দিনাজপুরের বিরল উপজেলার খোসালডাংগী হাট এলাকায় দিনাজপুর জেলায় বিআইডব্লিউটিএর অফিস ভবন, তুলাই নদীতে রাবার ড্যাম, পুনর্ভবা নদীর তীরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শনিবার এসব উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দিনাজপুরের বিরলের ধর্মপুর, কামদেবপুর থেকে ঢেপা ও পুনর্ভবা নদীর তীরে ২৬ কিলোমিটার বাঁধ যা ঠাকুরগাঁও পর্যন্ত চলে গেছে, সেটিতে রিভারওয়ে তৈরি করা হবে। ২৬ কিলোমিটার বাঁধের উপর রাস্তা তৈরির জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। এ নদীর পাড় শুধু দিনাজপুর নয়; বাংলাদেশের সবচেয়ে সৌন্দর্যমন্ডিত নদীর পাড় হবে। কারণ এ নদীর পাড়ে ভারতবর্ষের পৃথিবীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রাচীনতম ‘কান্তজি মন্দির’ আছে। যে মন্দির দেখার জন্য সমগ্র পৃথিবী থেকে মানুষ আসে। ইতিহাসের অমরস্বাক্ষী ‘রাজবাড়ী’ আছে। পুনর্ভবা ও ঢেপা নদীর দু’পাড় সুন্দর করে সাজাবো। কান্তজির সেই আগমন যেন দু’পাড়ের মানুষ উপভোগ করতে পারে। সমগ্র পৃথিবীর ইতিহাসবিদ ও দর্শনার্থী তারা স্মরণ করবে-বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসকে সম্মান করতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ, দিনাজপুরের মানুষ তাদের প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে, আমরা সেভাবে সাজাতে চাচ্ছি। জেলা প্রশাসককে সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
একইভাবে দিনাজপুরের রামসাগর, সুখ সাগর, আনন্দ সাগরসহ যে প্রাচীনতম পুকুরগুলো আছে সে পুকুরগুলো অপরূপ সাজে সজ্জিত করা হবে যেন দিনাজপুর একটি সুন্দর দর্শনীয় জেলায় পরিণত হয়। দিনাজপুরের লিচু পৃথিবীর বিখ্যাত। চাঁদপুরে ‘ইলিশের বাড়ি’ করা হয়েছে; দিনাজপুরে ‘লিচু বাড়ি’ করা যায় কিনা সেই পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি কাজ করছেন।
আগামী দিনে দিনাজপুরের ‘লিচু বাড়ি’ জন্য সারাদেশের মানুষ দিনাজপুরে আসবে এবং আসার পথে রামসাগর, সুখ সাগর, আনন্দ সাগর, কান্তজি মন্দির, রাজবাড়ি পরিদর্শন করে তারা একটি অপরূপ ভালোবাসার নিদর্শন সঙ্গে করে নিয়ে যাবে। সেভাবে দিনাজপুরকে গড়ে তুলবো।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ পথ চলা অত্যন্ত কঠিন। যারা দেশকে ভালোবাসে, যারা দেশের জন্য কাজ করে, তাদের সামনে অনেক বাধা। তাদের মৃত্যু ঝুঁকি নিতে হয়। বঙ্গবন্ধু মৃত্যু ঝুঁকি নিয়েছিলেন। তিনি জানতেন, তার জন্য ফাঁসি অপেক্ষা করছে, তাকে হত্যা করতে পারে। বাংলার মানুষের প্রতি তাঁর বিশ্বাস ছিল। তার দূরদর্শিতা ও সাহসিকতার কারণে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। তাকে হত্যা করতে পারত, মৃত্যুদণ্ড দিতে পারতো, তিনি কিন্তু ভয় করেন নাই। তিনি সাহস নিয়ে কাজ করেছেন। তাকে হত্যা করা হয়েছে সর্বশেষ। ভারতের ইন্দিরা গান্ধী, শ্রীলংকার বন্ধরনায়েক, ইন্দোনেশিয়ার সুকর্ণকে হত্যা করা হয়েছে। কারণটা কি? তারা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করেন নাই।
মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা বলেছিল, আমরা যেভাবে বলবো সেভাবে চলতে হবে। তারা বলেছিল, আমরা জাতীয়তাবাদী নেতা। আমাদের জনগণ যেভাবে বলবে সেভাবে চলবো। তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে বাংলাদেশকে অপরূপ সাজে সজ্জিত করেছেন। শেখ হাসিনাকে ব্রিকস সম্মেলন, ডি-৮ সম্মেলন এবং আন্তর্জাতিক ফোরাম আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। বাংলাদেশকে তিনি তুলে নিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশকে তিনি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছেন। যিনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য সফল হয়েছেন- তাঁকে আজকে বার বার টেনে ধরতে চায়, তাকে আটকে ধরতে চায়, তাকে বিভিন্ন ভাবে দাবিয়ে রাখতে চায়। বিশ্বব্যাংক আইএমএফ, বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠী আমেরিকা, ইউরোপ বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিতে চায় যেন শেখ হাসিনাকে কাবু করতে পারে। শেখ হাসিনা কি কাবু হবার লোক ! না তিনি কাবু হবেন না। কারণ তিনি বাংলার মানুষের ভালোবাসায় ঋণী।
বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিআইডব্লিউটিএ’র সদস্য (প্রকৌশল) ড. এ কে এম আজাদুর রহমান, জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ এবং প্রকল্প পরিচালক মো. সাইদুর রহমান।