দেশে স্ত্রীর পরকীয়া, প্রবাসে স্বামীর আত্মহত্যা

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

সোমবার, ২৭ মে ২০২৪ , ০৮:৫২ এএম


দেশে স্ত্রীর পরকীয়া, প্রবাসে স্বামীর আত্মহত্যা
ছবি : সংগৃহীত

পরিবার পরিজন ছেড়ে গতবছর বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার দিনমজুর আবদুল জলিলের ছেলে ফরহাদ হোসেন। দালালের মাধ্যমে বিদেশে গিয়েছিলেন তিনি। বিদেশে গিয়ে জানতে পারেন তার স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত রয়েছেন। একদিকে দালালের চাপ অন্যদিকে স্ত্রীর অপকর্মের কথা সহ্য করতে না পেরে গত ২১ মে মঙ্গলবার বিদেশে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ফরহাদ।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, ফরহাদ বিদেশে যাওয়ার পর স্ত্রী সুমি চট্টগ্রামে গার্মেন্টেসে চাকরি নেন। সেখানে আরিফ নামে এক ছেলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সুমির পরিবারের কাছে ফরহাদের পরিবার বিষয়টি জানায়। কিন্তু কোনো প্রতিকার পায়নি তারা। স্ত্রীর বিভিন্ন অপকর্মের ভিডিও ছবি নানাভাবে ফরহাদের কাছে পৌঁছালে এ নিয়ে প্রতিনিয়ত দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটিসহ মোবাইলে ঝগড়া হতো।

একদিকে স্ত্রীর পরকীয়া অন্যদিকে দালাল চক্রের চাপে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় ফরহাদ, এমনটাই দাবি তার মা-বাবার।

বিজ্ঞাপন

ফরহাদের স্ত্রী সুমি আক্তার বলেন, ‘মৃত্যুর আগের দিন রাতেও আমার স্বামী আমাকে ফোন করে এবং সঙ্গে অন্য একটি মেয়েকে লাইনে রেখে আমার সঙ্গে কথা বলে। এ সময় আমাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। একটা সময় আমার স্বামী অপরদিকের মেয়েটিকে বলে ফোন রেখে দিচ্ছি পরে কথা বলবো। এটা বলে ফোন কেটে দেয়। পরের দিন সকালে আমি গার্মেন্টসে চলে যাই। দুপুরে ব্রেকের সময় আমি বাসায় কল দিলে, শুনি আমার স্বামী আত্মহত্যা করেছে। কেন মারা গেল কি হয়েছে কিছুই জানিনা।’ 

আরিফ নামে একটি ছেলের সঙ্গে পরকীয়ার বিষয়ে সুমি আক্তার বলেন, ‘এরকম কিছুইনা। আমার ফুফাতো ভাই আরিফ আমার বাসায় আসা-যাওয়া করতো। এ নিয়ে সবাই সমালোচনা করতো। এ ছাড়া তেমন কোনো কিছু হয়নি।’

ফরহাদের মা ফজর বানু বলেন, ‘আমার ছেলেকে আমি বিদেশে পাঠাতে চাইনি। আমার ছেলের বউয়ের বোন জামাই তৌহিদ আমার ছেলেকে ফুসলিয়ে বিদেশ নিয়ে যায়। সৌদিতে নিয়ে আমার ছেলেকে মরুভূমিতে কাজ করতে দেয়। গত একটা বছর হলো ছেলে বিদেশে গেছে। তার মুখ থেকে শান্তির কথা কখনও শুনিনি৷ দালালের চাপ আর বউয়ের অবৈধ সম্পর্ক আমার ছেলের জীবনটাই শেষ করে দিলো। আমি তাদের বিচার দাবি করছি। আর আমরা গরিব মানুষ। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করছি।’ 

বিজ্ঞাপন

বাবা আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক আগে থেকেই চেষ্টা করছি। কিন্তু দালালের কারণে পারছিনা। আমার ছেলে বিদেশে যাওয়ার পর থেকে বউয়ের জ্বালা আর দালালের চাপে দিশেহারা হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। আমার ছেলের মরদেহ ফিরিয়ে আনতে সকলের সহযোগিতা চাই।’

এ বিষয়ে লংগদু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুনর রশীদ বলেন, ‘যেহেতু ঘটনাটি অন্য দেশে হয়েছে সেহেতু আমাদের এখানে কিছু করার নেই। তাছাড়া এখনও পর্যন্ত কোনো অভিযোগও আসেনি।’

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission