রতীকী তালাও ঝুলিয়ে দেন। উড়িয়েছেন লাল-সবুজের পতাকা।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে ওই ঘেরাও কর্মসূচি পালনকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনসহ বিশিষ্টজনরা যোগ দেন। এ সময় কর্মসূচি পালনকারীরা গুডস হিলের প্রবেশপথে দেয়ালে লিখেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর নির্যাতন কেন্দ্র-রাজাকারের বাড়ি’। ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় মৌলবাদীর ঠাঁই নাই’ লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভও করেন তারা।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের নগরের চকবাজার থানাধীন গনি বেকারির মোড়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো এই ‘গুডস হিল’।
এদিকে গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে বিএনপির মহাসমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি বড় নেতা হিসেবে নয়। আজকে এসেছি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হিসেবে। আপনারা সবাই সঙ্গে থাকলে আমাদের পরাজিত করার শক্তি কারও নেই। এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বলে দিতে চাই, ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার পর একা বাড়ি যেতে পারবেন না। প্রতিটি শহীদের পরিবার থেকে ক্ষমা চেয়ে যেতে বাধ্য করা হবে। যাওয়ার আগে আমার বাবার স্লোগান আপনাদের বলে যেতে চাই।
সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা বলেন, বঙ্গবন্ধু, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ শব্দগুলো আমাদের অস্তিত্ব। সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী সাকাকে তার ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ‘শহীদ’ বলায় আমরা মনে করি এটা লাল সবুজের পতাকার অবমাননা। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে নির্যাতন করা হতো সাকা চৌধুরীর গুডস হিলের বাড়িতে।
তারা আরও বলেন, পাকিস্তানি ঘাতক বাহিনীকে সঙ্গে করে নিয়ে বাঙালি মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের নারীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাতো এই যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরী। মূলত পাকিস্তানি হানাদারদের পথপ্রদর্শক এবং বাঙালি যুবক, বুদ্ধিজীবী ও সংখ্যালঘুদের গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড ছিল চট্টগ্রামের কুখ্যাত সাকা চৌধুরী। তার ছেলের বক্তব্যের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।