দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত নাতনির চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর সাহায্যের আবেদন করেছিলেন যশোরের মনিরামপুর উপজেলার গাঙ্গুলিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য বৃদ্ধ মশিয়ার রহমান। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেকও পেয়েছিলেন তিনি, তবে সেই চেক শেষ পর্যন্ত অসুস্থ নাতনি বিলকিস খাতুনের (২৭) চিকিৎসায় উপকারে আসেনি।
প্রধানমন্ত্রী সহায়তার চেক নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যের টালবাহানায় চেক পেতে দেরি হওয়ায় অকালে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন ওই বৃদ্ধের নাতনি বিলকিস খাতুন। গত ৯ নভেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রোববার (১২ নভেম্বর) যশোরে প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী বৃদ্ধ মশিয়ার রহমান। তিনি রোহিতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি রুহুল আমিন। মৃত বিলকিস খাতুন যশোর সদর উপজেলার মাহিদিয়া গ্রামের মৃত জাকিরের ছেলে। বাবা মারা যাওয়ার পর নানাবাড়িতেই বড় হয় বিলকিস।
সংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধ মশিয়ার রহমান জানান, তার নাতনি বিলকিস খাতুন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে দেশের বিভিন্ন স্থানে ডাক্তার দেখিয়ে অর্থনৈতিকভাবে সর্বস্বান্ত হয়ে যান তিনি। দরিদ্র হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিকিৎসা সহায়তার জন্য আবেদন করেন। গত ২৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল শাখা হতে ৫০ হাজার টাকার চেক যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসেছে বলে এক চিঠিতে আমাকে অবগত করা হয়। তাকে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে চেক সংগ্রহের জন্য বলা হয়।
বৃদ্ধ মশিয়ার রহমান অভিযোগ করে জানান, দীর্ঘদিন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ঘোরাঘুরি করেও তিনি প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার চেকটি পাননি। যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে চেকটি সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন আটকে রাখার কারণে সময়মতো টাকাগুলো না পাওয়ায় অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় নাতনি বিলকিস খাতুন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
মশিয়ার রহমান আরও জানান, দুই মাস আগে চেকটি পান, তবে সে সময় তাকে নির্যাতন করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার টাকা সময়মতো না পাওয়ায় অর্থাভাবে নাতনির মৃত্যুর ঘটনায় এ চক্রান্তের সঙ্গে জড়িদের বিচারের দাবি করেছেন ভুক্তভোগী বৃদ্ধ মশিয়ার রহমান।