ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে ভোটের লড়াইয়ে আলোচিত জামাই-শ্বশুর। এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের মনোনয়নের লড়াইয়ে নেমেছিলেন অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া ও তার শ্বশুর জিয়াউল হক মৃধা। এ নিয়ে প্রকাশ্যে বিবাদে আসেন তারা। তবে শেষমেষ দুজনই হেরে যান।
রেজাউল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান আর মৃধা ‘লাঙ্গল’ প্রতীক না পেয়ে ‘সিংহ’ প্রতীকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে পরাজিত হন। অবশ্য জিয়াউল হক মৃধা ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে মহাজোট থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া শ্বশুরের চেয়েও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মঈন উদ্দিন মঈনকে। মঈন ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৭৬ হাজার ভোট পান।
এ প্রসঙ্গে রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমারতো ওই জায়গায় মঈন সাহেব আছেন। আরো কয়েকজন প্রার্থী আছেন। সবাই শক্তিশালী প্রার্থী। উনি (শ্বশুর) প্রায় ৪০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। মঈন সাহেব ৭৬ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। সেই হিসেবে মঈন সাহেব কম নন। ৭৬ আর ৪০, বুঝতেই পারছেন। আমি ৭৬ হাজারকে ফেস করতে চাই।’
রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কোড্ডা গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৪ সালে তাকে সদর আসনে মহাজোটের মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। যদিও পরে তাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে তার বক্তব্য ওই সময় তার মনোনয়নে প্রশাসনিক ক্যু হয়েছিলো। ২ আসনের পাশাপাশি এবারো তিনি সদর আসনে অর্থাৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ এ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। ১৭ ডিসেম্বর সদরের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।
জিয়াউল হক মৃধা বলেন, কয়েক দিন আগে উপনির্বাচন করেছি। সেটি ছিলো টেস্ট কেস। এখন ৫ বছরের জন্যে পূর্ণ নির্বাচন। নির্বাচন তো আমি করবোই ইনশাল্লাহ। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কে মেয়ের জামাই, কে ভাই সেটা ব্যাপার নয়। ওর (মেয়ের জামাই) আর আমার রাজনীতি ভিন্ন। সে জাতীয় পার্টি করে, তারে টিকেট দিছে জিএম কাদের। আমিতো এখন আর জিএম কাদেরের দল করিনা। তিনি আমাকে অব্যাহতি দিছেন। আমি রওশন এরশাদ গ্রুপের কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। কাজেই তার আর আমার পথ ভিন্ন। সে জামাই হোক, যাই হোক গণতান্ত্রিকভাবে যার যার নির্বাচন সে সে করবে। আমার পক্ষ থেকে তো কোন বাধা নেই।
জিয়াউল হক মৃধা আরও বলেন, আর ৫ বছর যাবৎ জামাই-শ্বশুরের ব্যাপারে মুখরোচক লেখালেখিসহ অনেক কিছুই হয়েছে। এটা নতুন কোন ব্যাপার না, এটা অনেক পুরনো কেইস। ‘গণকেইস’। কাজেই এ ব্যাপারে আমি কোন চিন্তাভাবনাও করিনা। সরাইল-আশুগঞ্জের মানুষও এটা নিয়ে বেশি ভাববেনা। প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে তার বক্তব্য নৌকা উঠিয়ে নিলেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত একজন প্রার্থী রয়েছেন মঈন উদ্দিন মঈন। তার জনপ্রিয়তা ভালোই রয়েছে। তাকেই আমি প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি। তবে বিপুল ভোটে আমার জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।