পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যাকারী স্কুলছাত্রী রহিমা আক্তার সোনিয়ার মরদেহ কবর থেকে ফের ওঠানো হয়েছে।
দাফনের ছয় দিন পর দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য মঙ্গলবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহরাব হোসেনের উপস্থিতিতে সোনিয়ার মরদেহ ওঠানোর পর পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
এ সময় তেঁতুলিয়া থানার ওসি সরেস চন্দ্র, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তেঁতুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুস সবুর, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া, তেঁতুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আনিসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তেঁতুলিয়া আমলি আদালত-৪ এর বিচারক মো. জাহাঙ্গীর আলম সোনিয়ার মরদেহ কবর থেকে ওঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে দুপুরে পুলিশ একই আদালতে ওই ধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলায় আত্মসমর্পণকারী দুই আসামি মনসুর আলী রাজন ও আতিকুজ্জামান আতিকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
সোমবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তেঁতুলিয়া আমলি আদালত-৪ এ আত্মসমর্পণ করে আসামিরা জামিনের আবেদন করেন। পরে আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর আলম তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে আত্মহত্যার ঘটনার চার দিন পর (১৪ অক্টোবর) সকালে নিহত সোনিয়ার মা সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ক ধারায় মামলা করেন।
মামলায় তেঁতুলিয়া উপজেলা সদরের মোমিনপাড়া এলাকার মৃত সোলেমান আলীর ছেলে ও তেতুঁলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমার্জেন্সি এটেন্ডেন্ট মনসুর আলী রাজন (৩২) ও ক্ষণিয়াভিটা এলাকার বাসির উদ্দিনের ছেলে ও তেঁতুলিয়া বাজারের বিকাশ এজেন্ট আতিকুজ্জামান আতিককে (৩৩) আসামি করা হয়।
প্রায় তিন মাস আগে মায়ের ওষুধ নিয়ে যাওয়ার জন্য সোনিয়াকে ফার্মেসিতে ডেকে নিয়ে যান রাজন। এ সময় ফার্মেসিতে ওষুধ নেই বলে বাসা থেকে ওষুধ আনার কৌশল করে মোটরসাইকেলে করে সোনিয়াকে আতিকের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে রাজন ও আতিক মিলে ধর্ষণ করে ও তার ভিডিও ধারণ করে। পরে এ ভিডিও প্রচারের ভয় দেখিয়ে সোনিয়াকে ব্ল্যাকমেইল করে বার বার ধর্ষণ করে।
এ অপমান সহ্য করতে না পেরে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সকালে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে তেঁতুলিয়া কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী ও উপজেলার কালারামজোত এলাকার পাথর শ্রমিক জাহিরুল ইসলামের মেয়ে রহিমা আক্তার সোনিয়া।
জেবি/এসএস