পিক টাইমের আগেই ভয়াবহভাবে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসকে ডেঙ্গুর পিক টাইম বলা হলেও তার আগেই সারাদেশে ৬১ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৮৭১ জন। যাদের অধিকাংশই ঢাকার বাসিন্দা। ইতোমধ্যে ঢাকা দুই সিটির ৫৫টি ওয়ার্ডকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বিকেলে ডেঙ্গু সংক্রমণের প্রি-মনসুন জরিপের ফলাফল তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীর ৪৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ বহুতল ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ঢাকা দুই সিটির ৫৫টি ওয়ার্ড ঝুঁকিপূর্ণ।
ঢাকা উত্তর সিটির ২৭টি ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ড হলো- ২, ৩, ৫, ৬, ১০, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩৩, ৩৫, ৩৭ ও ৩৮।
এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটির ২৮টি ওয়ার্ড হলো- ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৯, ১১, ১২, ১৩, ১৫, ১৬, ১৮, ১৯, ২২, ২৩, ২৬, ৩৩, ৩৪, ৩৬, ৪১, ৪৪, ৪৬, ৪৮, ৫০, ৫১, ৫৪, ৫৫ ও ৫৬।
ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ঢাকা উত্তর সিটির ২০ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং দক্ষিণে ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, উন্নয়নমূলক কার্যক্রম, রাস্তা উঁচু হওয়া, ভবনের নিচতলায় কিংবা পার্কিংয়ে জমে থাকা পানির কারণে লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে বেশি।
এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ইমেরিটাস অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ আরটিভিকে বলেন, শক সিন্ড্রোমের কারণে বেশি মানুষ মারা যেতে পারে। তাই অবহেলা না করে ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্রই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বছরব্যাপী নানা উদ্যোগ নিলেও কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশা নিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯ হাজার ৮৭১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৮ হাজার ১৪১ জন। মারা গেছেন ৬১ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এক হাজার ৬৬৯ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন।