ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ এলাকায় কৃষি ও সরকারি খাস জমি থেকে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। যে যার মতো মাটি কেটে নেওয়ার পাশাপাশি গভীর গর্ত করে মাটি কেটে বিক্রি করছে এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু কামাল হোসেন ভূঁইয়া ও তার দুই ভাই বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়া এবং জাহাঙ্গীর হোসেন ভূঁইয়া। তারা কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাইয়্যুম ভূঁইয়ার ছেলে। তাদের এমন ভূমিদস্যুতায় সরকারি জমি হাতছাড়া হওয়ার পাশাপাশি কৃষি জমি ধ্বংসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুতের মেইন লাইনও ঝুঁকিতে রয়েছে। যেকোনো মূহুর্তে বিদ্যুতের খুঁটির মাটি সরে গিয়ে ধ্বসে পড়ে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় প্রশাসনও যথার্থ উদ্যোগ না নিয়ে নিরবতা পালন করছে।
ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য দেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বরাবর আবেদন করেছেন করেও ফল পাননি ভুক্তভোগী আরব আমিরাত প্রবাসী ও সৈয়দাবাদ গ্রামের বাসিন্দা কামরুজ্জামান কামাল।
কামাল সৈয়দাবাদ গ্রামের বাসিন্দা হাজী আব্দুর রহিম ভূঁইয়ার ছেলে।
অভিযোগের ভিত্তিতে কসবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্জীব সরকার শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, কাজ বন্ধ করলে লাভ হবে না। কয়েকদিন পর আবারো ভূমিদস্যরা সক্রিয় হবে। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ ড্রেজার জব্দ করা বেশি জরুরি ছিল। যা হয়েছে এটি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ ছিল না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ এলাকা জুড়ে কৃষি ও সরকারি খাস জমি থেকে মাটি লুট করে নিয়ে বিশাল গর্ত ও পুকুরে পরিণত করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই মাটি স্থানীয় একাধিক ইটভাটা ও বসতভিটায় মাটি নিতে ড্রেজার এবং এস্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটছে। দীর্ঘদিন ধরে রাতে ও দিনে সরকারি খাস ও কৃষি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ওই প্রভাবশালী ভূমিদস্যু চক্রটি। এভাবে মাটি কাটার কর্মযজ্ঞ চললেও প্রশাসন রহস্যজনক কারণে নিরব ভূমিকা পালন করছে। এসবের নেপথ্যে স্থানীয় প্রশাসন মহল জড়িত রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কামরুজ্জামান কামাল জানান, তিনি একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা। কঠোর পরিশ্রম করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের রিজার্ভ সমৃদ্ধ করতে সহায়তা করছেন।
তিনি জানান, তার পাঠানো রেমিটেন্স দিয়ে ওই এলাকায় ৩০ বিঘা জমি ক্রয় করে বিগত প্রায় দুই বছর পূর্বে মাছ চাষ করার জন্য প্রশাসনের প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিয়ে দুইটি পুকুর খনন করে সেখানে মাছ চাষ করে দেশের মৎস্য খাতে অবদান রাখছেন। কিন্তু ওই ভূমিদস্যুরা তার কৃষি জমি এবং সরকারি খাস ভূমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রুত ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে কসবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্জীব সরকার জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়েছি এবং মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ড্রেজার জব্দ ও ভূমিদস্যুতায় কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না - এমন প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান।