এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ হওয়ায় চট্টগ্রামে লোডশেডিং বেড়েছে। নগরে গ্যাসের চুলা জ্বলছে মিটমিট করে। অনেক এলাকায় বেশ কিছুক্ষণ কোনো গ্যাসই ছিল না।
শনিবার (১৩ মে) চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার পর থেকে এ অবস্থা বিরাজ করছে।
চট্টগ্রাম নগরের মোমেনবাগ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা রুবাইয়া ইয়াসমিন বলেন, দুপুরে রান্না করতে গিয়ে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। গ্যাস জ্বলছিল মিটমিট করে। গ্যাসের তেজ না থাকায় রান্না করতে সময় বেশি লেগেছে। এ সময় ছিল না বিদ্যুৎ। তাই গরমে কাহিল অবস্থা হয়েছিল। এক মাস ধরেই লোডশেডিং বাড়ছে। কিন্তু গত দু-তিন ধরে হঠাৎ লোডশেডিং দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ বেড়েছে। এখন নতুন করে যুক্ত হয়েছে গ্যাস সংকট।
চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। এ নগরে বিভিন্ন খাতে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩২৫ মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু স্বাভাবিক সময়ে মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল থেকে পাওয়া যায় ২৭০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে কক্সবাজারের মহেশখালীর দু’টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গত শুক্রবার রাত ১১টার পর গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়। এ কারণে শনিবার চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে।
কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (বিপণন দক্ষিণ) আমিনুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে মহেশখালী থেকে কোনো গ্যাসই আসছে না। বর্তমানে রিজার্ভ থেকে নিয়ে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি বাসাবাড়িতেও গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে, যা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গ্যাসের সমস্যার পাশাপাশি বেড়েছে লোডশেডিং। চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দফায় দফায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। চট্টগ্রামে দৈনিক ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ মেগাওয়াট। রাউজান ও শিকলবাহা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র দুটি গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় এসব কেন্দ্র থেকে ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। বিদ্যুতের এ পরিস্থিতির কারণে অনেক গ্রাহককে জেনারেটর ও আইপিএসের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু যাদের এসব ব্যবহার করার সামর্থ্য নেই তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছাড়া থাকতে হচ্ছে।
পিডিবির চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরী বলেন, জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ মেগাওয়াট। তাই লোডশেডিং বেশি হচ্ছে।