ঢাকাবৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

মা কবরে-বাবা কারাগারে, অসহায় ৭ সন্তান

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

সোমবার, ২৮ আগস্ট ২০২৩ , ১০:১৩ এএম


loading/img

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সোনাচং গ্রামে তালাক দেওয়ায় এক গৃহবধূকে হাত-পা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরপর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ময়নাতদন্ত শেষে দাফন করা হয়েছে ওই গৃহবধূকে। তবে তাদের ৯ মাসের সন্তানসহ সাত সন্তান এখন অসহায়। ঘরে এক বেলার খাবারও নেই। 

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৭ আগস্ট)  ওই বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। শনিবার (২৬ আগস্ট) রাতে ওই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

সাত সন্তানরা হলো, তানজিনা আক্তার, মমনিনা আক্তার, তাহমিনা আক্তার, ছাবিনা আক্তার, সাহেদা আক্তার, হাবিবুর রহমান ও আতাউর রহমান। 

বিজ্ঞাপন

নিহত নারী হলেন,  উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ছনখলা গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের মেয়ে আকলিমা খাতুন (৩৫)। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি হলেন, নিহতের স্বামী উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের সোনাচং গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে সুজন মিয়া (৪০)।

পুলিশ সূত্র জানায়, প্রায় ১৫ বছর পূর্বে সুজন মিয়ার সঙ্গে আকলিমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের কোলজুড়ে সাত সন্তান জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে বনিবনা না হওয়ায় সম্প্রতি তাদের মধ্যে তালাক হয়। এরপর খেতামারা আশ্রয়ণে অবস্থান নেন আকলিমা। গত শনিবার সন্ধ্যায় সুজনের সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয় তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী আকলিমার। এ সময় আকলিমাকে বাড়িতে নেওয়ার জন্য তাকে টানাটানি করে সুজন। কিন্তু আকলিমা বাড়িতে যেতে চাননি ও এনিয়ে সুজনকে গালিগালাজ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুজন তার হাতে থাকা দা দিয়ে ঘটনাস্থলেই আকলিমাকে কুপিয়ে শরীর থেকে বাম হাত আলাদা করে ফেলেন। পরে দা দিয়ে কুপিয়ে একটি পা কেটে ফেলেন। এ সময় গুরুতর আহত আকলিমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে নিহত হন। 

সরেজমিনে দেখা যায়, চুনারুঘাট উপজেলার ছনখলা গ্রামে নিহত আকলিমার বাবার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সাত সন্তানকে। ওই দম্পতির মেজো মেয়ে তানজিনা আক্তার জানান, ‘বাবা মাদকাসক্ত। প্রায়ই নেশা করে বাড়ি ফিরে মাকে নির্যাতন করতেন। বাবা আমাদের ভরণপোষণ করেন না। মাই আমাদের একমাত্র ভরসা ছিলেন। আমার বাবা সেই মাকে খুন করেছে। এখন আমরা কেমনে বাঁচুম। কি খামু জানি না।’

বিজ্ঞাপন

বড় মেয়ে তাহমিনা জানান, আমাদের কোনো সম্পত্তি নেই। রোববার দুপুরে খাবারের ব্যবস্থাও ছিল না। পরে তারা নানার বাড়ি ছনখলা চলে যান। এরমধ্যে বড় মেয়ে তাহমিনা আক্তারের বিয়ে হয়েছে। তিনি স্বামীর বাড়ি অবস্থান করলেও তেমন অবস্থা নেই। 

চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হক জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |