ঢাকাবৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

বেনজীরের ভয়ে চুপ ছিল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪ , ০১:৪২ পিএম


loading/img
ফাইল ছবি

গাজীপুর সদর উপজেলার মেম্বারবাড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে ইজ্জতপুর সড়ক ধরে চার কিলোমিটার ভেতরে ‘ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা’। সেখানকার নলজানী গ্রামে তিন দিকে বনভূমিবেষ্টিত এই রিসোর্ট এলাকার মানুষের কাছে ‘বেনজীরের রিসোর্ট’ নামে পরিচিত। রিসোর্টের ১০২ শতাংশ জমি দখল করে নেয় ভাওয়াল রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

চার দশকেরও বেশি সময় আগে জুবেদা খাতুনের কেনা ওই জমি ভোগদখল করে আসছিলেন তার ছেলেমেয়েরা। কিন্তু হঠাৎই সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী পাঠিয়ে তাদের ১০২ শতাংশ জমি ২০২০ সালের জানুয়ারিতে দখল করে নেয় ভাওয়াল রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ।

গাজীপুরের বারইপাড়া মৌজার নলজানি গ্রামের ওই জমি উদ্ধারে নানাজনের দ্বারস্থ হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুল হক ও তার ভাইবোনেরা।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের ক্ষমতার কাছে বারবার হেরে গেছে পরিবারটি। জমি উদ্ধারের জন্য আদালতে মামলা করারও সাহস পাননি তারা। এমনকি বেনজীরের ভয়ে চুপ ছিল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। 

অবশেষে বেনজীরের বিভিন্ন অপকর্ম গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর গতকাল রোববার ভাওয়াল রিসোর্টের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সমন জারিরও নির্দেশ দিয়েছেন। গাজীপুরের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ নাজমুন নাহারের আদালতে এই মামলা করা হয়।

মামলার বাদী হয়েছেন ছয়জন। তারা হলেন– ঢাকার কলাবাগান থানার সার্কুলার রোডের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুল হক, তার ভাই ডা. সিরাজুল হক, বোন সামসুন্নাহার এবং ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা জাহিদুল হক, নিশাত তসলিম ও পারভীন।

বিজ্ঞাপন

বাদী পক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন সরকার বলেন, এ মামলায় বিবাদীরা হলেন– ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার প্রতিষ্ঠাতা ও আম্বার গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেল, স্থানীয় উত্তর বানিয়ার চালা গ্রামের রফিকুল ইসলাম মাস্টার, ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার ম্যানেজার সুমন ও কামরুল ইসলাম। একই সঙ্গে বিবাদী করা হয়েছে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), গাজীপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও মির্জাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে।

জানা যায়, সিএস রেকর্ড মূলে ওই জমির মালিক ছিলেন জনৈক সৈয়দ আলী। ১৯৮২ ও ১৯৮৩ সালে তার কাছ থেকে এ জমি কিনে নেন আব্দুল হাই ও তার মেয়ে জুবেদা খাতুন। কেনার পর থেকেই পরিবারটি জমি ভোগদখল করে আসছিল। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ভাওয়াল রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ জমিটি জবরদখল করে নেয়।

স্থানীয়রা জানান, মা ও নানার কেনা জমি উদ্ধার করার জন্য বিভিন্ন জনের কাছে যান জুবেদার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু কোথাও পাত্তা পাননি। জমি উদ্ধারের চেষ্টা করলেও সাবেক আইজিপি বেনজীরের ভয় দেখানো হতো।

বাদী পক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন সরকার বলেন, আদালত শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে সমন জারির নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ৬ নভেম্বর আসামিদের আদালতে হাজির হয়ে জবাব দিতে বলেছেন।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |